করোনাভাইরাস ঠেকাতে যুক্তরাজ্যের অক্সফোর্ড বিশ্ববিদ্যালয়ের উদ্ভাবিত ভ্যাকসিনটি মানবদেহের জন্য নিরাপদ এবং সেটি রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা উজ্জীবিত করে তুলতে পারে বলে প্রাথমিকভাবে দেখা গেছে।
সোমবার চিকিৎসা সংক্রান্ত সাময়িকী ‘ল্যানসেট’ এ প্রকাশিত প্রাথমিক ফলাফলে বলা হয়েছে, প্রথম ধাপের ক্লিনিক্যাল ট্রায়ালে এ টিকা নিরাপদ এবং করোনাভাইরাসের বিরুদ্ধে রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা তৈরিতে সক্ষম বলে প্রতীয়মান হয়েছে।
বিবিসির প্রতিবেদনে বলা হয়, যুক্তরাজ্যের এক হাজার ৭৭ জন মানুষের ওপর পরীক্ষা করা হয়। এই টিকার ইনজেকশন তাদের শরীরে অ্যান্টিবডি এবং শ্বেতকণিকা তৈরি করেছে, যা শরীরের ভেতর করোনাভাইরাসের বিরুদ্ধে লড়াই করতে পারে।
গবেষকরা বলেছেন, একে একটি বড় রকমের প্রতিশ্রুতিশীল আবিষ্কার হিসেবে বর্ণনা করা হচ্ছে। তবে এটি পুরোপুরি সুরক্ষা দিতে পারবে কি-না, তা বলার সময় এখনও আসেনি। এ নিয়ে ব্যাপক আকারে পরীক্ষা-নিরীক্ষা এখনও চলছে।
গত ২৩ এপ্রিলে যুক্তরাজ্যে অক্সফোর্ড বিশ্ববিদ্যালয়ের করোনাভাইরাসের এ টিকা মানবদেহে পরীক্ষামূলক প্রয়োগ শুরু হয়। পরীক্ষায় অংশ নেওয়া বেশিরভাগ মানুষকেই এক ডোজ টিকা দেওয়া হয়েছিল। এর একমাস পর তাদের ৯৫ শতাংশের দেহেই ভাইরাসের বিরুদ্ধে অ্যান্টিবডি ৪ গুন বেড়ে যেতে দেখা গেছে বলে এক বিবৃতিতে জানিয়েছে অ্যাস্ট্রাজেনেকা কোম্পানি।
বিবিসি জানিয়েছে, ChAdOx1 nCoV-19 নামের এই টিকাটি তৈরি করতে অত্যন্ত দ্রুতগতিতে কাজ করছেন বিজ্ঞানীরা। শিম্পাঞ্জির শরীরের সাধারণ সর্দিকাশি তৈরি করে, এমন একটি ভাইরাসের জিনগত পরিবর্তন করে এই টিকাটি তৈরি করা হচ্ছে। এটাকে ব্যাপকভাবে পরিবর্তন করা হয়েছে, যাতে এটা মানবদেহে সংক্রমণ তৈরি না করে। এটাকে করোনাভাইরাসের কাছাকাছি একটা সাদৃশ্যও দেয়া হয়েছে।
প্রতিবেদনে আরও বলা হয়, যে টিকাটি তৈরি করা হচ্ছে, তার ভেতরে করোনাভাইরাসের স্পাইক প্রোটিনের জিনগত বৈশিষ্ট্য ঢুকিয়ে (যে অংশটি আমাদের কোষকে আক্রমণ করে) দিয়েছেন বিজ্ঞানীরা। এর মানে হলো, টিকাটি করোনাভাইরাসের সাথে সাদৃশ্যপূর্ণ হয়ে ওঠে এবং তখন শরীরের ভেতর রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা বুঝতে পারে যে, কীভাবে করোনাভাইরাসকে আক্রমণ করে পরাস্ত করা যাবে।