মিয়ানমারের নিরাপত্তা বাহিনী দেশটির সংখ্যালঘু রোহিঙ্গা মুসলমান নাগরিকদের বিরুদ্ধে মানবতা-বিরোধী অপরাধ সংঘটিত করেছে বলে মত প্রকাশ করেছেন জাতিসংঘের এক শীর্ষ কর্মকর্তা।জাতিসংঘের ওই কর্মকর্তার নাম ইয়াংহি লি। তিনি সম্প্রতি বাংলাদেশে পালিয়ে আসা রোহিঙ্গা মুসলমানদের অবস্থা সরেজমিনে দেখেন। পরে বিবিসিকে কাছে দেওয়া এক সাক্ষাৎকারে তার মত মতামত প্রকাশ করেন। গত অক্টোবরের পর বাংলাদেশে পালিয়ে আসা প্রায় ৭৫,০০০ রোহিঙ্গা শরণার্থীর অনেকের সঙ্গে বিবিসির মিয়ানমার সংবাদদাতা জোনাহ ফিশার কথা বলেছেন এবং তাদের কাছ থেকে শুনেছেন ধর্ষণ ও হত্যার অসংখ্য ঘটনার কথা।
মিয়ানমারে প্রায় দশ লক্ষ রোহিঙ্গা মুসলমানের বাস, কিন্তু তাদের নাগরিকত্ব দেওয়া হচ্ছে না, আর বঞ্চিত করা হচ্ছে মৌলিক মানবাধিকার থেকে। মিয়ানমারের নির্বাচিত নেত্রী অং সান সু চি’র একজন মুখপাত্র অবশ্য বলেছেন যে, তারা নিজেরাই একটি তদন্ত কার্যক্রম চালাচ্ছেন।
পাঁচ মাস ধরে মিয়ানমার সরকার দেশটির উত্তরের রাখাইন রাজ্যে বাইরের কাউকে ঢুকতে দিচ্ছে না।
দেশটির সংখ্যালঘু রোহিঙ্গা সম্প্রদায়ের মানুষদের সঙ্গে কেমন আচরণ করা হচ্ছে, তাও সরকার পৃথিবীর কাউকে জানতে দিতে চায় না। তবে শেষ পর্যন্ত হাজার হাজার রোহিঙ্গা সীমান্ত পাড়ি দিয়ে বাংলাদেশে পালিয়ে আসতে সক্ষম হয়। আর সেখানে শরণার্থী শিবিরে তারা বিবিসি সংবাদদাতাকে সেই সব লোমহর্ষক ঘটনার কথা জানায়, যেসব ঘটনায় বার্মার নিরাপত্তা বাহিনী গ্রামের পর গ্রাম পুড়িয়ে দিয়েছে, মানুষ হত্যা করেছে আর ধর্ষণ করেছে নারীদের।
একজন নারী জোনাহ ফিশারকে জানায় যে তিন জন সৈন্য তাকে পালাক্রমে ধর্ষণ করেছে। এরপর ওই ঘটনা সরকারী তদন্তকারীদের জানানোর পর কীভাবে তিনি মিয়ানমার থেকে পালিয়ে আসেন, তাও তিনি বিবিসিকে বলেন। শতশত, কিংবা তার চেয়েও বেশী, রোহিঙ্গা সম্প্রদায়ের মানুষ যেসব ঘটনায় নিহত হয়েছেন বলে মনে করা হচ্ছে – ইয়াংহি লি তাকে বর্ণনা করছেন মানবতা-বিরোধী অপরাধ হিসেবে। আগামী সোমবার মিজ লি রোহিঙ্গাদের বিষয়ে একটি তদন্ত কমিশন গঠন করার জন্য জাতিসংঘকে আনুষ্ঠানিকভাবে অনুরোধ করবেন। তবে এই পরিকল্পনায় এখনো ব্রিটেনের সায় নেই। কারণ তারা মিয়ানমারের নির্বাচিত নেতা অং সান সু চি’র ভিত্তি দুর্বল করতে খুব একটা আগ্রহী নয়।
সূত্র : বিবিসি।