সৌদি আরব থেকে ফিরলেন আরও ১২৫ বাংলাদেশি।গতকাল শুক্রবার (২২ নভেম্বর) রাত ১১ টা ২০ মিনিটে সৌদি এয়ারলাইন্সের এসভি ৮০৪ বিমানযোগে দেশে ফেরেন কর্মীরা। এ নিয়ে নভেম্বর মাসের তিন সপ্তাহে মোট ২৬১৫ বাংলাদেশি দেশে ফিরলেন।
বিমানবন্দরের প্রবাসী কল্যাণ ডেস্ক ও ব্র্যাকের তথ্য অনুযায়ী, চলতি বছরের দশ মাসে সৌদি আরব থেকে দেশে ফিরেছেন ২১ হাজার বাংলাদেশি।
বরাবরের মতো গতকালও ফেরত আসাদেরও প্রবাসী কল্যাণ ডেস্কের সহযোগিতায় ব্র্যাক মাইগ্রেশন প্রোগ্রাম থেকে খাবার-পানিসহ নিরাপদে বাড়ী পৌছানোর জন্য জরুরী সহায়তা প্রদান করা হয়।
গতকাল ফেরা নারায়ণগঞ্জ আড়াইহাজারে আফজাল (২৬) মাত্র আড়াই মাস পূর্বে ৩ লাখ ৭০ হাজার টাকা খরচ করে গিয়েছিলেন সৌদি। ভাগ্য এতোটাই খারাপ যে রুম থেকে বের হয়েছিলেন বাজার করার জন্য কিন্তু পথে থেকে ধরে দেশে পাঠিয়ে দিলেন তাকে। আকামাও ছিলেন আফজালের। আফজালের মত বি বাড়িয়ার কামরুলও ৪ লাখ ৬০ হাজার টাকা খরচ করে আড়াই মাস আগে গিয়েছিলেন সৌদি কিন্তু তাকেও দেশে ফিরতে হলো শূন্য হাতে।
দু বছর ধরে সেলুনে কাজ করতেন কুমিল্লার নন্দন কুমার। আকামার মেয়াদ শেষ হবার পূর্বেই কফিল (নিয়োগকর্তা)কে সাড়ে ছয় হাজার রিয়াল দিয়েছিলেন কিন্তু আকামা আর করে দেয়নি নন্দনকে। পুলিশের হাতে নন্দন গ্রেপ্তার হলে কফিলকে ফোন দেন নন্দন কিন্তু কফিল আর নন্দনের দায় দায়িত্ব নেয়নি। শূন্য হাতে দেশে ফিরতে হলো নন্দনকে।
এমনি পরিস্থিতির শিকার হয়ে দেশে ফিরতে হলো বি বাড়িয়ার মন্টু মিয়া, সাইদুল ইসলাম, নরসিংদির নাইম, হবিগঞ্জের ফারুক হোসেন, ঢাকার সাইফুল ইসলাম।
দেশে ফেরা অনেক কর্মীদের অভিযোগ করেন আকামা তৈরীর জন্য কফিল (নিয়োগকর্তা)কে টাকা প্রদান করলেও কফিল আকামা তৈরি করে দেয়নি। পুলিশের হাতে গ্রেপ্তারের পর কফিরের সাথে যোগাযোগ করলেও গ্রেপ্তারকৃত কর্মীর দায়-দায়িত নিচ্ছেনা বরং কফিল প্রশাসনকে বলেন ক্রুশ (ভিসা বাতিল) দিয়ে দেশে পাঠিয়ে দিতে।
ব্র্যাক অভিবাসন কর্মসূচির প্রধান শরিফুল হাসান জানান, চলতি বছর এখন পর্যন্ত ২২ হাজার বাংলাদেশিকে সৌদি আরব থেকে ফেরত পাঠানো হয়েছে। চলতি মাসের তিন সপ্তায় ফিরলেন ২৬১৫ জন। প্রায় সবাই খালি হাতে ফিরেছেন। যারা কয়েকমাস আগে গিয়েছিলেন তাদের কেউই খরচের টাকা তুলতে পারেননি। তারা সবাই ভবিষ্যত নিয়ে এখন দুশ্চিন্তায়। আমরা আশা করছি তিনদিন পর সৌদি আরবের সঙ্গে বাংলাদেশের যে যৌথ বৈঠক হবে সেখানে নারী কর্মীদের পাশাপাশি পুরুষদের বিষয়টি নিয়েও আলোচনা হবে। বিশেষ করে ফ্রি ভিসার নামে প্রতারণা বন্ধ করতে কাজ করতে হবে দু দেশকে।