ব্যক্তিগত ৩৫ রানের সময়ই আউট হতে পারতেন মুরালি বিজয়। কিন্তু মেহেদী হাসান মিরাজের ব্যর্থতায় অবিশ্বাস্য ভাবে সহজ রান আউট থেকে বেঁচে গেলেন। সেই লাইফ লাইনটা কাজে লাগিয়ে ভারতীয় ওপেনার কিনা তুলে নিলেন সেঞ্চুরি! কিন্তু সেই সেঞ্চুরিটাকে আরো বড় হতে দেননি স্পিনার তাইজুল ইসলাম। অধিনায়ক বিরাট কোহলির সাথে বিজয়ের জুটিটাও সেভাবে জমাট বাঁধতে দেননি। তাইজুলের বলে বোল্ড হয়ে ফেরার সময় বিজয়ের রান ১০৮। বৃহস্পতিবার হায়দ্রাবাদ টেস্টের প্রথম দিনে টাইগারদের বিপক্ষে স্বাগতিক ভারত প্রথম ইনিংসের তৃতীয় উইকেট হারিয়েছে ২৩৪ রানের সময়। এই রিপোর্ট লেখার সময় কোহলির (৩৪) সাথে যোগ দিয়েছেন আজিঙ্কা রাহানে (০)। চলছে শেষ সেশনের খেলা। বিজয় ও চেতেশ্বর পুজারার জুটি জীবন পেয়ে ভয়ঙ্কর হয়ে উঠেছিল। দ্বিতীয় সেশনে সেটি ভাঙা গেছে। ওই দুই ঘণ্টায় একটি মাত্র উইকেট। মেহেদী যেন শাপমোচন করেছেন, তবে বড় দেরিতে। সেঞ্চুরি পথে থাকা পুজারাকে দেখিয়ে দিলেন সাজঘরের পথ। ৮৩ রানে ফিরে যান তিনি। অফ স্পিনারের বলে ক্যাচ গ্লাভসবন্দি করেন অধিনায়ক মুশফিকুর রহীম। ১৭৭ বলে ৯টি চারে ৮৩ রান করেন তিনি। পুজারা এবং বিজয় দুজন মিলে দ্বিতীয় উইকেট জুটিতে জমা করেন ১৭৮ রান। সর্বশেষ এই মাঠেই ২০১২-১৩ মৌসুমে অস্ট্রেলিয়ার বিপক্ষে দু’জন দেড়শর চেয়ে বেশি রানের জুটি গড়েন।
এর আগে হাসিমুখেই দুপুরের খাবারটা সারতে পারতেন বাংলাদেশের ক্রিকেটাররা। ইনিংসের প্রথম ওভারে লোকেশ রাহুলকে ফিরিয়ে তাসকিন আহমেদ তেমন ইঙ্গিতই দিয়েছিলেন। অফ স্টাম্পের বাইরের বলে কাভার ড্রাইভ করতে গিয়ে বোল্ড এই ওপেনার। ২ রান করে ফেরেন। তারপর বিজয় ও পুজারাও ধরতে পারতেন তার পথ। কিন্তু ক্যাচ ড্রপ আর রান আউট মিসে তা হয়নি। পুজারা হাফসেঞ্চুরি করতে খেলেন ১০৮ বল। তবে বিজয় ছিলেন আক্রমণাত্মক। ৮২ বলে তুলে নেন অর্ধশতক। সেঞ্চুরির কাছে গিয়ে মেহেদীর শিকার হলেন পুজারা। এই মাঠে আগের দুই টেস্টে পূজারা ১৮১.৫০ গড়ে করেন ৩৬৩ রান! অবশ্য ইনিংসের ১৫ ও নিজের দ্বিতীয় ওভারে উইকেট পেতে পারতেন মেহেদী হাসান মিরাজ। কিন্তু বিজয়ের দেয়া ক্যাচ স্লিপে দাঁড়ানো সাকিব হাতে জমাতে পারেন নি! এছাড়া পুজারার ক্যাচ ছেড়েছেন সাকিব! স্লিপে ক্যাচ ধরার চেষ্টায় হাতও ছোঁয়াতে পারেন নি তিনি। ১৮.৩ ওভারে আরেকটি সুযোগ হাতছাড়া। এবার বিজয়কে রান আউট করার সহজতম সুযোগটাও কাজে লাগাতে পারেন নি মেহেদী ও রাব্বি। দুই ব্যাটসম্যান এক প্রান্তে তারপরও রান আউট করা গেল না! রাব্বির থ্রো থেকে মেহেদী হাতে বল জমাতে না পারায় ভাঙতে পারেন নি উইকেট। রীতিমতো অবিশ্বাস্য মিস!
রাজিব গান্ধী স্টেডিয়ামে এদিন সকালে শুরু হওয়া ‘ঐতিহাসিক’ ম্যাচে অবশ্য টস ভাগ্য কথা বলেছে বিরাট কোহলির পক্ষে। ব্যাটিংয়ের সিদ্ধান্ত নিতে ভুল করেননি ভারত অধিনায়ক। কারণ বিশ্লেষকরা বলছেন- পিচ প্রথম দু’দিন ব্যাটসম্যানদের পক্ষেই কথা বলবে। ঘাসও আছে উইকেটে। তাই ভারতের তিন পেসার। বাংলাদেশর অবশ্য তিন স্পিনার। কোহলি প্রথমে বোলিং করতে দিলেন মুশফিকের দলকে। শুভাশিষ রায় নয়, হায়দ্রাবাদ টেস্টে বাংলাদেশের একাদশে জায়গা মিলেছে তাইজুল ইসলামের। রাজিব গান্ধী স্টেডিয়ামের উইকেটের কথা ভেবেই টিম ম্যানেজমেন্ট খেলাচ্ছে তিন স্পিনার। সাকিবের সাথে মেহেদী ও তাইজুল। পেস আক্রমণে তাসকিনের সঙ্গে কামরুল ইসলাম রাব্বী।
২০০০ সালে অভিষেকের পর এই প্রথম ভারতের মাটিতে টেস্ট খেলছে বাংলাদেশ।
এটি/ক্যাট