প্যারিস বাংলা প্রেসক্লাবের আয়োজনে মহান স্বাধীনতা দিবস উদযাপন উপলক্ষে এক আলোচনা সভা অনুষ্ঠিত হয়েছে। আলোচনার প্রধান বিষয় ছিল ‘বাংলাদেশের স্বাধীনতায় সাংবাদিকদের ভূমিকা এবং আজকের বাংলাদেশ’।
২৭ মার্চ সন্ধ্যায় প্যারিসের ক্যাসিমায় স্মৃতি মহল রেস্টুরেন্টে এই আলোচনা সভা অনুষ্ঠিত হয়। এতে প্রধান অতিথি ছিলেন প্যারিসে নিযুক্ত বাংলাদেশ দূতাবাসের মান্যবর রাষ্ট্রদূত কাজী ইমতিয়াজ হোসেন। বিশেষ অতিথি ছিলেন বীর মুক্তিযোদ্ধা এবং ফ্রান্স আওয়ামী লীগের সভাপতি বেনজীর আহমেদ সেলিম।
অনুষ্ঠানের সভাপতি ছিলেন প্যারিস বাংলা প্রেসক্লাবের সভাপতি এনায়েত হোসেন সোহেল।অনুষ্ঠানটি সঞ্চালনা করেন প্রেসক্লাবের সাধারণ সম্পাদক ও সময় টেলিভিশনের ফ্রান্স প্রতিনিধি লুৎফুর রহমান বাবু।
জাঁকজমকপূর্ণ আলোচনা সভায় বক্তারা বাংলাদেশের মহান স্বাধীনতায় দেশি-বিদেশি সাংবাদিকদের অবদানের কথা তুলে ধরেন। এর মধ্যে অস্ট্রেলিয়ার সাইমন ড্রিংক, বিবিসির মার্ক টালি, ইত্তেফাকের তফাজ্জল হোসেন মানিক মিয়া এবং সাংবাদিক সিরাজ উদ্দিন হোসেনের কথা আলোচনায় বারবার উঠে আসে।অনুষ্ঠানের শুরুতে মহান স্বাধীনতাযুদ্ধে ৩০ লাখ শহিদের স্মরণে দাঁড়িয়ে এক মিনিট নীরবতা পালন করা হয়।
প্রেসক্লাবের সাংগঠনিক সম্পাদক এবং এনটিভির ফ্রান্স প্রতিনিধি নয়ন মামুনের শুভেচ্ছা বক্তব্যের মধ্য দিয়ে অনুষ্ঠান শুরু হয়। এরপর আলোচ্য বিষয়ে সারগর্ভ বক্তব্য দেন ইউরোবার্তা ডটকমের সম্পাদক ও সিনিয়র সাংবাদিক ফারুক নেওয়াজ চৌধুরী। তিনি তাঁর বক্তব্যে মুক্তিযুদ্ধের সময় পাকিস্তান এবং তাদের সহযোগী দেশগুলো মুক্তিযুদ্ধের ঘটনাকে ধামাচাপা দিতে যে মিথ্যা প্রপাগান্ডা চালিয়েছিল, তথ্য-উপাত্তসহ তার বিশদ আলোচনা করেন।
বীর মুক্তিযোদ্ধা বেনজীর আহমেদ সেলিম বলেন, স্বাধীনতাযুদ্ধের সময় সংগ্রাম পত্রিকা যে অপপ্রচার চালিয়েছে, তা ছিল ইতিহাসের এক কলঙ্কিত অধ্যায়। অন্যদিকে কলকাতা থেকে প্রকাশিত বাংলাদেশের বরেণ্য সাংবাদিক আব্দুল গাফ্ফার চৌধুরীর জয় বাংলা পত্রিকা এবং তফাজ্জল হোসেন মানিক মিয়ার ইত্তেফাকের অনবদ্য অবদানের কথা তুলে ধরেন। সেই সাথে বাংলাদেশের মাননীয় প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার নেতৃত্বে বর্তমান বাংলাদেশ যে বিশ্বের রোল মডেল হিসেবে উন্নয়নের মহাসড়কে অনবরত সামনের দিকে এগিয়ে যাচ্ছে এ বিষয়েও আলোকপাত করেন।
এ ছাড়া দুর্নীতিমুক্ত বাংলাদেশ গড়তে তিনি সাংবাদিকদের আরো অগ্রণী ভূমিকা পালনের আহ্বান জানান। রাষ্ট্রদূত কাজী ইমতিয়াজ হোসেন বলেন, বঙ্গবন্ধুর সোনার বাংলা গড়ে তোলার প্রত্যয় বা রূপরেখা তাঁরই সুযোগ্য কন্যা জননেত্রী শেখ হাসিনা যেভাবে বাস্তবায়ন করে চলেছেন তা বিশ্বের দরবারে ব্যাপকভাবে প্রসংশিত।
বিশ্বের উন্নত দেশগুলো আজ বাংলাদেশে বিনিয়োগ করার জন্য প্রতিযোগিতায় নেমেছে। তিনি আরো বলেন, স্বাধীনতার পর বাংলাদেশে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা সুসাংবাদিকতার প্রেক্ষাপট বিনির্মাণে সংবাদপত্র ও ইলেকট্রনিকস মিডিয়াকে পূর্ণাঙ্গ স্বাধীনতা প্রদান করেছেন।
এর উদাহরণ হিসেবে তিনি উল্লেখযোগ্য সংখ্যক জাতীয় পত্রিকা ও বেসরকারি টিভি চ্যানেল চালু হওয়ার বিষয়টি তুলে ধরেন। তিনি সাংবাদিকদের স্বচ্ছ আয়নার সাথে তুলনা করে বাংলাদেশের অপ্রতিরোধ্য ও দুর্বার উন্নয়নের কথা ইতিবাচকভাবে বিশ্বদরবারে তুলে ধরার জন্য তিনি সাংবাদিকদের প্রতি আহ্বান জানান।
আলোচনা সভায় আরো বক্তব্য দেন অল ইউরোপিয়ান বাংলা প্রেসক্লাবের সাধারণ সম্পাদক এবং নবকণ্ঠ পত্রিকার সম্পাদক আবু তাহির , প্রেসক্লাবের সহসভাপতি ফেরদৌস করিম আখনজী, ইউরোবার্তা ডটকমের নির্বাহী সম্পাদক নিয়াজ উদ্দিন চৌধুরী হীরাসহ প্রমুখ। অনুষ্ঠানে বাংলাদেশের বিভিন্ন পত্রিকা ও ইলেকট্রনিকস মিডিয়ার সাংবাদিকরা উপস্থিত ছিলেন।