মুনাফার ভাগ সংবাদমাধ্যমকে দেয়ার একটি নতুন আইনের জেরে অস্ট্রেলিয়ায় সংবাদ কনটেন্ট দেখা বা শেয়ার করার সুযোগ বন্ধ করে দিয়েছে সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম ফেসবুক। গতকাল বৃহস্পতিবার সকাল থেকে দেশটির নাগরিকরা ফেসবুকে কোনো খবর দেখতে পাননি। এমনকি সরকারি এবং জরুরি পরিষেবার পেজগুলোও খালি ছিল। সেখানে কোনোরকম হালনাগাদ তথ্য দেয়া ছিল না। খবর: রয়টার্স ও এপি।
দীর্ঘদিন ধরেই অস্ট্রেলিয়ার সরকারের সঙ্গে মতোবিরোধ চলছে ফেসবুক ও গুগলের। অভিযোগ, গত ডিসেম্বরে অস্ট্রেলিয়ার পার্লামেন্টের নি¤œকক্ষে একটি আইন পাস হয়েছে, যেখানে সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে খবর প্রচার নিয়ে একাধিক বিষয় বলা হয়েছে। পার্লামেন্টের উচ্চকক্ষে আইনটি নিয়ে এখনও বিতর্ক চলছে। ফেসবুকের বক্তব্য, ওই আইন জারি হলে তাদের পক্ষে তা মানা সম্ভব নয়। গুগলও আইনটির বিরুদ্ধে প্রতিবাদ করেছে। বস্তুত তারই জেরে গতকাল থেকে ফেসবুক অস্ট্রেলিয়ায় খবর প্রার বন্ধ করে দেয়। অর্থাৎ তারা নিজেরাও কোনো খবর প্রচার করবে না। ফেসবুক ব্যবহারকারীরাও কোনো খবর শেয়ার করতে পারবে না। বিভিন্ন সংবাদমাধ্যম ও সরকারি পরিষেবা প্রদানকারী সংস্থা ফেসবুক পেজের মাধ্যমে তাদের খবরাখবর প্রচার করে থাকে। বুধবার সকাল থেকে সেই পেজগুলোও বন্ধ করে দেয়া হয়েছে।
ফেসবুকের এই সিদ্ধান্তে সমস্যায় পড়েছেন অস্ট্রেলিয়ার সাধারণ মানুষ। বহু মানুষ ইদানীং খবরের কাগজ রাখেন না। টেলিভিশনও দেখেন না। তারা সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমেই দিনের সংবাদ দেখে নেন। গতকাল থেকে আচমকাই তা বন্ধ হয়ে গেছে। অস্ট্রেলিয়ার বিভিন্ন স্বাস্থ্য-সংক্রান্ত সংস্থা এবং সরকারি স্বাস্থ্য বিভাগ কভিড পরিস্থিতির আপডেট ফেসবুক পেজে দিত, তাও বন্ধ হয়ে গেছে। সরকারি দমকল বিভাগের বুশ ফায়ার-সংক্রান্ত খবরও বন্ধ করে দেয়া হয়েছে।
অস্ট্রেলিয়ার অর্থমন্ত্রী জোস ফ্রাইডেনবার্গ জানিয়েছেন, ‘গতকাল সকালেই ফেসবুকের প্রধান মার্ক জুকারবার্গের সঙ্গে তার দীর্ঘ আলোচনা হয়েছে। দ্রুত সমস্যা সমাধানের রাস্তা খোঁজার চেষ্টা হচ্ছে।’ তবে অস্ট্রেলিয়ার সাধারণ মানুষ ও বিরোধী রাজনীতিবিদেরা জানিয়েছেন, যে প্রক্রিয়ায় ফেসবুক আচমকা খবর প্রচার বন্ধ করে দিয়েছে, তা অনভিপ্রেত। একদিকে কভিড, অন্যদিকে বুশ ফায়ারে জর্জরিত অস্ট্রেলিয়া। মানুষ সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে এ-সংক্রান্ত আপডেট দেখেন। কিছু না জানিয়ে সাধারণ মানুষকে সমস্যায় ফেলা হয়েছে। গুগল অবশ্য ফেসবুকের রাস্তায় হাঁটেনি। সরকার ও সংবাদসংস্থাগুলোর সঙ্গে তারা আলোচনা চালাচ্ছে।