খাবার বেশি সিদ্ধ হয়ে গেলে বা বেশি ভাজলে তার খাদ্যগুণ নষ্ট হয়ে যায়। আর বেশি ভাজা খাবারে টক্সিন থাকে। টক্সিনযুক্ত এসব খাবার শরীরে প্রবেশ করলে বিপাক প্রক্রিয়া অলস হয়ে পড়ে। ফলে বদহজম হতে পারে। আধসিদ্ধ খাবার ও প্রচুর পরিমাণ সালাদের সঙ্গে খান মৌসুমি ফলমূল
প্রতিদিনই খাদ্য, পানীয় ও দূষণ নানা উপায়ে আমাদের শরীরে প্রবেশ করছে টক্সিন। এটি শরীরের পক্ষে খুবই ক্ষতিকারক। টক্সিনের মাত্রা বেড়ে গেলে স্বাস্থ্যহানি হতে পারে। দুঃখজনক, আমাদের গ্রহণ করা খাবারের মধ্য দিয়েই শরীরে এ ভয়াবহ উপাদানটি প্রবেশ করছে। আমরা হয়তো জানি না, আমাদের পছন্দের খাবারগুলোর মধ্যেই লুকিয়ে আছে টক্সিক উপাদান।
যেমন— কফিতে রয়েছে ক্যাফেইন। অতিরিক্ত ক্যাফেইন নেয়ার ফলে এড্রিনাল গ্রন্থির কার্যক্ষমতা কমে যায়, ফলে তা দুর্বল হয়ে পড়ে। আবার সকালের নাশতা হোয়াইট ব্রেডেও রয়েছে টক্সিক উপাদান, যা মাথাব্যথা, বদহজম, মুটিয়ে যাওয়া, বিষণ্নতাসহ ত্বকের অনেক ক্ষতি করে। অন্যদিকে যেকোনো সফট ড্রিংকেই টক্সিন থাকে, যা দাঁতের মাড়ি ও দাঁতের ক্ষতি করে। ভাজাপোড়া খাবারে যে পরিমাণ টক্সিন থাকে, তা পেটব্যথা ও ত্বকের ক্ষতি করে। তাই খাদ্যাভ্যাসের দিকে বিশেষ নজর দেয়া প্রয়োজন। বলা আছে এখানে—
ঈষদুষ্ণ লেবুজল: সকালে ঘুম থেকে উঠে ঈষৎ গরম পানিতে অর্ধেক লেবু চিপে সেই পানি পান করুন। এটা খাওয়ার ১৫-৩০ মিনিট পর নাশতা করুন। লেবুতে আছে ভিটামিন ‘সি’, পটাশিয়াম ও শালজাতীয় উপাদান, যা শরীরের এনজাইমকে সক্রিয় করে ও যকৃৎকে উদ্দীপ্ত করে। ফলে শরীর থেকে সহজেই টক্সিন বের হয়ে যায়। এছাড়া পানিতে অর্ধেক লেবু ও আধা চা চামচ ভিনেগার মিশিয়ে খান। শরীর থেকে টক্সিন দূর হয়ে যাবে।
স্টক: প্রতিদিন এক কাপ চিকেন বা বিফ স্টক শরীরের পক্ষে খুবই উপকারী। স্টকের সঙ্গে যোগ করতে পারেন গাজর, শাক, পেঁয়াজ, রসুন ইত্যাদি।
ডার্ক চকোলেট: ডার্ক চকোলেট টক্সিন দূর করতে খুব ভালো পারদর্শী। আপনি যদি ৭০ শতাংশ ডার্ক চকোলেট গ্রহণ করে থাকেন, তাহলে কোনো চিন্তা ছাড়াই তা বাড়িয়ে নিন ৮০ শতাংশে।
ঝাঁঝালো মসলা: আদা, দারচিনি, গোলমরিচ, জিরা ও হলুদ দিয়ে রান্না করা খাবার শরীরের বিষ দূর করে। তাই এসব মসলা সবসময়ই রান্নায় ব্যবহার করুন।
আধসিদ্ধ খাবার খান: খাবার বেশি সিদ্ধ হয়ে গেলে বা বেশি ভাজলে তার খাদ্যগুণ নষ্ট হয়ে যায়। আর বেশি ভাজা খাবারে টক্সিন থাকে। এসব খাবার শরীরে প্রবেশ করলে বিপাক প্রক্রিয়া অলস হয়ে পড়ে। ফলে বদহজম হতে পারে। আধসিদ্ধ খাবার ও প্রচুর পরিমাণ সালাদের সঙ্গে খান মৌসুমি ফলমূল।
ঔষধি উপাদান রুটিনে থাকুক: নিমপাতা ও চিরতার রস খেলে টক্সিন দূর হয় ও অন্যান্য সংক্রামক রোগ হতে রক্ষা পাওয়া যায়। আমলকী, হরীতকী ও বহেরা সারা রাত পানিতে ভিজিয়ে রাখুন। পরদিন সকালে সে পানি পান করুন।
চিনিকে না বলুন: চিনি হজমে সমস্যা তৈরি করে ও রক্তে শর্করার মাত্রা বাড়িয়ে দেয়। এক্ষেত্রে কৃত্রিম সুইটনারও ক্ষতিকারক।
যোগব্যায়াম: যোগব্যায়াম করুন। প্রতিদিন শরীর থেকে কিছুটা ঘাম ঝরান। এতে শরীরের পেশির সংকোচন ও প্রসারণের ফলে ঘামের মধ্য দিয়ে টক্সিন বেড়িয়ে যাবে। দৈনিক নিয়ম করে ৮-১০ মিনিট গভীরভাবে শ্বাস নিন ও ধীরে ধীরে দম ছাড়ুন।