প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বলেছেন, ২০০৭ সালে আমি যখন গ্রেফতার হই বন্দিখানায় বসেই দেশের উন্নয়নের ছক তৈরি করি। মূল লক্ষ্য হলো গণতান্ত্রিক শাসনব্যবস্থা কায়েম করে তার মাধ্যমে আর্থসামাজিক উন্নতি করা।বৃহস্পতিবার প্রধানমন্ত্রীর কার্যালয়ে চলতি অর্থবছরের বার্ষিক কর্মসম্পাদন চুক্তি সই অনুষ্ঠানে তিনি এ সব কথা বলেন।
প্রধানমন্ত্রী বলেন, ২০০৭ সালে বন্দিখানায় বসে ভাবি, যদি ইলেকশন হয় এবং আমরা যদি ক্ষমতায় আসতে পারি তাহলে দেশকে কীভাবে এগিয়ে নিয়ে যাব, তার জন্য সুনির্দিষ্ট লক্ষ্য থাকতে হবে। কত সালের মধ্যে কী কী করব- এর সব ছক তৈরি করি নিজে বসে বসে।শেখ হাসিনা বলেন, আমি বন্দিখানায় বসে ভবিষ্যৎ বাংলাদেশের শিক্ষা, স্বাক্ষরতার হার, খাদ্য নিরাপত্তা, স্যানিটেশন, বিদ্যুৎ, গ্যাস, অবকাঠামো উন্নয়ন থেকে শুরু করে প্রতিটি ক্ষেত্রে সুনির্দিষ্ট লক্ষ্য স্থির করি। এ সব করি ছোট ছোট ছক করে।
তিনি বলেন, এর পরেই ২০০৮ সালে নির্বাচনের আগে আমাদের রূপকল্প ঘোষণা দেই। কিছু আশু করণীয়, কিছু স্বল্পমেয়াদি, কিছু দীর্ঘমেয়াদি। এভাবে আমাদের পরিকল্পনা নিতে হবে তারই ভিত্তিতে জনগণের জীবন মান উন্নত করতে পদক্ষেপ নিতে হবে।
প্রধানমন্ত্রী বলেন, জনগণের চাহিদাগুলো কী, কীভাবে তা প্রয়োগ করব সুনির্দিষ্টভাবে তার জন্য প্রস্তুত থাকা চাই। আমরা মাত্র ৫ বছরের জন্য নির্বাচিত হই। তাই ৫ বছরে জনগণকে কতটা সেবা দিতে পারব, কল্যাণে কতটা কাজ করতে পারব এবং কতটুকু তাদের জন্য করে দিয়ে যাব এটিই আমাদের সুনির্দিষ্ট লক্ষ্য। দেশকে কীভাবে এগিয়ে নিয়ে যেতে হবে তার একটি সুনির্দিষ্ট লক্ষ্য থাকে। কী কী করব। তার জন্য আমরা নীতিমালা তৈরি করি এবং সেভাবে বাস্তবায়ন করি।দেশের মানুষের সেবা করার জন্য সবসময় প্রস্তুত থাকি। সরকার গঠনের পর কী করব, কীভাবে মানুষের সেবা করব। মূল লক্ষ্য হল গণতান্ত্রিক শাসনব্যবস্থা কায়েম করে তার মাধ্যমে আর্থসামাজিক উন্নতি করা।
শেখ হাসিনা বলেন, ১৯৯৬ সালে আওয়ামী সরকার গঠন করে তখন কিছু পদক্ষেপ গ্রহণ করা হয় যাতে বাংলাদেশ খাদ্যে স্বয়ংসম্পূর্ণতা অর্জন করেছিল। তাছাড়া ছিল পানি, বিদ্যুৎসহ নানান সমস্যা। সেগুলো আমরা ধীরে ধীরে দূর করে সামনের দিকে এগিয়ে যাচ্ছিলাম। মানুষ একটু ভালো স্বপ্ন দেখতে শুরু করেছিল। বাংলাদেশের মানুষের দুর্ভাগ্য খুব বেশিদিন তাদের সুখ সয় না। এরপরে আমরা ২০০৮ এ আবার ক্ষমতায় আসতে পারি। এর আগের সময়টিতে সন্ত্রাস দুর্নীতিই একমাত্র ছিল লক্ষ্য। আমরা যে উন্নয়নে অগ্রযাত্রা শুরু করেছিলাম, যে অর্জনগুলো করেছিলাম তাও কিন্তু নস্যাত হতে থাকে।
প্রধানমন্ত্রী বলেন, ২০০৮ সালে জনগণের দাবির মুখে আমরা সরকার গঠন করি। এর পরে ৭টি বছর আমরা বিফলে যেতে দেইনি। আমাদের পরবর্তী কার্যক্রম পরিচালনার জন্য প্রস্তুতি ছিল। এ সব কাজে অর্থমন্ত্রী আবুল মাল আবদুল মুহিতকে সব থেকে খাটাই আমি। অর্থনৈতিক নীতিমালা, কী কী কাজ করব, ভবিষ্যতে কী কী করব- প্রশাসন থেকে শুরু করে সব স্তরে কী কী সংস্কার আমরা আনতে পারি, সকল কার্যক্রম আমরা কীভাবে গতিশীল করতে পারি- দিনরাত এমন একটি কমিটি কাজ করে যাচ্ছে।