Breaking News

খুলনার সব বিখ্যাত খাবার-দাবারের ঠিকানা

বাংলাদেশের সর্ব দক্ষিণের বিভাগ খুলনা। উপকূলীয় অঞ্চল বলে অন্যান্য বিভাগের তুলনায় তাপমাত্রা একটু বেশি খুলনাতে। তাপমাত্রা বেশি হলেও প্রাকৃতিক দিক দিয়ে খুলনা কোনো অংশেই পিছিয়ে নয়। খাবার-দাবারের দিক দিয়ে ব্যক্তিগতভাবে আমি খুলনাকে রাখবো একদম উপরের দিকে। সারা খুলনা জুড়েই এমন জিভে জল আনা সব খাবার পাওয়া যায় যা নিয়মিত খাবারের মতো দেখালেও একবার মুখে গেলে ভোলা যায় না তাদের স্বাদ। ভোজনের দিক দিয়ে বেশ শৌখিন খুলনার মানুষ।
সাধারণ রেসিপিগুলোতেও এমন সব উপাদান ব্যবহার করে তারা যা খাবারগুলোকে করে অনন্য স্বাদে পরিপূর্ণ। খুলনাকে আমি বলি কাচ্চি বিরানি আর চুইঝালের শহর। খুলনায় আছে এমন কিছু রেস্টুরেন্ট যেগুলো বাইরে থেকে একদম সাদামাটা মনে হলেও দুপুর বেলায় একদিন খেতে হলে আগে থেকেই ফোন করে যেতে হয়। আর কথা না বাড়িয়ে চলুন দেখে আসি মজাদার সেসব খাবার আর কোথায় মিলবে সেগুলো।


জিরো পয়েন্টের কামরুলের গরু আর খাসি

যারা খুলনার বাসিন্দা না, কয়েকদিনের জন্য বেড়াতে এসেছেন খুলনায় তারা খুলনায় আসার কয়েক ঘণ্টার মধ্যে আত্মীয়স্বজন বা বন্ধুবান্ধব থেকে প্রথমেই যে হোটেলের নাম শুনবেন সেটা হলো জিরো পয়েন্টের কামরুল হোটেল। খুলনা বিশ্ববিদ্যালয় থেকে একটু সামনে এগোলেই পড়বে জিরো পয়েন্ট। সেখানে যে কাউকে জিজ্ঞেস করলেই দেখিয়ে দিবে কামরুল হোটেলটা কোন দিকে।
কামরুলের চুইঝালের গরু আর খাসির ঐতিহ্য এতই জনপ্রিয় যে আশেপাশের দোকানগুলো খাঁ খাঁ করে দুপুরবেলায় যখন কামরুলের সামনে দাঁড়িয়ে থাকতে দেখা যায় মানুষদের। গরু বা খাসির সাথে মিলবে এখানে ভাত। একবেলা খেতে খরচ পড়বে একশো থেকে একশো দশ টাকা।


বেজেরডাঙ্গার মুসলিমের গরু আর খাসি

বেজেরডাঙ্গার মুসলিম হোটেল সেরা নাকি জিরো পয়েন্টের কামরুল এই নিয়ে তর্ক এখন জমজমাট খুলনার প্রতিটি ভোজন রসিকদের মধ্যে। দেড় বা দুই বছর হলো ফুলতলা পার হয়ে বেজেরডাঙ্গার মুসলিম হোটেল খুলেছে। প্রথমবার যেবার যাই, মানুষের ভিড় এতই বেশি ছিল যে খাওয়াটাই হয়ে ওঠেনি সেবার। বেজেরডাঙ্গার গরু পুরো খুলনায় বিখ্যাত।

যারা গরু খান না, খাসিটা চেখে দেখতে পারেন। অনেক সুস্বাদু, মুসলিমের খাসিটা। ছোট ছোট পিস করা খাসির টুকরোর সাথে দেয়া হয় গোটা রসুন। একবেলা খেতে মোট খরচ পড়বে ১৫০ টাকার মতো। তবে এখানে অনেকগুলো মুসলিম হোটেল আছে, ঢোকার আগে জিজ্ঞেস করে নেবেন আসল মুসলিম কোনটা।


মেজবান বাড়ির সরিষা-খাসি
জিরো পয়েন্ট থেকে খুলনা বিশ্ববিদ্যালয়ের দিকে আসতে হাতের ডান দিকে ছোট ছিমছাম একটা রেস্টুরেন্ট পড়বে, নাম মেজবান বাড়ি। যাদের কামরুলে খাওয়া শেষ তাদের পরের টার্গেট থাকে মেজবান বাড়ির সরিষা তেলে রান্না করা খাসির মাংস। মোটে চারটে টেবিলের এই রেস্টুরেন্ট ভোজনরসিক মানুষে থাকে পরিপূর্ণ। সবচেয়ে সুন্দর হলো মেজবানের খাবার পরিবেশনের ধরণটা। মাটির সুন্দর পালিশ করা পাত্রে পরিবেশন করা হবে ভাত, ডাল আর সরিষা খাসি। যতবার খুশি ততবার ভাত নেয়া যাবে এমন একটা প্যাকেজে সঙ্গে থাকে খাসি অথবা গরু, একটা ঠাণ্ডা পানীয় আর অফুরন্ত ডাল। সব মিলিয়ে খরচ পড়বে ১৮০ টাকা।

কাচ্চিঘরের কাচ্চি বিরিয়ানি
খুলনার কাচ্চি বিরিয়ানির ঐতিহ্য বহুদিন ধরে টিকিয়ে রাখা রেস্টুরেন্টের নাম কাচ্চিঘর। রয়েলের মোড়ে অবস্থিত এই রেস্টুরেন্টের ভেতরটা বেশ ভালো করে সাজানো। পরিবার-পরিজন নিয়ে কাচ্চি খাওয়ার শখ জাগলে চলে যেতে পারেন কাচ্চিঘরে। খুব সুন্দর আর যত্ন করে রান্না করা খাসির কাচ্চি বিরিয়ানির সাথে অতিরিক্ত আর্কষণ হিসেবে থাকে চাটনি, বোরহানি আর সেদ্ধ ডিম। এবং এই বোরহানি তারা পরিবেশন করবে একদম ফ্রিতে। ফ্রিতে পাওয়া জিনিসের গুণগত মান নিয়ে যাদের সন্দেহ আছে, তারা অর্ডার করতে পারেন কোমল পানীয়। সব মিলিয়ে প্রতিজনে খরচ পড়বে ১৮০ থেকে ২০০ টাকার মতো।

মেগার কাচ্চি বিরিয়ানি
খুলনার নতুন রাস্তা থেকে রিক্সা নিয়ে একটু সামনের দিকে এগিয়ে গেলে হাতের বামপাশে পড়বে খুলনার বিখ্যাত কাচ্চির আস্তানা “মেগা বিরিয়ানি হাউজ”। আধুনিক ভোজন রসিকরা ভালো খাবারের সাথে ভালো পরিবেশও চায়। সেদিক থেকে মেগা বিরিয়ানির ভেতরের পরিবেশ ছোট কিন্তু  সুন্দর। এখানকার কাচ্চি বিরিয়ানি পরিমাণের দিক থেকে একজনের জন্য প্রচুর। কাচ্চিতে মসলা আলু, চাটনি আর ডিম তো আছেই। এখানকার বোরহানিটাও বেশ ভালো। খুলনা স্টেডিয়ামের পরের এলাকাগুলোতে এক সময়কার সবচেয়ে ভালো কাচ্চি বানানোর ঐতিহ্য ছিল মেগা বিরিয়ানি হাউজের। এখনো কাচ্চির গুণগত মান ধরে রেখেছে সগৌরবে। এখানে কাচ্চির মূল্য ১৩০ টাকা।


রাজকচুরীর রাজস্থানি খাসি
খাসিটা যদি হয় একটু ভিন্নধর্মী তাহলেই তো কথাই নেই। বলছি খুলনার দৌলতপুরের রাজস্থানি খাসির কথা। সাধারণ খাসির মাংসের চেয়ে একটু অন্যরকম খাসির মাংসের স্বাদ পাওয়া যাবে রাজকচুরীতে। গাজর-পোলাও এর সাথে পরিবেশন করা এই রাজস্থানি খাসির মাংসের চেহারা দেখেই ভোজনরসিক না হয়েও জিভে পানি এসে যাবে যে কারো।
এখানেও ব্যবহার করা হয় খাসির ঝোলের সাথে গোটা রসুন। তবে এই খাবারের একটাই ঝামেলা, পোলাওটা একটু কম দেয় তারা। যারা প্রথমবার রাজস্থানি খাসির স্বাদ নিচ্ছেন তাদের ব্যক্তিগতভাবে বলবো, চলে যান রাজকচুরীতে। মূল্য ১৬০ টাকা।


বাঁশ বাগানের খিচুড়ি-কলিজা-মুরগী ভুনা
অনেক তো গরু-খাসি খাওয়া, এবার একটু আবহমান বাংলার বাঙালিদের বৃষ্টিবাদলের দিনে প্রিয় খাবার খিচুড়ির দিকে আসা যাক। খুলনার মতো এত ভালো মানের ও দামে কম খিচুড়ি আর কোথাও আমি পাইনি। তবে সবসময়ই বিশেষ কিছু জায়গা আছেই যেখানে গেলে পাওয়া যাবে সবচেয়ে ভালো স্বাদ। তেমনই একটি রেস্টুরেন্ট বাঁশ-বাগান।
বাঁশ-বাগান নাম দেখে ভয় পাওয়ার কিছু নেই, খিচুড়ি-কলিজা আর মুরগী ভুনার যে আইটেম এখানে পাওয়া যায় তা চেখে দেখলে ভক্ত হয়ে যাবেন এটার। সোনাডাঙ্গা মজিদ সরণিতে গাজী মেডিকেলের একটু সামনে হাতের বামে গেলেই মিলবে বাঁশ-বাগান রেস্টুরেন্ট। খিচুড়ির দাম ৩০ টাকা, মুরগী ভুনা ৫০ টাকা আর কলিজা ভুনা ৬০ টাকা।


হানিফ কাকার ভর্তা হোটেল

সকালের নাস্তায় যারা ভাত খেতে পছন্দ করেন বা না করলেও নতুন কিছু চেখে দেখতে পছন্দ করেন তাদের জন্য খুলনার নতুন রাস্তার মোড়ে রয়েছে হানিফ কাকার ভর্তা হোটেল। সাধারণের চেয়ে সাধারণ এই হোটেলে কেবলমাত্র দুটি বড় টেবিল আছে, ইট দিয়ে বানানো হয়েছে বসার জায়গা। একদম রেললাইনের পাশেই ছোট বেড়ার ঘরমতন এই হানিফ কাকার ভর্তা হোটেল। প্রায় ২০ রকমের ভর্তা আর ভাত দিয়ে সকালটা শুরু করতে পারেন একটু অন্যরকম করে।
হোটেলের অবস্থা যেমনই থাকুক ভর্তার গুণগত মান নিয়ে কোনো প্রশ্ন করার উপায় নেই। সকাল সকাল গেলে আপনাকে সামনে রেখেই সেখানকার চাচী বানিয়ে দেবে চিংড়ি, আলু, পেঁপে, কালিজিরা, ডাল সহ আরো পনেরো রকমের ভর্তা। যতখুশি খাওয়া যাবে ভর্তা তবে প্রথমবার ভাতের জন্য ৩০ টাকা আর পরের প্রতি প্লেট অতিরিক্ত ভাতের জন্য খরচ হবে মাত্র ১০ টাকা।

নিউমার্কেটের দই-ফুচকা
ভারী খাবার-দাবার অনেক হলো, এখন একটু বিকালের নাস্তা কোথায় করা যায় সেটায় আসি। বিকালে খুলনার নিউমার্কেট আসলেই আপনার নাস্তার খোরাক হিসেবে পেয়ে যাবেন আশেপাশের অনেক দোকান, স্ট্রিট ফুডও আছে তাদের মধ্যে। তবে একটু স্বাস্থ্যকর আর মজাদার খাবার চেখে দেখতে চাইলে নিউমার্কেটের ১নং গেটের বাম পাশ ধরে এগোতে থাকলে একটা পল্লী-বাইকের মধ্যে দিল্লির লসসি, দই ফুচকা আরো অদ্ভুত সব খাবার বিক্রি করতে দেখা যায় একজনকে।
মোট চারটি খাবার বিক্রি করেন তিনি যেগুলোর মধ্যে সবচেয়ে ভালো লেগেছে দই ফুচকা। প্রচুর পরিমাণ দই দেয় ফুচকায়। এক প্লেটে ১০টা ফুচকা দেবে, প্রতি প্লেটের মূল্য মাত্র ৪০ টাকা।


ডাকবাংলা বাদাম-চা ও নিউমার্কেটের পেছনের দুধ-চা
ভারী খাবার-দাবার সারার পর আমার মতো প্রচুর মানুষের অভ্যেস একটুখানি চায়ের কাপে চুমুক দেয়া। খুলনার বিখ্যাত দুটি জায়গা ডাকবাংলা আর নিউমার্কেটেই পাওয়া যায় বিখ্যাত দুই ধরনের দুধ-চা। ডাকবাংলা ফেরীঘাটে যেখানে বাসস্ট্যান্ড আছে তার ঠিক সামনে কাপড়ের দোকানগুলোর পাশেই বেড়া আর কাঠের পুরনো বেঞ্চি সাজানো দোকানে বিক্রি করা হয় বাদাম-চা। প্রচুর পরিমাণ বাদামে ভরপুর এই চায়ে চুমুক দিলেই বোঝা যায় বাদামের গুণ কত। প্রতি কাপ চায়ের মূল্য ১০ টাকা।
আরেকটি বিখ্যাত চা পাওয়া যায় নিউমার্কেটের ঠিক পেছনে ভাই-ভাই টি স্টলে। রাস্তার ধারে পেতে দেয়া চেয়ার বা টুলে বসে বড় একটা মগে সেই দুধ-চায়ের স্বাদ জিভে লাগলেই বুঝে যাবেন সাধারণ চায়ের চেয়ে অনেকখানি আলাদা সে চা। দুধের সর দেয়া সেই চায়ের মূল্য ২০ টাকা।

তথ্য সূত্র: Trip Zone.

About admin

Check Also

Gratis hardcoreporn filmer smoking – watch free porn online mature milf

Sex Asiatiske kjrlighet dating site asiatiske dating nettsteder toronto Her beskrives alt webcam sex live …

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *