Breaking News

সেই শরণার্থী নারীর অলিম্পিকে ইতিহাস

জীবন বাঁচাতে একসময় উত্তাল সাগরে সাঁতার কেটেছেন ইউসরা মারদিনি। কঠিন সময় পেছনে ফেলে বিশ্বমঞ্চে জায়গা করে নেন এই সিরিয়ান নারী। শরণার্থী দলের হয়ে রিও অলিম্পিকে অংশ নিয়ে ইতিহাস গড়েন তিনি। রিও অলিম্পিকে প্রথম খেলোয়াড় হিসেবে শরণার্থী দলকে প্রতিনিধিত্ব করে ইতিহাস গড়েন এই সিরিয়ান সুন্দরী। ১৮ বছর বয়সী মারদিনি ১০০ মিটারের সাঁতারের বাছাই পর্বে দারুণ করেন। তবে সাঁতার শেষ করতে তিনি যেই সময় নিয়েছেন সেটি পরবর্তী পর্বে জায়গা করে নেয়ার জন্য যথেষ্ট ছিল না। কিন্তু তাতে কী? ঠিকই তো ইতিহাস গড়ে নিয়েছেন মারদিনি।

অলিম্পিকের মূল থিমই হলো হার কিংবা জয় নয়; অংশগ্রহণই বড় কথা। সেটিরই যেন প্রতিধ্বনি শোনা যায় উচ্ছ্বসিত মারদিনি কণ্ঠে, ‘জীবনে আমি সবচেয়ে বেশি করে যেটি চেয়েছি সেটি হলো অলিম্পিকে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করা। সবকিছুই বিস্ময়কর লাগছে।’ পেছন ফিরে দেখা যাক। সাঁতারু হওয়ার স্বপ্ন ছোটবেলা থেকেই ছিল মারদিনির। তবে সিরিয়ায় গৃহযুদ্ধ শুরু হলে বোমা, মৃত্যু ও দুঃখ-দুর্দশা মারদিনির স্বপ্নে হানা দেয়। সুইমিং কোচের কন্যা ইউসরার সামনে দুটি পথ খোলা ছিল। আশার সমাধি ঘটিয়ে মাতৃভূমিতে বাস করা। কিংবা স্বাধীনতা ও স্বপ্নের জন্য নতুন কোথাও পালিয়ে বাঁচা।

গৃহযুদ্ধ শুরু হওয়ার প্রায় সাড়ে চার বছর পর ২০১৫ সালের ১২ আগস্ট মারদিনি ও তার বোন সারাহ তাদের বাবার দুই চাচাতো ভাই এবং অন্য অনেক শরণার্থী সঙ্গে সিরিয়া ত্যাগ করেন। মারদিনি ও সারাহর বিদায়ের দিন তাদের পিতা-মাতা ও ছোট বোনের কান্নায় গোটা এলাকার আকাশ ভারি হয়ে ওঠে। সেখান থেকে তারা প্রথমে বৈরুতে যান। এরপর জার্মানির উদ্দেশ্যে ভয়াবহ পথ পাড়ি দেয়ার সংগ্রামে নামেন ইউসরা ও সারাহ। জীবন ও স্বপ্ন বাঁচাতে লেসবস দ্বীপের গভীর পানিতে নেমে পড়েন দুই বোন। উত্তাল ঢেউ যেন পানির অতলে ডুবিয়ে নিচ্ছিল তাদের। নোনতা পানি চোখ যেন জ্বালিয়ে দিচ্ছিল। জীবন-মৃত্যুর সন্ধিক্ষণে ইউসরা ও সারাহ। প্রতি স্ট্রোকেই কঠোর সংগ্রাম। ৩০ মিনিটের কঠোর সংগ্রাম শেষে জাহাজে করে নিরাপদে পৌঁছেন তারা। একদিন সাঁতার মারদিনিকে নতুন ঠিকানায় নিয়ে গিয়েছিল। আজ সাঁতারই তার সামনে নতুন স্বপ্নের দিগন্ত খুলে দিয়েছে।

About admin

Check Also

১৫ই আগষ্ট আন্তর্জাতিক মহাকাশ স্টেশনের উদ্দেশ্যে যাত্রা করবেন জাপানি নভোচারী ফুরুকাওয়া

জাপানের নভোচারী ফুরুকাওয়া সাতোশির দ্রুত হলে ১৫ই আগষ্ট আন্তর্জাতিক মহাকাশ স্টেশনে দ্বিতীয় ভ্রমণ নির্ধারণ করা …

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *