ভারতের উত্তর-পূর্বাঞ্চলীয় রাজ্য আসামের বিতর্কিত চূড়ান্ত নাগরিক তালিকা (এনআরসি) প্রকাশ করা হয়েছে। তালিকা থেকে বাদ পড়েছেন ১৯ লাখ মানুষ। এর মধ্যে দিয়ে এসব মানুষ ভারতের নাগরিকত্ব হারিয়ে রাষ্ট্রহীন হয়ে পড়লেন।
এনডিটিভি জানায়, শনিবার স্থানীয় সময় সকাল ১০টার দিকে রাজ্যটির এনআরসি প্রকাশ করা হয়। এর আগে দুটি খসড়া তালিকায় বাদ পড়েছিল প্রায় ৪১ লাখ মানুষ।
প্রতিবেশী বাংলাদেশ থেকে আসা কথিত অবৈধ অভিবাসীদের শনাক্ত এবং তাদের বহিষ্কারের লক্ষ্যে ভারতের বিজেপি সরকার এই তালিকা তৈরির উদ্যোগ নেয়।
তবে বাংলাদেশ সরকারের দাবি করে আসছে, আসামে তাদের কোনো নাগরিক নেই।
২০১৭ সালের ডিসেম্বরে তিন কোটি ২০ লাখ মানুষের দলিলপত্র যাচাই করে প্রথম খসড়া তালিকা প্রকাশ করা হয়। যাচাই-বাছাইয়ের পর ওই খসড়ার দ্বিতীয় তালিকাটি প্রকাশিত হয় ২০১৮ সালের ৩০ জুলাই।
যারা প্রমাণ করতে পেরেছেন যে ১৯৭১ সালের ২৪শে মার্চের আগে তারা আসামে এসে হাজির হয়েছেন, তাদের নাম অন্তর্ভুক্ত হয়েছে এনআরসিতে।
যারা ১৯৭১ সালের পর জন্মগ্রহণ করেছেন প্রয়োজনীয় কাগজপত্র দাখিলের মাধ্যমে তাদের প্রমাণ করতে হয়েছে যে তাদের বাবা-মা কিংবা তাদের বাবা-মা ওই তারিখের আগে থেকেই রাজ্যটির বাসিন্দা।
তবে চূড়ান্ত এনআরসি তালিকা প্রকাশের পরও এতে অন্তর্ভুক্ত হওয়ার সুযোগ এখনই বন্ধ হচ্ছে না। কেন্দ্রীয় সরকার এর মধ্যে জানিয়েছে, যারা চূড়ান্ত তালিকা থেকে বাদ পড়বে তারা ট্রাইব্যুনালের মাধ্যমে নাগরিকত্ব যাচাই করার পুনরায় সুযোগ পাবে।
তালিকা প্রকাশের পর আপিল করার জন্য সময় ৬০ দিন থেকে ১২০ দিন করা হয়েছে। আপিল জানাতে কাজ করছে ১০০টি ফরেইনার্স ট্রাইব্যুনাল (এফটিএস), অতিরিক্ত আরও ২০০টি এফটিএস গঠন করা হচ্ছে বলে জানা গেছে। ট্রাইব্যুনালের মাধ্যমে আবেদনের পরেও যদি কেউ নাগরিকত্ব হারায় উচ্চ আদালতে গিয়ে পুনরায় আবেদন করার সুযোগ থাকছে।