ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় কেন্দ্রীয় ছাত্র সংসদ (ডাকসু) নির্বাচনের দাবিতে এবার আন্দোলনে নামার সময়সীমা বেঁধে দিয়েছে প্রগতিশীল ছাত্রজোট। প্রগতিশীল ছাত্রজোটঢাবি শাখার নেতৃবৃন্দ জানিয়েছেন, আগামী ১০ জানুয়ারির মধ্যে ঢাবি কর্তৃপক্ষ ডাকসু নির্বাচনের তফসিল ঘোষণা না করলে তারা লাগাতার অবস্থান ধর্মঘট, বিক্ষোভ সমাবেশের মতো নানা কর্মসূচি ঘোষণা করবেন।
ডাকসু নির্বাচনের দাবিতে ২৫ নভেম্বর থেকে অনশন করছেন ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের সমাজকল্যাণ ও গবেষণা ইনস্টিটিউটের সন্ধ্যাকালীন স্নাতকোত্তর কোর্সের ছাত্র ওয়ালিদ আশরাফ। তার দাবির প্রতি জোর সমর্থন জানিয়েছে প্রগতিশীল ছাত্রজোট।
প্রগতিশীল ছাত্রজোট ঢাবি শাখার নেতৃবৃন্দ গত বৃহস্পতিবার মধুর ক্যান্টিনে এক সংবাদ সম্মেলনে আগামী ১০ জানুয়ারি মধ্যে ডাকসু নির্বাচনের তফসিল ঘোষণা না করা হলে কঠোর কর্মসূচি দিয়ে আন্দোলনে নামবেন বলে ঢাবি প্রশাসনকে হুঁশিয়ারি দেন।
বাংলাদেশ ছাত্র ফেডারেশন ঢাবি শাখার সভাপতি উম্মে হাবিবা বেনজির বলেন, ডাকসু নির্বাচনের দাবিতে অনশনরত ওয়ালিদ আশরাফের প্রতি আমরা সংহতি জানাই। তার অনশনের ৯ দিন পরও ঢাবি প্রশাসনের পক্ষ থেকে কোনও ধরনের তৎপরতা না দেখায় নিন্দা ও ক্ষোভ প্রকাশ করছি। তিনি আরও বলেন, ওয়ালিদের অনশনের প্রতি সংহতি জানিয়ে ১ ডিসেম্বর জোটের পক্ষ থেকে অপরাজেয় বাংলার সামনে চোখে কালো কাপড় বেঁধে অবস্থান নেওয়া হয়েছে। ১০ জানুয়ারির মধ্যে নির্বাচনের তফসিল ঘোষণা না করা হলে লাগাতার আন্দোলনে যাবো আমরা।
বাংলাদেশ ছাত্র ইউনিয়ন ঢাবি সংসদের সভাপতি তুহিন কান্তি দাশ বলেন, ডাকসু নির্বাচনের দাবিতে আগামী ১৩ ডিসেম্বর ছাত্র ইউনিয়নের পক্ষ থেকে উন্মুক্ত আলোচনার আয়োজন করা হয়েছে। এর বাইরে ছাত্র জোট ও সংগঠনের পক্ষ থেকে কঠোর কর্মসূচি দেওয়া হবে।’
সমাজতান্ত্রিক ছাত্র ফ্রন্ট ঢাবি শাখার সভাপতি ইভা মজুমদার বলেন, ধারাবাহিকভাবে আমরা ছাত্র জোট থেকে বিভিন্ন কর্মসূচি পালন করে আসছি। ১০ জানুয়ারির মধ্যে নির্বাচনের তফসিল ঘোষণা না করা হলে জোটগতভাবেই কঠোর কর্মসূচি দেওয়া হবে।
ছাত্রলীগের সাধারণ সম্পাদক এস এম জাকির হোসাইন বলেন, ওয়ালিদ আশরাফের দাবিকে সাধুবাদ জানাই। কিন্তু অনশন করে দাবি কতটা আদায় হবে, এ নিয়ে সন্দিহান আমরা।
বিশ্ববিদ্যালয় স্বায়ত্তশাসিত প্রতিষ্ঠান হলেও চলে সরকারের ইশারায়। সরকারের কারণে ডাকসুর নির্বাচন হচ্ছে না। তবে ডাকসু নির্বাচন হলে তাতে ছাত্রদল অংশ নেবে। ছাত্রদলের সভাপতি রাজিব আহসান এসব কথা বলেন।
ওয়ালিদ আশরাফ বলেন, ‘বিশ্ববিদ্যালয়ের সিনেটে শিক্ষক প্রতিনিধি, রেজিস্টার্ড গ্র্যাজুয়েট প্রতিনিধি, সিন্ডিকেট সদস্য, ডিন, শিক্ষক-কর্মকর্তা-কর্মচারীদের সংগঠনসহ সব সংগঠনের নির্বাচন নিয়মিত অনুষ্ঠিত হচ্ছে। তাহলে কেন ডাকসু নির্বাচন হচ্ছে না? তিনি আগামী বিজয় দিবসের আগে ডাকসু নির্বাচন দেবার জন্য জোর দাবি করেন।’
ডাকসুর সর্বশেষ ভিপি আমান উল্লাহ আমান বলেন, ডাকসু নির্বাচনের দাবিকে আমিও সমর্থন করি। আমি চাই, ছাত্র সংগঠনগুলোকে তাদের মতামত প্রকাশের স্বাধীনতা দেওয়া হোক। সাধারণ ছাত্রছাত্রীরা তাদের নির্বাচিত প্রতিনিধির মাধ্যমে ছাত্র সংসদের কর্মকাণ্ড পরিচালনা করুক।
৪ ডিসেম্বর ২০১৭
ঢাকা।
সূত্র: বাংলাট্রিবিউন.কম