২৬ শে মে ২০১৭ শুক্রবার বিকালে, জাপান প্রবাসীদের উদ্যোগে নতুন প্রজন্ম ও জাতির শ্রেষ্ঠ সন্তানদের মধ্যে সেতু বন্ধন সৃষ্টির লক্ষ্যে, ১০০জন মুক্তিযাদ্ধাকে সম্মাননা প্রদান করা হয়।দুর্যোগপূর্ণ আবহাওয়া সত্ত্বেও রাজেন্দ্রপুর সেনানিবাসের সিএডিক্লাব মাঠে আয়োজিত অনুষ্ঠানটিতে জাপান প্রবাসী সহ গাজীপুর এলাকা ও ঢাকা থেকে আগত অনেক মুক্তিযোদ্ধা এবং গণ্যমান্য ব্যক্তি অংশগ্রহণ করেন। আর্থ-সামাজিক প্রেক্ষাপটে প্রবাসীদের অব্যাহত অবদানের পাশাপাশি জাপান প্রবাসীদের এই ব্যতিক্রমিআয়োজন ছিল স্বদেশের প্রতি প্রবাসীদের শর্তহীন ভালবাসার এক অনন্য বহিপ্রকাশ।
অনুষ্ঠানের শুরুতে প্রধান আয়োজক সোহেল রানা বলেন, আমরা জাপান প্রবাসীরা ব্যক্তিগত আয় উন্নতির পাশাপাশি জাপানে স্বদেশকে তুলে ধরার জন্য সর্বদা সচেষ্ট থাকি। কিছুদিন আগে আমরা জাপানে বঙ্গবন্ধু গোল্ড কাপ ক্রিকেট টুর্নামেন্টের আয়োজন করি এবং আমাদের সেই প্রয়াসে উৎসাহ দিতে জাপান সফর করেন মাননীয় মুক্তিযোদ্ধা বিষয়ক মন্ত্রী আ ক ম মোজাম্মেল হক। আমাদের ঐক্যবদ্ধ প্রচেষ্টায় জাপানে শহীদ মিনার প্রতিষ্ঠিত হয়েছে, যা বহির্বিশ্বে বাংলাদেশের দ্বিতীয় শহীদ মিনার। প্রবাসের প্রতিকুল পরিবেশে, আমাদের এসকল প্রচেষ্টা ও আত্মত্যাগের প্রধান প্রেরণা হচ্ছে একাত্তরের বীর মুক্তিযোদ্ধারা।অনুষ্ঠানের প্রধান আলোচক ছিলেন বীর মুক্তিযাদ্ধা এনায়েতউদ্দিন মো: কায়সার খান, বিশেষ অথিতি ছিলেন বাংলাদেশস্বেচছাসেবক লীগের যুগ্ম সাধারন সম্পাদক গাজী মেজবাউলহোসেন সাচ্চু। অতিথিরা উপস্থিত মুক্তিযোদ্ধাদের অভিনন্দন জানান ও জাপান প্রবাসীদের এই উদ্যোগের ভুয়সী প্রশংসা করেন। দুর্যোগপূর্ণ আবহাওয়ার কারণে প্রধান অতিথি, মুক্তযোদ্ধা বিষয়ক মন্ত্রী আ ক ম মোজাম্মেল হক সময়মতো উপস্থিত হতে না পরলেও টেলিফোন বার্তার মাধ্যমে অনুষ্ঠানের সার্বিক সাফল্য কামনা করেন। উপস্থিত সকল মুক্তিযোদ্ধাদের স্টেজে এন পরিচয় করিয়ে দেওয়া হয় ও হাতে তুলে দেওয়া হয় বিশেষ উপহার। জাপানস্থ প্রবাসী সংগঠন ঢাকা ক্লাবের পক্ষ থেকে বিশেষ অতিথিদের হাতে তুলে দেওয়া হয় স্মারক ক্রেস্ট। মুক্তিযোদ্ধাদের পক্ষে শুভেচ্ছা বক্তব্য প্রদান করেন, গাজীপুর জেলা মুক্তিযোদ্ধা ইউনিটের ডেপুটি কমান্ডার মহর আলী।
সভাপতির বক্তব্যে জাপান প্রবাসী সমজ সংগঠক ওমেডিকেয়ার জাপানের চেয়ারম্যান ডঃ শেখ আলীমুজ্জামানবলেন, গত বছর গুলশানের জঙ্গী আক্রমনে সাতজন জাপানী নিহত হন, একই ভাবে রংপুরে মৃত্যু বরণ করেন আর এক জাপানী। এসব ঘটনাবলীতে জাপানে তথা বহির্বিশ্বে বাংলাদেশের ভাবমূর্তি ভীষণ ভাবে ক্ষতিগ্রস্থ হয়। গত একবছর যাবত বর্তমানসরকার বিবিধ অনুষ্ঠানসূচীর মাধ্যমে বাংলাদেশের ভাবমূর্তি পুণরুদ্ধারের জন্য নিরলস চেষ্টা করে যাচ্ছে। মাননীয় প্রধানমন্ত্রী স্বয়ং জাপান সফর করেছেন। সরকারের পাশাপাশি প্রবাসীরাও তাঁদের কর্মাকান্ড অব্যহতে রেখেছেন। মুক্তিযোদ্ধাদের এই সম্মননাঅনুষ্ঠানের মাধ্যমে আমরা প্রবাসের তরুন প্রজন্ম যারা সচক্ষে মুক্তিযুদ্ধ দেখেনি, তাদের স্বাধীনতার চেতনায় উদ্বুদ্ধ করতে চাই।একাত্তরে বীর মুক্তিযোদ্ধারা জীবন বাজী রেখে যে মানচিত্র আমাদের এনে দিয়েছিলেন, জঙ্গীবাদ বা অন্যকোন অপশক্তির উত্থা্নের কারণে প্রাণপ্রিয় সেই মানচিত্র আক্রান্ত হলে, প্রয়োজনেপ্রবাসী প্রজন্মকে দেশে ফিরে আবারো লড়াই করতে হবে। এই অনুষ্ঠানের মাধ্যমে তাদের কাছে সেই বার্তাটি আমরা পৌঁছে দিতেচাই। তিনি গাজীপুরের শিববাড়ীতে অবস্থিত মেডিকেয়ার জাপান সেন্টারে এলাকার সকল মুক্তিযোদ্ধাকে বিনামূল্যে চিকিৎসা সেবা প্রদান করার ঘোষণা দেন। ফেসবুক লাইভ সম্প্রচারের মাধ্যমে জাপান থেকে অনেক প্রবাসীও অনুষ্ঠানে অংশ গ্রহণ করেন।