মানুষের নিত্য প্রয়োজনীয় যানবাহনগুলোর মধ্যে মোটরসাইকেল বড় একটি ক্ষেত্র দখল করে আছে। যুব সমাজের কাছে মোটর সাইকেলের জনপ্রিয়তা ব্যাপক। দ্বি-চক্র এ যানের জনপ্রিয়তার শীর্ষে অবস্থান এর প্রধান কারণ এর দ্রæত গতি। আর এই গতিই প্রতিনিয়ত কেড়ে নিচ্ছে অসংখ্যা তাজা প্রাণ। এ সকল দুর্ঘটনার ফলে হাজারো পিতা-মাতা পরিণত হচ্ছে জীবন্ত লাশে। স্তব্ধ হয়ে যাচ্ছে অসংখ্যা পরিবারের সুখ-শান্তি। যেসব পরিবার তাদের প্রিয়জনকে হারায় তারাই জানে স্বজন হারানোর বেদনা কত নির্মম, কতটা কঠিন। আমরা সাধারণ জনগণ নির্বাক দর্শক এর মত শুধু দেখেই যাচ্ছি লাশের মিছিল।
অনিয়ন্ত্রিত ট্রাফিক ব্যাবস্থা, আইনের শিথিলতা, অদক্ষ ড্রাইভার, অপরিকল্পিত সড়ক ব্যবস্থাপনা ইত্যাদি সমস্যা গুলোই মূলত এসকল দূর্ঘটনার কারণ। অহরহ আমাদের কত কিছুতেই দেরি হয়, সেদিকে আমাদের খেয়াল নেই অথচ সড়কে আসলেই আমরা খুব ব্যাস্ত হয়ে পড়ি। খুব দ্রæত গতিতে যাওয়ার ফলে যে আমরা অনেক অল্প সময়ে গন্তব্যে পোঁছাতে পারছি, ব্যাপারটা এরকম নয়। আস্তে আস্তে চালালে যে খুব বেশি দেরি হয় তাও নয়। তবুও আমরা বেপরোয়া, আমরা কোনো আইন মানতে রাজি নই, গতিই আমাদের কাছে মুখ্য, জীবন নয়।
অল্প বয়সে মটর সাইকেল হাতে পেয়ে,রক্তের গরমে যে সকল উঠতি বয়সী ছেলেরা নিছক আনন্দের জন্য বেপরোয়া গতিতে মটর সাইকেল ছুটায়, তাদের এ আনন্দের বলি হতে হয় অনেক সাধারণ মানুষকে। উন্মাদের মত বাইক ছোটানো এ ব্যক্তি গুলো শুধু যে একা ভোগে তা নয়, তাদের এ কর্মকান্ড অচিরেই পরিবারের কান্নার কারণ হয়ে দাঁড়ায়। এ ক্ষতি শুধু তার একার ক্ষতি নয়, এ ক্ষতি পরিবারের ক্ষতি, সমাজের ক্ষতি, সর্বপরি দেশের ক্ষতি। দুর্ঘটনাগুলো চাপ সৃষ্টি করে দেশীয় অর্থনীতির উপর। মোটরসাইকেল নিয়ে অনেক নির্মমতার সাক্ষী হয়েও আমরা নির্বাক। কিছুদিন আগেই সন্তানের হাতে পিতা-মাতা খুন হয়ে গেলো মটর সাইকেল না দেওয়ার জন্য। এর চাইতে বড় লজ্জা আর কি হতে পারে যখন পিতা-মাতার চেয়ে মোটর সাইকেল বড় হয়ে যায়।
কোনো দুর্ঘটনাই কাম্য নয়, সকল দুর্ঘটনার ক্ষতিই অপূরণীয়। আইনের সঠিক প্রয়োগ, পারিবারিক সচেতনতা সৃষ্টি তথা সরকারকে বিভিন্ন উদ্যেগ গ্রহণ করতে হবে দুর্ঘটনা রোধ করার জন্য। কারণ জনগণের স্বাভাবিক মূত্যু নিশ্চিত করার দ্বায় রাষ্ট্রের উপর বর্তায়, রাষ্ট্র সেই দ্বায় কোনো ভাবেই অস্বীকার করতে পারেনা। তবে রাষ্ট্রের পাশাপাশি জনগণ কেও সতর্ক হতে হবে, আমরা নিজেরা যদি সচেতন না হই, নাগরিক দায়িত্ব পালন না করি, সেই ক্ষেত্রে একক ভাবে রাষ্ট্রের পক্ষে নিরাপত্তা নিশ্চিত করা সম্ভব নয়। চালকদের ট্রাফিক আইন জানতে হবে এবং অবশ্যই মানতে হবে। সবার সম্মিলিত প্রচেষ্টাই পারে সড়কের এই বেপরোয়া যান চলাচল বন্ধ করতে। ফলশ্রুতিতে হ্রাস পাবে অপমৃত্যুহার এবং রক্ষা পাবে অসংখ্যা তাজা প্রাণ।
Check Also
১৫ই আগষ্ট আন্তর্জাতিক মহাকাশ স্টেশনের উদ্দেশ্যে যাত্রা করবেন জাপানি নভোচারী ফুরুকাওয়া
জাপানের নভোচারী ফুরুকাওয়া সাতোশির দ্রুত হলে ১৫ই আগষ্ট আন্তর্জাতিক মহাকাশ স্টেশনে দ্বিতীয় ভ্রমণ নির্ধারণ করা …