পরমাণু বোমা হামলার ৭৫তম বর্ষপূর্তি সীমিত পরিসরে পালন করেছে জাপান। খবর এএফপি।
নভেল করোনাভাইরাস সংক্রমণের মুখে বৃহস্পতিবার (৬ আগস্ট) ওই হামলায় মৃতদের স্মরণে হিরোশিমা প্রিফেকচারে সংক্ষিপ্ত অনুষ্ঠানও আয়োজন করা হয়েছে। স্থানীয় সময় সকাল সোয়া আটটায় হিরোশিমার যেখানে প্রথম পরমাণু বোমা ফেলা হয়েছিল, সেখানে আমন্ত্রিতরা নিরব প্রার্থনায় অংশ নেন।
এদিকে, স্মরণ অনুষ্ঠানের শুরুতেই সেদিনের ওই হামলায় মৃত এবং আহতদের জন্য প্রার্থনা করা হয়। বিশ্ব শান্তি কামনার ওই প্রার্থনায় হামলা থেকে বেঁচে যাওয়া ব্যক্তি, মৃত ও আহতদের স্বজন এবং অনেক বিদেশি বিশিষ্ট ব্যক্তিবর্গ অংশ নিয়েছেন।
তবে, সাধারণ জনগণকে ওই আয়োজন থেকে দূরে রাখা হয়। তাদের জন্য স্মরণ অনুষ্ঠানটি অনলাইনে লাইভ সম্প্রচার করা হয়েছে। অনুষ্ঠানে অংশ নেওয়া অনেককেই কালো পোশাক পরিহিত অবস্থায় দেখা গেছে।
পরে, হিরোশিমার মেয়র কাজুমি মাতসুই তার বক্তব্যে উগ্র-জাতীয়তাবাদের বিরুদ্ধে সতর্কবানী উচ্চারণ করে বলেন, শুধুমাত্র ওই কারণেই দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধ হয়েছে। এছাড়াও, তিনি করোনাভাইরাস মহামারির মতো বৈশ্বিক হুমকি মোকাবিলায় বিশ্বকে ঐক্যব্ধ হওয়ার আহবান জানান।
অন্যদিকে, দেশের সংবিধানের কিছু শান্তিবাদী ধারা সংশোধনের জন্য সমালোচিত জাপানের প্রধানমন্ত্রী শিনজো অ্যাবে তার ভাষণে, বিশ্বকে পরমাণু বোমামুক্ত করা এবং স্থায়ী শান্তি প্রতিষ্ঠার জন্য সর্বাত্মক চেষ্টা চালানোর অঙ্গীকার করেন।
পরমাণু বোমা হামলা নিয়ে এখনো অনেক ঐতিহাসিক বিতর্কের অবসান হয়নি। যুক্তরাষ্ট্র এই হামলার জন্য এখনো ক্ষমা চায়নি। যদিও অনেকে মনে করেন ওই হামলার মধ্য দিয়ে দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধের অবসান হয়েছে।
বোমা হামলার কয়েকদিন পরে ১৯৪৫ সালের ১৫ আগস্ট জাপান আত্মসমর্পণ করে। কিছু ঐতিহাসিক দাবি করেন, পরমাণু বোমা হামলার মাধ্যমে স্থল অভিযান এড়ানো সম্ভব হয়েছে, স্থল অভিযান হলে আরো বেশী মানুষের মৃত্যুর আশঙ্কা ছিল।
তবে, জাপানে এই পরমাণু বোমা হামলাকে ব্যাপকভাবে যুদ্ধাপরাধ হিসেবে বিবেচনা করা হয়, এই হামলার মাধ্যমে নির্বিচারে বেসামরিক লোক হত্যা ও ধ্বংসযজ্ঞ চালানো হয়েছে।