থাইল্যান্ডের রাষ্ট্রায়ত্ত জ্বালানি কোম্পানি পিটিটি পাবলিক কোম্পানি লিমিটেড বাংলাদেশে দীর্ঘমেয়াদে এলএনজি সরবরাহ ও দেশে রেফ্রিজারেটেড এলপিজি টার্মিনাল স্থাপনে বিনিয়োগ সহযোগিতা প্রদানের আগ্রহ প্রকাশ করেছে । সম্প্রতি কোম্পানির ১০ সদস্যের একটি প্রতিনিধি দল বাংলাদেশ অর্থনৈতিক অঞ্চল কর্তৃপক্ষের (বেজা) সঙ্গে এক সভায় এ আগ্রহ প্রকাশ করেন।
বাংলাদেশে বিনিয়োগ পরিবেশ ও সম্ভাবনা যাচাই এবং দুই দেশের বাণিজ্যিক সম্পর্ক আরো দৃঢ় করার লক্ষ্যে পিটিটির প্রতিনিধিরা কাজ করবেন বলে আশ্বাস প্রদান করেছেন বেজা কার্যালয়ে। দলটির নেতৃত্বে ছিলেন কোম্পানির ইন্টারন্যাশনাল স্ট্র্যাটেজি অ্যান্ড বিজনেস বিভাগের এক্সিকিউটিভ ভাইস প্রেসিডেন্ট নোপ্পর্ন চুচিন্দা ও পিটিটিজিএলের ব্যবস্থাপনা পরিচালক সুচিত্রা সুয়ানসিনপান।
প্রতিনিধিদল আরো আশা প্রকাশ করেন যে, বাংলাদেশকে তারা বিকল্প জ্বালানি, জ্বালানি সক্ষমতা অর্জন ও স্মার্ট গ্রিড বিষয়েও প্রযুক্তিগত সহযোগিতা প্রদান করতে চায়।
সভায় বাংলাদেশের অর্থনৈতিক অঞ্চলের সামগ্রিক কর্মকাণ্ডের রূপরেখা উপস্থাপন করেন বেজার নির্বাহী চেয়ারম্যান পবন চৌধুরী। তিনি পিটিটি প্রতিনিধিদের তাদের পর্যটন খাতের অভিজ্ঞতা কাজে লাগিয়ে বাংলাদেশে বেজার অধীনে বাস্তবায়নাধীন নাফ, সাবরাং ও সোনাদিয়া ইকো ট্যুরিজম পার্কে বিনিয়োগ সহযোগী হিসেবে ভূমিকা রাখা ও দেশের পর্যটন খাতের ব্যাপক উন্নয়নে অংশীদার হওয়ার আহ্বান ও জানান। এছাড়া ভবিষ্যতে এ দেশে গভীর সমুদ্রবন্দর তৈরির পরিকল্পনা, তার সম্ভাব্যতা সম্পর্কে এবং বিনিয়োগের প্রক্রিয়া সম্পর্কে তাদের অবহিত করেন। এছাড়া কর অবকাশসহ আর্থিক নানা সুবিধার বিষয়ে থাই প্রতিনিধিদের জানিয়েছেন তারা। এ বৈঠকে বেজার ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তারা ও উপস্থিত ছিলেন বলে সূত্র জানিয়েছেন।
উল্লেখ্য, পিটিটি থাইল্যান্ডের স্টক এক্সচেঞ্জে তালিকাভুক্ত অন্যতম বৃহৎ কোম্পানি। বিশ্বের ২৫টির বেশি দেশে প্রতিষ্ঠানটি বিনিয়োগ সম্প্রসারণ করেছে। থাইল্যান্ড উপসাগরে প্রতিষ্ঠানটির একটি বিস্তৃত সাবমেরিন গ্যাস পাইপলাইন ও দেশব্যাপী এলপিজি নেটওয়ার্ক রয়েছে। এছাড়া প্রতিষ্ঠানটি বিদ্যুৎ উৎপাদন, পেট্রোকেমিক্যাল দ্রব্য, তেল ও গ্যাস উৎপাদন এবং গ্যাসোলিন সরবরাহের সঙ্গে যুক্ত। প্রতিষ্ঠানটি ফরচুন গ্লোবাল ৫০০ তালিকায় স্থান পাওয়া একমাত্র থাই কোম্পানি।
দেশের অর্থনৈতিক উন্নয়ন ত্বরান্বিত করা, ২০৩০ সালের মধ্যে ১০০টি অর্থনৈতিক অঞ্চল প্রতিষ্ঠা, ১ কোটি মানুষের কর্মসংস্থান সৃষ্টি ও একই সময় নাগাদ প্রতি বছর অতিরিক্ত ৪ হাজার কোটি ডলার সমমানের পণ্য উৎপাদন/রফতানির প্রত্যাশা নিয়ে অর্থনৈতিক অঞ্চল প্রতিষ্ঠার কার্যক্রম বাস্তবায়ন করা হচ্ছে। বেজা এরই মধ্যে ১৭টি বেসরকারি অর্থনৈতিক অঞ্চল প্রতিষ্ঠায় প্রাক-যোগ্যতাপত্র বা প্রি-কোয়ালিফিকেশন লাইসেন্স প্রদান করেছে। এর মধ্যে ছয়টি বেসরকারি অর্থনৈতিক অঞ্চল চূড়ান্ত লাইসেন্স পেয়েছে। এছাড়া মোংলা অর্থনৈতিক অঞ্চল ও মিরসরাই অর্থনৈতিক অঞ্চলের (প্রথম পর্যায়) ডেভেলপার নিয়োগ সম্পন্ন হয়েছে। মিরসরাই, ফেনী, নাফ ও সাবরাং ট্যুরিজম পার্কের উন্নয়নকাজ চলমান। মিরসরাই ও ফেনী অর্থনৈতিক অঞ্চলে প্রায় ১ হাজার ৭০০ কোটি ডলার বিনিয়োগের প্রস্তাব পেয়েছে বেজা।
Check Also
১৫ই আগষ্ট আন্তর্জাতিক মহাকাশ স্টেশনের উদ্দেশ্যে যাত্রা করবেন জাপানি নভোচারী ফুরুকাওয়া
জাপানের নভোচারী ফুরুকাওয়া সাতোশির দ্রুত হলে ১৫ই আগষ্ট আন্তর্জাতিক মহাকাশ স্টেশনে দ্বিতীয় ভ্রমণ নির্ধারণ করা …