ঐতিহ্যবাহি পৌষ সংক্রান্তি সাকরাইন বা ঘুড়ি উৎসবের সত্যিকারের রূপ দেখা যায় পুরান ঢাকায়। মোঘল আমল থেকেই হয়ে আসছে এই উৎসব।পৌষ আর মাঘের সন্নিক্ষনে খাজনা আদায় শেষে নবাবরা ঘুড়ি উড়ানো এবং খাবার দাবারের আয়োজন করতেন। কালক্রমে এটি পরিণত হয় সাধারণ মানুষের উৎসবে।
বাংলাদেশের পুরান ঢাকার সেই ঐতিহ্যবাহী সাকরাইন বা ঘুড়ি উৎসবের আয়োজন করেন জাপান প্রবাসীদের প্রিয়মুখ, শিশু সংগঠক কামাল উদ্দিন টুলু এবং তার সহধর্মিনী ওগাহারা আকিকো।
প্রবাস জীবনের এই ব্যতিক্রম ধর্মী উৎসবে বিভিন্ন রাজনৈতিক, সামাজিক, সাংস্কৃতিক, ব্যবসায়ী ও আঞ্চলিক সংগঠনের নেতৃবৃন্দের স্বতঃস্ফূর্ত উপস্থিতি লক্ষ্য করা যায়।
সাধারণত সাকরাইন বা ঘুড়ি উড়ানোর ঐতিহ্যের ধারাবাহিকতার এই আয়োজনে পরিবারের ছোট বড় সবাই, একই সাথে আশেপাশের ও দূরের আত্মীয় পরিজন, প্রতিবেশী মাইল আনন্দে মেতে উঠে। যার ফলশ্রুতিতে আয়োজনটি প্রাণের মিলন মেলায় রূপান্তরিত হয়।
আয়োজনের উদ্দেশ্য সম্পর্কে কামাল উদ্দিন টুলু বলেন, “নববর্ষে ঘুড়ি উড়ানো জাপানের সংস্কৃতির অন্যতম একটি অংশ। আমাদের বাংলাদেশের সংস্কৃতিতেও ঘুড়ি উৎসব রয়েছে। বিশেষ করে পুরান ঢাকায়। আমি যেহেতু পুরান ঢাকার সন্তান তাই ঘুড়ি উড়ানোর শখটা অনেক আগে থেকেই ছিল। সেই সব চিন্তা থেকে আমাদের প্রজন্মকে দুই দেশের সংস্কৃতির মিল রেখে ঘুড়ি উৎসবের সঙ্গে পরিচিত করার অভিপ্রায় মাথায় আসে বলতে পারেন।”
ঘুড়ি উৎসবে আগত অতিথিদেরকে কাঁঠাল পাতায় দাওনিয়া সুস্বাদু বিরিয়ানি, জিলিপি, এলেবেলে গজা, বাখরখানি, পানতোয়া দিয়ে আপ্যায়ণ করা হয়।
সাকরাইন বা ঘুড়ি উৎসবে ঘুড়ি উড়ানোর জন্য বাংলাদেশ থেকে চশমাদার, চক্ষুদার, ভুয়াদার, ভ্রমরাদার সহ বাহারি নামের ঘুড়ি আনা হয় যা আকাশে রং ছড়ায় সন্ধ্যা পর্যন্ত।সাথে লাউড স্পিকারে গান বাজনাও চলে।গানের সাথে উৎসাহীদের নাচ অনুষ্ঠান কে করে তোলে আরো বেশি প্রাণবন্ত।
আসছে বছর আবার আয়োজন করা হবে সেই প্রত্যাশায় সমাপ্তি ঘোষণা হয় ।
ছবি: রহমান মনি