পঞ্চমবারের মতো সফল পারমানবিক বোমার পরীক্ষা চালানোর দাবি করেছে উত্তর কোরিয়া। দেশটির রাষ্ট্রীয় সংবাদ মাধ্যমে শুক্রবার বিষয়টি জানানো হয়। পরীক্ষা চালানোর ঘণ্টা খানেকের মধ্যেই বিষয়টি নিশ্চিত করে উত্তর কোরিয়া। বলা হয়, এই পরীক্ষার মাধ্যমে ক্ষেপণাস্ত্রের জন্য নতুন প্রযুক্তির পরমাণু অস্ত্র তৈরি করা সম্ভব হয়েছে। পরীক্ষার পরপরই অবশ্য পিয়ংইয়ং পরমাণু বোমার পরীক্ষা চালিয়েছে বলে সন্দেহের কথা জানায় দক্ষিণ কোরিয়া। দক্ষিণের সেনাবাহিনী জানায়, এরফলে পরমাণু ক্ষেপণাস্ত্র নির্মাণে সক্ষমতার দ্বারপ্রান্তে পৌঁছে গেল উত্তর।
সিউল বলছে, এবারই প্রথম উত্তর কোরিয়া সবচেয়ে বড় আকারের পরীক্ষা চালিয়েছে। তাদের আশঙ্কা, এরফলে উত্তর পরমাণু পরীক্ষায় বাস্তবেই একধাপ এগিয়ে গেল। দক্ষিণ কোরিয়ার প্রেসিডেন্ট পার্ক গিউন হাই উত্তরের জন্য একে আত্মঘাতি এবং অদূরদর্শী পদক্ষেপ বলে মন্তব্য করেছেন। এরফলে আন্তর্জাতিক সম্প্রদায় গভীর চ্যালেঞ্জের সম্মুখীন হলো বলেও জানান তিনি।
চীনের পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয় উত্তর কোরিয়ার এই পদক্ষেপের তীব্র নিন্দা জানিয়েছে। এক বিবৃতিতে বেইজিং জানায়, এই ধরনের পদক্ষেপ পরিহার না করলে এই অঞ্চলের পরিস্থিতি আরো খারাপের দিকে যাবে। জাপানও ঘটনার তীব্র নিন্দা জানিয়েছে। প্রধানমন্ত্রী শিন জো আবে বলেছেন, পিয়ং ইয়ংয়ের এই ধরণের পদক্ষেপ ক্ষমার অযোগ্য অপরাধ। আন্তর্জাতিক সম্প্রদায়কে কঠোরভাবে প্রতিবাদ করা উচিৎ বলেও তিনি মন্তব্য করেন। বলেন, উত্তর কোরিয়ার পরমাণু পরীক্ষা জাপানের নিরাপত্তা এবং শান্তির জন্য বিরাট হুমকি। যা আসলে এই অঞ্চলের শান্তিকেই বিনষ্ট করতে পারে।
পরমাণু পরীক্ষার পরপরই দক্ষিণ কোরিয়া এবং জাপানের শীর্ষনেতাদের সঙ্গে ফোনে কথা বলেন মার্কিন প্রেসিডেন্ট বারাক ওবামা। এসময় তিনি এশিয়াসহ গোটা বিশ্বের মিত্রপক্ষের নিরাপত্তা নিশ্চিতের বিষয়ে যুক্তরাষ্ট্রের অঙ্গীকারের কথা পুনঃব্যক্ত করেন। এদিকে, উত্তরের পারমাণবিক বোমার পরীক্ষার ফলে ৫.৩ মাত্রার ভূকম্পন অনুভূত হয় বলে জানায় দক্ষিণ কোরিয়া। শুক্রবার উত্তর কোরিয়ার জাতীয় দিবস। সাধারণত এ ধরনের বিশেষ দিনকেই নিজেদের সামরিক শক্তি প্রদর্শনের জন্য বেছে নেয় দেশটি।
পারমাণবিক বোমা বা আন্তমহাদেশীয় ক্ষেপণাস্ত্রের মতো মারণাস্ত্র পরীক্ষার ওপর জাতিসংঘের নিষেধাজ্ঞা থাকলেও গত ৬ জানুয়ারি চতুর্থ পারমাণবিক বোমার পরীক্ষা চালায় উত্তর কোরিয়া। এর আগে ২০০৬, ০৯ ও ১৩ সালেও দেশটি পরমাণু অস্ত্রের পরীক্ষা চালিয়েছিল।