Breaking News

জাপানে বৈশাখী উৎসব পালন

জাপান ডেস্ক: উৎসব প্রিয় বাংলাদেশে একটি উৎসব বা বিশেষ দিনকে ঘিরে উৎসব চলতে থাকে বা এর রেশ থাকে অনেক দিন ধরে। আর সেই উৎসব যদি হয় নববর্ষ পালন বা বৈশাখী উৎসব তা হলে তো আর কোন কথা্ই নেই। কারন বর্তমান প্রেক্ষাপটে বাংলাদেশে সার্বজনীনভাবে যে উৎসব বা বিশেষ দিনগুলি পালিত হয়ে থাকে তার অন্যতম হচ্ছে বৈশাখী উৎসব বা বাংলা নববর্ষ পালন। ধর্ম-বর্ণ নির্বিশেষে সকলের বাংলা নববর্ষ উদযাপন করে থাকে। তা সে দেশে বা বিদেশে যেখানেই অবস্থান করুক না কেন। আর বর্তমানে প্রায় একেকটি জনসংখ্যা দেশের বাহিরে বসবাস করছেন তা মোটেই কম নয়। অনেক দেশের মোট জনসংখ্যার চেয়েও যে বেশী তা নির্দিধায় বলা হয়।

আর এসব প্রবাসী বাংলােদশীরা বুকে ধারন করে বাংলা সংস্কৃতি তা যে দেশেই বসবাস করেন না কেন। আর গর্ব করার বিষয় হচ্ছে আমাদের নিজস্ব একটি বর্ষপুঞ্জিকা রয়েছে যা অনেক উন্নত দেশের ও নেই। এমনকি এই জাপানেরও । আর প্রবাসে বাংলাদেশের জাতীয় দিবসগুলিতে ছুটি উপভোগের সুযোগ না থাকায় নিকর্টবর্তী কোন ছুটির দিনকে বেছে নিতে হয় দিবসটি উপভোগ করার জন্য জাপানে প্রবাসী বাংলাদেশীরা সার্বজনীনভাবে টোকিও বৈশাখী মেলা উদযাপন করলেও নিজ নিজ সংগঠনের ব্যানার থেকেও ভিন্ন ভিন্ন কর্মসূচি দিয়ে এই বিশেষ দিনটিতে মেতে উঠেন আনন্দ উৎসবে। আর উদ্দেশ্য এক এবং অভিন্ন হলেও সংগঠন ব্যানার বা আঞ্চলিকতায় উৎসবের নাম দেওয়া হয় ভিন্ন ভিন্ন।13095872_1108133355895744_5107582124036324302_n

বৈশাখী আয়োজন, নববর্ষ উৎযাপন, পান্তা ইলিশ, পিঠা উৎসব, বৈশাখী উৎসব বা এই জাতীয় নাম করন দিয়ে এই বিশেষ দিনটিকে পালন করা হয়। কয়েকটি অনুষ্ঠানের বিবরণ দেওয়া হল নিহন বাংলা পাঠকের জন্য:

রংপুর তরুণ সংঘের বৈশাখী উদযাপন:
আনুষ্ঠানিকভাবে এখনো আত্মপ্রকাশ না করলেও রংধনু তরুণ সংঘ জাপান বাংলা নববর্ষ উদযাপন উপলক্ষে জাপান প্রবাসীদের একত্রিত করে টোকিওর আরাকাওয়া সিটিতে। কিছু সংখ্যক উদ্যেমী তরুণ এই আয়োজনের উদ্যোক্তা। এই প্রথমবাবের মতো সংগঠনটির ব্যানারে সার্বজনীন কোন উৎসবের আয়োজন করা হলো্ । তাই প্রবাসীদের কৌতুহলের সীমা ছিল না। ২৪ এপ্রিল হিগাশি অগু ফুরেআইকানে আয়োজিত রংধনুর অনুষ্ঠানে দলমত নির্বিশেষে সকল শ্রেণীর প্রবাসীরা অংশ নিয়ে থাকে এই দিন। প্রথম বারের মতো অনুষ্ঠানের আয়োজন করাতে অনভিজ্ঞতায় কারনে কিছুটা অগুছালো হলেও আন্তরিকতায় বহুলাংশে বেশী ছিল বলা যায়। বিশেষ করে অনুষ্ঠান পরবর্তী কৃতজ্ঞতা স্বীকার এবং ধন্যাবাদ জানিয়ে সবাইকে আন্তরিকতা দেখানোতে প্রবাসীরা ভিন্নমাত্রায় মূল্যায়ন মনে করে তরুণদের উৎসাহিত করে।

দুপুরের আপ্যায়ন মেন্যুতে যেমন ভিন্নতা ছিল তেমনি বিনোদনও ভিন্নতা ছিল বৈকালিক আয়োজনেও। শুভেচ্ছা বক্তব্য ছাড়াও হরেক রকমের বিনোদন ছিল সব শ্রেণী বয়সের জন্য।

বিশেষ কেহ কৃতিত্বে দাবীদার হতে চাননি কেহ অনুষ্ঠান আয়োজনে। সবাইকে সমান কৃতিত্ব দিতে এবং অতিথিদের ধন্যবাদ জানাতে কার্পুন্য করেননি। কারণ রংধনুর আয়োজকরা মনে করেন যতো জাঁকজমক আয়োজনই করা হউক না কেন অতিথিদের সমাগম যদি হয়, তাদের পদচারনা যদি না ঘটে তা হলে কোন অনুষ্ঠান আয়োজনই স্বার্থক হয়ে উঠেনা। তাই তারা সর্ব প্রথম অতিথিদেরই কৃতিত্বটা দিতে চান। এটাও রংধনু সদস্যদের বিনয়ের সর্বোচ্চ মাত্রা বলে মনে হয়।IMG_7115

তারপরও একটি আয়োজনের পিছনে অনেকগুলি কুশীলব থেকে থাকেন। রংধনুর আয়োজনেও ছিলেন। তাদের মধ্যেও যাদের ধন্যবাদ না দিলেই নয় তারা হচ্ছেন ফয়সাল সালাউদ্দন তুষার, সোহেল রানা সোহেল, রাসেল মাঝি, রাজিব জামান, তৌহিদুল ইসলাম হেলাল, সাদেকুল হায়দার বাবুল, জুয়েল পাঠান, নুর খান রনি এবং বাপ্পি।

বৈশাখী পান্তা ইলিশ উৎসব ১৪২৩:
বাংলাদেশ উৎসব টোকিও ব্যানারে টোকিওর কিতা সিটি তাকিনোগাওয়া বুনকা সেন্টারে ২৪ এপ্রিল ছিল পান্তা ইলিশ উৎসব। এ বছর রাষ্ট্রীয় ভাবে যদিও পান্তা-ইলিশ আয়োজনকে নিরুৎসাহিত করা হয়েছিল তবুও প্রবাসে এ আয়োজন যেহেতু পূর্ব নির্ধারিত তাই ব্যানারে নামটি শোভা পায়।

এ আয়োজনে অবশ্য আয়োজক পাঁচজন এবং নিজেদের পঞ্চকন্যা বলেই দাবী করেন।সাদি আহমেদ, শাহানাজ পারভীন শীলা, শায়লা হোসেন আন্নি, সাহারা আক্তার মিলি এবং আফতানা অনি এই পাঁচজন-ই মূলত পান্তা-ইলিশ আয়োজনের দাবীদার।
রাষ্ট্রদূত রাবাব ফাতিমা বৈশাখী পান্তা-ইলিশ আয়োজনে উপস্থিত থেকে শুভেচ্ছা বক্তব্য এবং এর স্বাদ গ্রহণ করেন। পান্তা-ইলিশ আয়োজনেও প্রবাসীরা স্বত:স্ফর্ত উপস্থিত হন। তবে একই দিন এবং অনতিদূরে একই ধরনের আরেকটি আয়োজন থাকায় অনেকেই বিব্রতবোধ করেন। বিশেষ করে যখন জানতে চাওয়া হয় ‘আপনি ওই আয়োজনে গিয়ে ছিলেন কি না? কারন জাপান প্রবাসীদের সংখ্যা সীমিত। এখানে সবাই সবার পরিচিত। একই দিন দুইটি আয়োজনে প্রবাসীদের বিভ্রান্ত হবেন এটাই স্বাভাবিক।পান্তা-ইলিশ আয়োজনেও আপ্যাতয়নের পাশাপাশি বিনোদনমূলক বিভিন্ন আয়োজন রাখা হয়। বাঙালীয়ানা পোশাকে সবাই নববর্ষের আনন্দে মেতে উঠেন টোকিওর তাকিনোগাওয়াতে।

কানাগাওয়া বৈশাখী পিঠা উৎসব:
রাজধানী টোকিওর অনতিদূরে কানাগাওয়া প্রিফেকচারের সাগামিহারা সিটিতে ৮মে’১৬ তে অনুষ্ঠিত হয়েছে বৈশাখী পিঠা উৎসব। নামে বৈশাখী পিঠা উৎসব হলে ও মূলত এটি ছিল নববর্ষ পরবর্তী প্রবাসীদের মিলন মেলা। টোকিও এবং আশপাশ থেকেও ছুটে গিয়েছিলেন প্রবাসীরা শরীক হয়েছেন কানাগাওয়াবাসীদের আয়োজনে।

ভিন্নতা ছিল আয়োজনেও। দিনব্যাপি উৎসবমুখর পরিবেশ আপ্যায়নের পাশাপাশি বিনোদন মূলক সাংস্কুতিক অনুষ্ঠানে (নাচ, গান, আবৃতি, কৌতুক, বাঁশি, বালিশ খেলা) বড়দের পাশাপাশি ছােটদের ও অংশগ্রহণের সুযোগ দেওয়া হয়। তাই সব বয়সের এবং সবাই কোন না কোনভাবে বিনোদনে মেতে উঠেন বৈশাখী পিঠা উৎসবে।

কানাগাওয়াবাসীদের আয়োজনের পিছনে জেড আর সিনা এবং নদী সিনা দম্পতির অবদান অপরিসীম। অন্যান্য দম্পতিও বাসা থেকে হরেক রকম খাবার বানিয়ে এনে পিঠা উৎসব । ভিন্ন মাত্রা যোগ করেন। আগত সকলেই কানাগাওয়াবাসীর আপ্যায়নে মুগ্ধ ছিলেন।

এছাড়াও জাপানের বিভিন্ন অঞ্চলে প্রবাসীরা বৈশাখ উপলক্ষে বিভিন্ন আয়োজন করে থাকেন।
ছবি: রাহমান মনি (সাপ্তাহিক) ও নদী সিনা

About admin

Check Also

কিউশুতে ভারী বর্ষণ অব্যাহত থাকায় দুর্যোগের সম্ভাবনা নিয়ে উদ্বেগ বৃদ্ধি পাচ্ছে

 জাপানের কিউশুতে বুধবার প্রচণ্ড বৃষ্টিপাত আবারও আঘাত হানছে। অব্যাহত বৃষ্টিপাত ভূমির উপরিভাগ আলগা করে দেয়ায় …

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *