চীনা কর্তৃপক্ষ জানিয়েছে যে, নোবেল শান্তি পুরস্কার বিজয়ী লিউ শিয়াওবো পরলোকগমন করেছেন। এই মানবাধিকার কর্মীর মৃত্যুকালে বয়স হয়েছিল ৬১ বছর। উত্তর-পূর্বাঞ্চলীয় শহর শেনইয়াং’এর বিচার ব্যুরো জানাচ্ছে, মি: লিউ গতকাল মারা যান। চীনের রাষ্ট্র পরিচালিত শিনহুয়া সংবাদ সংস্থাও তার মৃত্যুর সংবাদ ছেপেছে। তারা শেনইয়াং’এর বিচার ব্যুরোর উদ্ধৃতি দিয়ে জানাচ্ছে, ২০০৯ সালে লিউ শিয়াওবো’কে রাষ্ট্রীয় ক্ষমতার বিরুদ্ধে নাশকতামূলক কাজ করার অপরাধে দণ্ডিত করা হয়। সমস্ত ধরনের চিকিৎসা ব্যর্থ হয়ে যাওয়ার পরে, লিভার ক্যান্সারের কারণে একসাথে বেশ কয়েকটি অঙ্গ-প্রত্যঙ্গ কাজ করা বন্ধ করে দিলে তিনি গতকাল মারা যান।
এই প্রখ্যাত লেখককে ক্যান্সারের শেষ পর্যায়ের রোগী বলে সাব্যস্ত করার পরে গতমাসে তাকে চিকিৎসা পেরোলে কারাগার থেকে শহরের একটি হাসপাতালে পাঠিয়ে দেয়া হয়। চীনা কর্তৃপক্ষ জার্মানি বা যুক্তরাষ্ট্রে গিয়ে চিকিৎসা করানোর তার নিজের এবং পরিবারের পক্ষ থেকে করা আবেদন প্রত্যাখ্যান করে। যুক্তরাষ্ট্র এবং ইউরোপীয় ইউনিয়ন বেশ কয়েক বছর আগে থেকে কারাগার থেকে মি: লিউ’র আগাম মুক্তির দাবী জানিয়েছে। তবে চীনা সরকার তাকে একজন অপরাধী হিসেবে বর্ণনা করে এইসব আবেদন নাকচ করে দেয়।
মি: লিউ তিয়ানানমেন চত্বরের ১৯৮৯ সালের গণতন্ত্রপন্থী ছাত্র আন্দোলনের নেতাদের মধ্যে একজন ছিলেন। এরপরে, তিনি রাজনৈতিক সংস্কারের জন্য চাপ প্রয়োগ করে বিভিন্ন রচনা এবং প্রতিবেদন অব্যাহতভাবে লিখে যান। মি: লিউ ২০০৮ সালে প্রকাশিত একটি প্রকাশ্য লিখিত ঘোষণা, চার্টার এইট’এর খসড়া প্রণয়নে সাহায্য করেন যেখানে চীনা কমিউনিস্ট পার্টির মাধ্যমে একটি একক পার্টির শাসনের সমালোচনা করা হয়।
২০১০ সালে, মি: লিউকে কারাগারে থাকাকালীন নোবেল শান্তি পুরস্কারে ভূষিত করা হয়। নরওয়ের নোবেল কমিটি “চীনের মৌলিক মানবাধিকারের জন্য তার দীর্ঘ এবং অহিংস সংগ্রাম”-এর প্রশংসা করে। তবে, বেইজিং মি: লিউ’কে পুরস্কার বিতরণী অনুষ্ঠানে যোগ দেয়ার অনুমতি দেয়নি।
সূত্র: এনএইচকে ওয়ার্ল্ড বাংলা