আলো
তোমার ভেতরে যে আলো,
তুমি দেখতে পাও?
আমি দেখি।
সে আলো খুব জ্বলজ্বলে নয়,
বলতে পারো দিয়া’র আলো সদৃশ!
নিভে যায়না,
আবার ভীষণ রকম ঝকমকেও নয়!
বরং,
দৃঢ় নিভু নিভু আলো দিয়ে
চারপাশ ঘোলাটে করে রাখে!
তুমি,
সেই ঘোলা তীক্ষ্ণ রহস্যময়তাকে আলিঙ্গন করে,
নিজেকে পোড়াও নিজের অজান্তেই!
জ্বালিয়ে রেখো……
জেনো,
দিবানিশী আরও একটি দিয়াও জ্বলে,
তোমার আলো ধার করে……….
রওনক হাকিম
চিবা,জাপান।
২৩/৮/২০১৬
বেষ্টনি
এই চার দেয়াল,
এইখানেই আমার সকাল দুপুর
সন্ধ্যা ঘনিয়ে রাত হয়।
তারপর মাস পেরিয়ে বছর আসে
এই দেয়ালের বেষ্টনিতেই।
এইটিই আমার ঘর।
ঘরটির উওরে একটি দরজা,
দক্ষিনে লোহার গারদ বিশিষ্ট একটি জানালা।
দরজাটি বাহির হতে তালাবদ্ধ থাকে।
তালার চাবিটি আমার অধিকারে নাই।
ঘরটি নিতান্ত ছোট নয়,
জীবনধারণের সব আয়োজন এখানে বিদ্যমান।
প্রতিদিন এই আয়োজন চালনায় কখন যে
সময় পেরিয়ে রাত হয়ে যায়……
তাই দরজার বাইরের জগতটিকে
দেখার ফুরসত নেই।
এই ঘরের একমাএ আলোর উৎস
ছোট্ট জানালা।
লোহার গারদ থাকায় জানালাটির
কপাট খোলাই ছিলো,
ইদানীং তাও বন্ধ থাকে…….
মাঝে কিযে হলো,
জানালার বাইরের দূরের
সবুজ পাহাড় আর নীল আকাশের মেঘপুঞ্জ,
পাখীদের উড়ন্ত ডানা, নিশি তারার মেলা,
আমায় শীষদিয়ে ডাকতো…..!
বদ্ধ দরজাটিকে তখন বড় নিষ্ঠুর মনে হতো।
এমন যেদিন হতো,
সেদিন সময়ের কাজ সময়ে ফুরাতোনা!
কতকি যে ভুলে ভরা কান্ড ঘটে যেতো অযাচিতে!
একদিনের কথা,
জানালার বাইরে প্রচন্ড ঝড়ের তান্ডব,
সুন্দর আমার, কি অসম্ভব অগোছালো,রুক্ষ!
আমি খোলা কপাট হতে তার বেপরোয়া রুদ্ররূপ দেখছি!
শুধু প্রহর গুনছি তার শান্ত হওয়ার।
একসময় সে দুর্বল হলো,
অভিমান নিয়ে চুপ হলো।
ফিরে তাকিয়ে দেখি,
ঘরের চারটি দেয়াল আর
বদ্ধ দরজাটি ব্যতীত যত্নে সাজানো সব তছনছ,
চেনা জগতটি আমার সম্পূর্ণ অচেনা!
অবুঝ দরজার পাশে,কপাট ধরে
সারারাত আমার পেরিয়ে গেলো……
সম্বিৎ ফিরে পেলাম,
ভোরের আবছায়া আলোর রশ্মিতে।
সে যাদুকরী আলো
পুরোপুরি আমার ঘরে ফুটে উঠার আগেই,
নিপুণ হাতে, খুব শক্ত করে,
প্রথম এবং শেষবারের মতো
জানালার কপাট দুটি
বন্ধ করে দিলাম।।
এই ঘরে এখন সকাল দুপুর সন্ধ্যার
একটিই রঙ………