গত ২১ এপ্রিল শ্রীলংকায় সিরিজ বোমা হামলার পর দেশটিতে সাম্প্রদায়িক সহিংসতার আশঙ্কা বেড়েছে উল্লেখ করে বার্তা সংস্থা রয়টার্স জানিয়েছে, হুমকির মুখে শহর ছেড়ে পালাচ্ছেন মুসলমানরা।
ইস্টার সানডেতে প্রার্থনারত খ্রিষ্টানদের ওপর আত্মঘাতী বোমা হামলার পর থেকেই সহিংসতার আশঙ্কা করছেন সেখানকার মুসলমান ধর্মাবলম্বী মানুষ। এছাড়া, শ্রীলংকার প্রতিরক্ষা বিষয়ক এক প্রতিমন্ত্রী জানিয়েছিলেন, গত মার্চে নিউজিল্যান্ডে মুসলিমদের ওপর হওয়া হামলার প্রতিশোধ ছিল এই হামলা।
বুধবার (২৫ এপ্রিল) সহিংসতার ভয়ে শহরটি ছেড়ে পালিয়েছেন কয়েকশ’ পাকিস্তানি মুসলিম। স্থানীয় নেতাদের ব্যবস্থাপনা ও পুলিশের পাহারায় বাসে করে শহর ছাড়েন তারা।
নেগোম্বো থেকে পালানো আদনান আলি জানান, বোমা হামলার পর স্থানীয়রা তাদের বাড়িতে হামলা চালিয়েছে। তাই বাড়ি থেকে পালালেও তিনি বুঝতে পারছেন না যে এই মুহূর্তে কোথায় যাবেন।
আরেক মুসলিম ফারাহ জামিল জানান, তাকে বাড়ি থেকে বের করে দিয়েছে বাড়িওয়ালা। তিনি বলেন, ‘মালিক আমায় বলেছে যে, এখান থেকে বের হয়ে যাও। যেখানে ইচ্ছা সেখানে যাও, কিন্তু এখানে আর থাকতে পারবে না।’
এছাড়া, বুধবার রাতে হামলার ভয়ে পুলিশি পাহারায় স্থানীয় একটি মসজিদে আশ্রয় নিয়েছিল প্রায় ২০০ মুসলিম বাসিন্দা।
বিবিসির এক প্রতিবেদনে জানানো হয়েছে, কোনো কোনো মুসলমানের বাড়িতে স্থানীয়রা হামলা চালিয়েছে। তাদের বাড়ি থেকে বের হয়ে যেতে হুমকিও দিয়েছে।
উল্লেখ্য, শ্রীলংকার জনসংখ্যার বেশিরভাগই বৌদ্ধ ধর্মাবলম্বী। কিন্তু দেশটিতে অল্প সংখ্যক মুসলিম, হিন্দু ও খ্রিষ্টানও রয়েছে।
হামলার পরপরই এর পেছনে স্থানীয় চরমপন্থি ইসলামি সংগঠন ন্যাশনাল তৌহিদ জামাতকে (এনটিজে) দুষেছে কর্তৃপক্ষ। তবে এটাও বলা হচ্ছে যে, বাইরের সাহায্য ছাড়া তাদের পক্ষে এই হামলা চালানো সম্ভব ছিল না।
হামলার দু’দিন পর মঙ্গলবার (২৩ এপ্রিল) নিজস্ব বার্তা সংস্থা আমাক’এ প্রকাশিত এক বিবৃতিতে দায় স্বীকার করে জঙ্গি গোষ্ঠী আইএস। তবে তাদের দাবির পক্ষে বিশ্বাসযোগ্য প্রমাণ উপস্থাপন করতে পারেনি তারা।
উল্লেখ্য, রোববারের হামলায় অন্তত ২৫৩ জন মানুষ প্রাণ হারান। আহত হন প্রায় পাঁচ শতাধিক। প্রাথমিকভাবে, অবশ্য মৃতের সংখ্যা ৩৫৯ জন বলা হয়েছিল। কিন্তু পরবর্তীতে তা কমিয়ে আনা হয়। হামলার ঘটনায় এখন পর্যন্ত ৫৮ জনকে গ্রেফতার করেছে শ্রীলংকা পুলিশ।