বৃহস্পতিবার (৩১ মে) প্রধান বিচারপতির নেতৃত্বাধীন আপিল বিভাগ খালেদার জামিন স্থগিত রেখে নিয়মিত আপিলের এ আদেশ দেন।
রাষ্ট্রপক্ষে শুনানি করেন অ্যাটর্নি জেনারেল মাহবুবে আলম। খালেদার পক্ষে শুনানি করেন খন্দকার মাহবুব হোসেন, এ জে মোহাম্মদ আলী, জয়নুল আবেদীন ও ব্যারিস্টার মাহবুব উদ্দিন খোকন।
সোমবার (২৮ মে) বিচারপতি এ কে এম আসাদুজ্জামান ও বিচারপতি জে বি এম হাসানের হাইকোর্ট বেঞ্চ কুমিল্লার দুই মামলায় খালেদা জিয়াকে ছয় মাসের জামিন দেন। নড়াইলের আরেকটি মামলা উত্থাপিত হয়নি মর্মে খারিজ করে দেন আদালত।
কুমিল্লার দুই মামলায় বিএনপি চেয়ারপারসন খালেদা জিয়াকে হাইকোর্টের দেওয়া জামিন স্থগিত রেখে রাষ্ট্রপক্ষকে নিয়মিত আপিল করতে বলেছেন আপিল বিভাগ। ২৪ জুন এ বিষয়ে শুনানির জন্য দিনও ধার্য করেছেন আদালত।
ওই আদেশের পর সোমবার ব্যারিস্টার মাহবুব উদ্দিন খোকন বলেছিলেন, অফিসিয়ালি খালেদা জিয়া তিনটি মামলায় ‘অ্যারেস্ট’ আছেন। একটি জিয়া অরফানেজ ট্রাস্ট, যেটাতে আগেই জামিন পেয়েছেন। আর বাকি দুইটায় আজ জামিন হয়েছে। এখন অন্য কোনো মামলায় ‘শ্যোন অ্যারেস্ট’ নেই। আজকের আদেশের পর খালেদা জিয়ার মুক্তিতে আইনগত বাধা নেই। তবে এরপর সরকারের যদি ‘অসৎ উদ্দেশ্য’ থাকে তাহলে কোনো মামলায় ‘অ্যারেস্ট’ দেখাবে।
এরপর ওইদিন দুপুরেই রাষ্ট্রপক্ষ চেম্বার আদালতে খালেদার জামিন স্থগিত চেয়ে আবেদন করেন। আবেদনের পর চেম্বার বিচারপতি হাসান ফয়েজ সিদ্দিকী শুনানির জন্য মঙ্গলবার (২৯ মে) দিন ঠিক করেন।
আর মঙ্গলবার রাষ্ট্রপক্ষের আবেদনের প্রেক্ষিতে খালেদার ছয় মাসের জামিনাদেশ স্থগিত করে বৃহস্পতিবার পূর্ণাঙ্গ বেঞ্চে শুনানির আদেশ দেন আপিল বিভাগের চেম্বার বিচারপতি হাসান ফয়েজ সিদ্দিকীর আদালত।
বৃহস্পতিবার আপিল বিভাগ স্থগিতাদেশ ‘কন্টিনিউ’ রেখে ২৪ জুনের মধ্যে রাষ্ট্রপক্ষকে সিপি (নিয়মিত আপিল) করতে বলেন। আর এ কারণে ২৪ জুনের শুনানির আগে খালেদার মুক্তির কোনো সুযোগ নেই বলে মনে করছেন আইনজীবীরা।
২০১৫ সালের শুরুর দিকে ২০ দলীয় জোটের অবরোধ চলাকালে ঢাকা-চট্টগ্রাম মহাসড়কের চৌদ্দগ্রামে নাশকতায় বিশেষ ক্ষমতা আইন এবং হত্যা মামলায় জামিন আবেদন করেন খালেদা জিয়া। এ দুই মামলায়ই ছয় মাসের জামিন পেয়েছিলেন খালেদা জিয়া।
২০১৫ সালের ২১ ডিসেম্বর সন্ধ্যায় ঢাকায় মুক্তিযোদ্ধাদের সমাবেশে দেওয়া বক্তব্যে স্বাধীনতাযুদ্ধে ৩০ লাখ শহীদের সংখ্যা নিয়ে বিতর্ক রয়েছে বলে মন্তব্য করেন বিএনপি প্রধান। সেখানে বঙ্গবন্ধুর ব্যাপারেও বিরূপ মন্তব্য করেন তিনি। তার এ বক্তব্য বিভিন্ন সংবাদমাধ্যমে প্রচার হয়।
২০১৫ সালের ২৪ ডিসেম্বর দুপুরে নড়াইলের চাপাইল গ্রামের রায়হান ফারুকী ইমাম নামে এক ব্যক্তি এ সংক্রান্ত খবর পড়ার পর ক্ষুব্ধ হয়ে খালেদা জিয়ার বিরুদ্ধে নড়াইল সদর আমলি আদালতে মানহানির মামলা করেন। এ মামলা উত্থাপিত হয়নি মর্মে খারিজ করে দেন হাইকোর্ট।
জিয়া অরফানেজ ট্রাস্টে দুর্নীতির অভিযোগের মামলায় সাবেক এই প্রধানমন্ত্রীকে গত ৮ ফেব্রুয়ারি পাঁচ বছরের কারাদণ্ড দেন বিচারিক আদালত। সেই থেকে তিনি কারাবন্দি রয়েছেন পুরান ঢাকার নাজিম উদ্দিন রোডের পুরনো কেন্দ্রীয় করাগারে।