জাপানের হোক্কাইডো প্রিফেকচারে সেই ২০১১ সাল থেকে বাংলাদেশী ছাত্রছাত্রীদের আগমন শুরু হয় “হেলথ সাইন্সেস ইউনিভার্সিটি অব হোক্কাইডো” তে পিএইচডি কোর্সের সুবাদে।
বাঙ্গালীরা তাদের ল্যাবে বিভিন্ন পালা পার্বণে ছোটখাট পরিসরে রান্না করেছে ও উচ্ছ্বসিত প্রশংসা কুড়িয়েছে। জাপানীরা যে বাঙ্গালী রান্নার স্বাদ পছন্দ করে, তা কিন্তু বোঝা যায়। এই ইশিকারী তোবেতসু তে মানুষগুলো বড়ই আন্তরিক বিদেশীদের তথা বাঙ্গালীদের প্রতি। এলাকার সব্জীর দোকান বা নাপিতের দোকান যেখানেই যাওয়া হোক না কেন বাঙ্গালীদের জন্য বিশেষ আপ্যায়ন থাকে।
বাঙ্গালীদের সবসময় ইচ্ছে ছিলো তাদের এই ভালোবাসা কোন না কোন ভাবে ফিরিয়ে দেবার। তাদেরকেও একটু আপ্যায়ন করার।
এহেন অবস্থায় হঠাত একদিন সুযোগ এসে যায় এলাকাবাসীকে বাঙ্গালী রান্নার স্বাদ আস্বাদন করানোর। ইশিকারী তোবেতসু’র ফেস্টিভেল অরগানাইজিং কমিটি থেকে একটি নিমন্ত্রণপত্র আসে “হেলথ সাইন্সেস ইউনিভার্সিটি অব হোক্কাইডো’তে; এই মর্মে যে, যদি এই ইউনিভার্সিটির বিদেশী ছাত্রছাত্রীরা ইশিকারী তোবেতসু ফেস্টিভ্যালে স্টল দিয়ে অংশগ্রহণ করতে ইচ্ছুক হয় তাহলে তারা যেন যোগাযোগ করে।
বাঙ্গালীরা এমন সুযোগ ছাড়ে কি করে?
অতঃপর, বাঙ্গালীরা ইউনিভার্সিটির প্রতিনিধি হিসেবে উক্ত অনুষ্ঠানে ২৮শে জুলাই ২০১৭, শুক্রবারে অংশগ্রহণ করে ।
ইউনিভার্সিটির সাথে তোবেতসু ফেস্টিভ্যাল কমিটির সহযোগিতায়, ইউনিভার্সিটিতে সহকারী অধ্যাপক হিসেবে কর্মরত ডাঃ রিয়াসাত হাসানের নেতৃত্বে প্রথম বর্ষ থেকে ডাঃ মোসাম্মৎ মোর্শেদা খাতুন ও ডাঃ সৈয়দ তৌফিকুর ইসলাম, দ্বিতীয় বর্ষ থেকে ডাঃ সাজেদুল ইসলাম ও ডাঃ নাজমুস সালেহীন, চতুর্থ বর্ষ থেকে ডাঃ আকাশলীন বদরুদ্দোজা দিঠি এই ফেস্টিভ্যালে অংশগ্রহণ করে।
“কারি’ ও “ইয়োলো রাইস” হিসেবে জাপানীরা কিন্তু নিজেদের মতো করে দুটো ডিশ তৈরী করে। জাপানী “কারী”র স্বাদ আলাদা, ইন্ডিয়ান ও নেপালী “কারী”রও ভিন্নতা রয়েছে বাঙ্গালী “কারী”র সাথে।
এই সূক্ষ কিন্তু সুস্বাদু পার্থক্য বাঙ্গালীরা ফেস্টিভ্যালে তুলে ধরতে সক্ষম হয়েছে। যারা প্রথমবার খাবার কিনেছে, বেলা শেষে তারা আবার ফিরে এসে আরেক দফায় খাবার কিনে নিয়ে গেছে। বাঙ্গালী রসনার প্রশংসা যেন কানে মধুবর্ষণ করে। এলাকার মেয়র থেকে শুরু করে বিভিন্ন উচ্চপদস্থ কর্তাব্যাক্তিরা বাঙ্গালী খাবারের প্রেমে পড়ে যায়। সকলের উচ্ছ্বসিত প্রশংসা বাঙ্গালীদের আরো গর্বিত করেছে।
এলাকার মানুষদের ভালোবাসা ফিরিয়ে দেবার সাথে সাথে নিজেদের দেশের রসনাকে বিদেশের বুকে তুলে ধরবার এমন সুযোগে প্রায় দুইশো মানুষকে খাওয়ানো হয়েছে।