Breaking News

যৌথ ঘোষণা থেকে যুক্তরাষ্ট্রকে প্রত্যাহার করে নিয়েছেন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প

ডেস্ক রিপোর্ট //  শিল্পোন্নত অন্য দেশগুলো যুক্তরাষ্ট্রের ওপর ‘বড় ধরনের শুল্ক’ আরোপ করে রেখেছে বলেও অভিযোগ করেছেন তিনি। ইস্পাত ও অ্যালুমিনিয়াম আমদানিতে যুক্তরাষ্ট্রের শুল্ক আরোপ নিয়ে ইউরোপীয় ইউনিয়ন (ইইউ) ও কানাডার সঙ্গে ট্রাম্প প্রশাসনের মতবিরোধ চলছিল।

তা সত্বেও শিল্পোন্নত দেশের রাষ্ট্র ও সরকারপ্রধানরা জি-৭ সম্মেলনে ‘নিয়মানুযায়ী বাণিজ্য ব্যবস্থাপনায়’ সমর্থন জানিয়ে যৌথ প্রজ্ঞাপনে সম্মত হয়েছিলেন।

ট্রাম্পের প্রত্যাহারের পর ওই প্রজ্ঞাপনের কার্যকারিতা প্রশ্নের মুখে পড়বে বলে ধারণা পর্যবেক্ষকদের।

উত্তর কোরিয়ার শীর্ষ নেতা কিম জং উনের সঙ্গে বৈঠকে অংশ নিতে সম্মেলন আনুষ্ঠানিকভাবে শেষ হওয়ার আগেই সিঙ্গাপুর যাওয়ার পথে করা এক টুইটে ট্রাম্প যৌথ ঘোষণা থেকে সরে আসার কথা জানান।

তিনি বলেন, জি-৭ সম্মেলনে থাকা মার্কিন প্রতিনিধিদের যৌথ ওই প্রজ্ঞাপনটি অনুমোদন না করতে নির্দেশ দেয়া হয়েছে। এর মধ্যে যুক্তরাষ্ট্রের বাজারে ছেয়ে যাওয়া অটোমোবাইল পণ্যের শুল্কের পরিমাণও খতিয়ে দেখা হবে।

নিজের এই সিদ্ধান্তের জন্য সংবাদ সম্মেলনে দেওয়া ট্রুডোর ‘মিথ্যা বিবৃতি’ এবং মার্কিন কৃষক, শ্রমিক ও কোম্পানিগুলোর ওপর কানাডার আরোপিত ‘বিশাল শুল্কের’ওপরই দায় চাপিয়েছেন মার্কিন প্রেসিডেন্ট।

কানাডার প্রধানমন্ত্রীকে ‘চরম অসৎ এবং দুর্বল’ হিসেবেও অভিহিত করেছেন তিনি।

ট্রাম্পের এই অবস্থানের পরপরই ১ জুলাই থেকে যুক্তরাষ্ট্রের ওপর পাল্টা শুল্ক আরোপের প্রতিশ্রুতি পুনর্ব্যক্ত করেন ট্রুডো। জাতীয় নিরাপত্তায় উদ্বেগের কথা বলে ইস্পাত ও অ্যালুমিনিয়াম আমদানিতে যুক্তরাষ্ট্র যেভাবে শুল্ক বসিয়েছে তাকে ‘অপমানজনক’ হিসেবেও অ্যাখ্যা দিয়েছেন কানাডার প্রধানমন্ত্রী।

 “খুবই দুঃখজনক হবে, তা সত্বেও দৃঢ ও স্পষ্ট করে জানাতে চাই, আমরা ১ জুলাই থেকে পাল্টা ব্যবস্থা নেওয়ার পথেই অগ্রসর হব। কানাডার নাগরিকরা নম্র ও যুক্তিসঙ্গত আচরণ করলেও আমাদের ধাক্কা দিয়ে ফেলে দেওয়া হবে, তা দেখতে চাইব না আমরা,” সংবাদ সম্মেলনে বলেন ট্রুডো।

আগে বলা হয়নি, এমন নতুন কোনো কথা ট্রুডোর বক্তব্যে নেই, জনসম্মুখে এবং ট্রাম্পের সঙ্গে ব্যক্তিগত আলোচনাতেও ট্রুডো এসব বারবারই বলেছেন বলে পরে এক বিবৃতিতে জানিয়েছে কানাডার প্রধানমন্ত্রীর দপ্তর।

ইইউ বলেছে, ট্রাম্পের প্রত্যাহার সত্বেও যৌথ প্রজ্ঞাপন অটুট থাকবে।

 “জি-সেভেনের ঘোষণায় যে অঙ্গীকার করা হয়েছে, আমরা তার পক্ষেই আছি,” যুক্তরাজ্য সরকারের এক শীর্ষ সূত্র এমনটাই বলেছেন।

শুল্ক ও বাণিজ্য নিয়ে মতবিরোধ থাকলেও সম্মেলনের দ্বিতীয় দিন ট্রাম্প শিল্পোন্নত সাতটি দেশের মধ্যে সমঝোতার মাধ্যমে হওয়া যৌথ ঘোষণায় স্বাক্ষর করেছিলেন। মার্কিন প্রেসিডেন্ট জি-সেভেন দেশগুলোর মধ্যে ‘শুল্ক মুক্ত বাণিজ্য ব্যবস্থাপনার’ প্রস্তাব এবং অন্য দেশের নেতৃবৃন্দের সঙ্গে ‘চমৎকার গঠনমূলক’ আলোচনা হয়েছে বলেও সাংবাদিকদের জানিয়েছিলেন।

অন্য দেশগুলো যুক্তরাষ্ট্রের ওপর আরোপ করা বিশাল শুল্ক এবং মার্কিন কৃষক, শ্রমিক ও কোম্পানিগুলোর বাণিজ্য বাধা অনুমোদন করবেন না বলেও টুইটারে জোর দিয়ে বলেছিলেন তিনি।

 ‘দশকের পর দশক ধরে অন্যরা সুবিধা নিয়েছে’ অভিযোগ করে ট্রাম্প যুক্তরাষ্ট্রকে এমন একটি ‘মাটির ব্যাংক’ হিসেবেও অভিহিত করেন, যেখান থেকে ‘সবাই চুরি করছে’।

কানাডার কেব্যাক প্রদেশের লা মালবেতে হওয়ার এবারের জি-সেভেন সম্মেলনে রাশিয়ার সঙ্গে সম্পর্ক, ইরান ও প্যারিস চুক্তি নিয়েও আলোচনা করেন যুক্তরাষ্ট্র, যুক্তরাজ্য, ইতালি, জাপান, জার্মানি, ফ্রান্স ও কানাডার সরকার ও রাষ্ট্রপ্রধানরা।

সম্মেলনের শুরুতেই রাশিয়াকে শিল্পোন্নত দেশগুলোর জোটে ফেরাতে প্রস্তাব করেন ট্রাম্প। ইতালি সমর্থন জানালেও ইউরোপের বাকি দেশগুলো প্রস্তাবে আপত্তি জানায়।

ক্রেমলিনও জানিয়েছে, জি-সেভেন বাদে অন্য কোনো ব্যবস্থায় আগ্রহী তারা।

মস্কো ইউক্রেইনের ক্রিমিয়া অধিগ্রহণ করে নেওয়ার পর ২০১৪ সালে জি-এইট থেকে রাশিয়াকে বের করে দেওয়া হলে বিশ্বের শিল্পোন্নত দেশগুলোর জোটটি ফের জি-সেভেন হিসেবে পরিচিতি পায়।
সূত্র: রয়টার্স/বিবিসি

About admin

Check Also

১৫ই আগষ্ট আন্তর্জাতিক মহাকাশ স্টেশনের উদ্দেশ্যে যাত্রা করবেন জাপানি নভোচারী ফুরুকাওয়া

জাপানের নভোচারী ফুরুকাওয়া সাতোশির দ্রুত হলে ১৫ই আগষ্ট আন্তর্জাতিক মহাকাশ স্টেশনে দ্বিতীয় ভ্রমণ নির্ধারণ করা …

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *