ভারতের কুখ্যাত সন্ত্রাসী দাউদ ইব্রাহিম-এর বোন হাসিনা পার্কার-এর ভূমিকায় এবার দেখা যাবে শ্রদ্ধা কাপুরকে, ‘দ্য কুইন অফ মুম্বাই : হাসিনা’ সিনেমায়। সিনেমাটির ফার্স্ট লুক প্রকাশ পেয়েছে সম্প্রতি এবং সেখানে চিরচেনা ‘মিষ্টি মেয়ে’র খোলস ছেড়ে নতুন এক অবতারেই হাজির হয়েছেন শ্রদ্ধা। একপাশে দুবাই এবং আরেক পাশে মুম্বাইয়ের পটভূমির সামনে শ্রদ্ধাকে দেখা গেছে কালো ওড়না জড়ানো ক্রুর দৃষ্টির এক নারীর বেশে। মুখ থেকে মুছে ফেলেছেন হাসির রেখো; তার বদলে দেখা গেছে ইস্পাতের কাঠিন্য। কিন্তু কে এই হাসিনা পার্কার? দাউদ ইব্রাহিম-এর বোন হওয়াটাই কি তার একমাত্র পরিচয়? উত্তরটা জানা যায় হুসেন জাইদির ‘ডোঙরি টু দুবাই’ বইটিতে, যা রচিত হয়েছে ‘নাগপাড়ার গডমাদার’ হিসেবে খ্যাত এই নারীর আদ্যপান্ত নিয়ে।
ভাইয়ের মতো অপরাধজগতে হাসিনা জড়িয়ে পড়েন তার স্বামী ইব্রাহিম পার্কার খুন হওয়ার পর। ভগ্নিপতি হত্যার শোধ দাউদ পরে তুলেছিলেন কুখ্যাত জেজে হাসপাতাল শুটআউটের মাধ্যমে। আর তখন থেকেই স্বামীর মৃত্যুর শোক কাটিয়ে ভাইয়ের সহযোগী হয়ে যান হাসিনা। আশি এবং নব্বইয়ের দশকের মুম্বাইয়ে হাসিনাকে এক নামে চিনতেন সবাই। ইন্ডিয়ান এক্সপ্রেস-এর মতে ওই সময় অঘোষিতভাবে পাঁচ হাজার কোটি রুপি অর্থমূল্যের সম্পদের মালিক ছিলেন তিনি। দুবাইয়ে অবস্থানরত ভাইয়ের সমস্ত অবৈধ ব্যবসার দেখাশোনা মুম্বাইয়ে বসে করতেন হাসিনাই। মুম্বাইয়ের বস্তি পুনর্বাসন প্রকল্পেও হাসিনা পার্কারের ছিল বড় ভূমিকা। বস্তিবাসীদের তাদের জমি থেকে উচ্ছেদ করে তাতে সরকারি ভবন নির্মান খোদ সরকারি ঠিকাদারেরাই হাসিনার অনুমতি ছাড়া করতে পারতেন না।
এছাড়াও, মুম্বাইয়ের কোন কেবল অপারেটারের দখলে কোন এলাকা থাকবে- এসব বিষয়ও ঠিক করে দিতেন হাসিনাই। শুধু তাই নয় ভারতীয় সিনেমার বাইরের দেশে রপ্তানির অর্থ-আদান প্রদানও হতো তার হাত দিয়েই। এরকম একটি চরিত্রে অভিনয় করতে গিয়ে কিছুটা ঘাবড়ে যাবেন শ্রদ্ধা- এটাই স্বাভাবিক। ইন্ডিয়া টুডেকে তিনি বলেন, “আমি উচ্ছ্বসিত কিন্তু একইসঙ্গে চিন্তিতও। এখানে আমি ১৭ থেকে ৪৩ বছর বয়সী এক নারীর চরিত্রে অভিনয় করবো, সুতরাং চরিত্রটির বিকাশ পুরোপুরি নির্ভর করছে আমার উপরে। এটি কঠিন হবে। আশা করছি, আমি বিশ্বাসযোগ্য অভিনয় করতে পারবো।”
অপূর্ব লখিয়া নির্মীত সিনেমাটি মুক্তি পাবে চলতি বছরের ১৭ জুন। এতে দাউদ ইব্রাহিম-এর চরিত্রে অভিনয় করছেন শ্রদ্ধারই ভাই সিদ্ধান্ত কাপুর।