বাংলাদেশের বন্যা কবলিত এলাকার নারীদের বন্যা ও প্রাকৃতিক দুর্যোগ পরবর্তী পুনর্বাসনে সহযোগিতার জন্য একটি বিশেষ উদ্যোগ নিয়েছে বাংলাদেশ উইমেন্স অ্যাসোসিয়েশন, জাপান। বাংলাদেশের বন্যা দুর্গত এলাকার দুঃস্থ নারীদের পুনর্বাসনে সহযোগিতা করার লক্ষ্যে এক বিশেষ চ্যারিটি বাজার এর আয়োজন করে সংগঠনটি। গেল শনিবার ১৮ নভেম্বর টোকিও এর কিতা শহরের উকিমা ফুরেয়াইকান নামক মিলনায়তনে এই চ্যারিটি বাজারের আয়োজন করে বাংলাদেশ উইমেন্স অ্যাসোসিয়েশন, জাপান। অনুষ্ঠানের প্রধান অথিতি ছিলেন বাংলাদেশ দূতাবাসের বর্তমান চার্জ দ্য অ্যাফেয়ার্স এবং ইকোনমিক মিনিস্টার ডঃ সাহিদা আক্তার ।
দুপুর থেকেই চ্যারিটি বাজার উম্মুক্ত করে দেওয়া হয় অতিথীদের জন্য। তনুশ্রী গোলদার বিশ্বাসের পরিচালনায় চ্যারিটি বাজার এর আনুষ্ঠানিক আলোচনা সভা শুরু হয় বিকাল ৫টার দিকে। অ্যাসোসিয়েশন এর পরিচালনা পর্ষদের তালিকা ঘোষণা করেন উপদেষ্টা মুনশী রোকেয়া সুলতানা। অ্যাসোসিয়েশন এর সভানেত্রী জেসমিন সুলতানা কাকলি, সহ-সভানেত্রী রুমানা রউফ সোমা, সাধারণ সম্পাদিকা সুবর্ণা নন্দী, যুগ্ম-সাধারণ সম্পাদিকা আসমা আখতার পারভিন বহ্নি, কোষাধক্ষ সালমা আক্তার লাকি এবং দপ্তর সম্পাদিকা রোকেয়া পারভিন তানিয়ার নাম ঘোষণা করেন। প্রধান উপদেষ্টা মান্যবর রাষ্ট্রদূত রাবাব ফাতিমা ও উপদেষ্টা ডঃ সাহিদা আক্তার এর নাম ঘোষণা করা হয় সেসময়।
দুপুর দুইটা থেকে রাত ৯ পর্যন্ত অনুষ্ঠানটি সাজানো ছিল বিভিন্ন আয়োজনে। স্বরলিপি কালাচারাল একাডেমীর সদস্যরা বিভিন্ন প্রবাসী শিল্পীদের নিয়ে মনোরম এক সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠান উপহার দেন অথিতিদেরকে। বিপুল সংখ্যক প্রবাসী এই মহতী অনুষ্ঠানকে স্বাগত এবং উৎসাহ জানাতে উপস্থিত হয়। জাপান প্রবাসী বাংলাদেশি কমিউনিটির গণ্য-মান্য ব্যক্তিবর্গের মধ্যে শুভেচ্ছা বক্তব্য প্রদান করেন মুনশি কে. আজাদ, আবদুর রহমান, খন্দকার আসলাম হিরা, বাদল চাকলাদার, এমডি নাসিরুল হাকিম, কামরুল আহসান জুয়েল ও কাজী আসগর আহমেদ সানী প্রমুখ। এছাড়া অ্যাসোসিয়েশনকে বিসিসিআইজের পক্ষ থেকে ফুলেল শুভেচ্ছা জানানো হয়।
শুভেচ্ছা বক্তব্যরত কমিউনিটির বিভিন্ন সামজিক ও রাজনৈতিক সংগঠনের প্রতিনিধিবৃন্দ (ছবি বড় করে দেখতে ছবির উপর ক্লিক করুন)
প্রবাসী শিল্পীদের পরিবেশনা (ছবি বড় করে দেখতে ছবির উপর ক্লিক করুন)
নিহনবাংলা ডট কমের সাথে এক বিশেষ সাক্ষাৎকারে অ্যাসোসিয়েশন এর সভানেত্রি জেসমিন সুলতানা কাকলি জানান তাদের এই উদ্যোগ অব্যাহত থাকবে। দেশের বন্যা কবলিত এলাকার অসহায় মহিলাদের আর্থিক, সামাজিক এবং পেশা ভিত্তিক পুনর্বাসনে সহযোগিতা করতে তাদেরকে আহবান জানান।
৫০০ ইয়েনের বিনিময়ে র্যাফল ড্র এর টিকিট বিক্রি করে যা থেকে সংগ্রহীত এবং স্টল থেকে সংগ্রহীত তহবিল মিলিয়ে এই সাহায্য কার্যক্রম শুরু হবে। শিশুদের দিয়ে র্যাফল ড্র এর লটারি কার্যক্রম পরিচালনা করে গুল মোহাম্মদ ঠাকুর।
মোট ১৭টি স্টল দিয়ে চ্যারিটি বাজার সাজানো হয়। দেশী শাড়ি, গহনা, বই সহ বিভিন্ন মিষ্টান্নে রমরমা কেনা বেচা চলে পুরো অনুষ্ঠান জুড়ে। চ্যারিটি বাজারের অংশগ্রহণকারি ষ্টল গুলি ছিল ১) বাংলাদেশ উইমেন এসোসিয়েশন, জাপান (খাবার) ২) বাংলাদেশ উইমেন এসোসিয়েশন, জাপান (ফ্লি মার্কেট / ভাসমান বাজার), ৩) ভোজন বিলাস (তানিজা শারমিন, সৈয়দ লায়লা পারভিন, ফারহানা সপ্না) (দেশী খাবার) ৪) ইউনিক ওয়ার্ল্ড (ব্রাইট অ্যান্ড লাইট জ্যোতি) (জুয়েলারি এবং পোশাক) ৫) সাত রং (কনক ও রিমা) (পোশাক) ৬) অপ্সরার গহনার বাক্স (আয়শা শারমিন) (জুয়েলারি) ৭) সুপ্রভা ফ্যাশন হাউস (নদী সিনহা) (শাড়ি) 8) মিনা বুটিক (রওনক জাহান) (বুটিক) ৯) দ্যা অ্যাঞ্জেল ফ্যাশন (রাইমা) (বুটিক) ১০) ডেস্টিনি ইনকরপোরেশন (জেসমিন সুলতানা ) (হাত ঘড়ি) ১১) নুপুর গ্রন্থ জগৎ (জুয়েল আহসান কামরুল) (বই ) ১২) জেবি নেট (রুমানা সুলতানা) ১৩) ফ্লাওয়ার ফেইরিস বিউটি (দিপু মউ) (বিউটি পার্লার) ১৪) নাবা মিস্টান্ন অ্যান্ড সন্যাক্স (মুক্তা) (ফুড) ১৫) ফুড কর্নার (চাঁদ সুলতানা মুক্তা) (খাবার) ১৬) ড্রেসার জেপি (ফারহানা ইসরাত) (বুটিক) ১৭) ইরাকই (শিউলি রায়) (ক্লথ ও জুয়েলারি)।
চ্যারিটি বাজার কিছু ছবি (ছবি বড় করে দেখতে ছবির উপর ক্লিক করুন)
সর্বপরি সুন্দর এই আয়োজন দেখে বলতেই পারি পিছিয়ে নেই জাপান প্রবাসী বাংলাদেশি রমণীরা। দেশের সেবায় তারাও এগিয়ে আসতে চায় আরও সক্রিয় ভাবে। পাশে থাকতে চায় দেশের বন্যা কবলিত অসহায় নারীদের পাশে তথা দেশের পাশে।
অনুষ্ঠানের উল্লেখযোগ্য অংশ নিচের ভিডিওতে দেখুনঃ
প্রতিবেদনঃ গোলাম মাসুম
চিত্রঃ জাহিরুল ইসলাম, রহমান মনি ও জেসমিন সুলতানা