২৮ বছরের মধ্যে গত বছরই সবচেয়ে শ্লথ প্রবৃদ্ধির মধ্য দিয়ে গেছে চীনের অর্থনীতি। বিশেষ করে বছরের শেষ প্রান্তিকে (অক্টোবর-ডিসেম্বর) দেশটির অর্থনীতি কিছুটা স্থবির হয়ে পড়ে। দেশটিতে গতকাল প্রকাশিত এক সরকারি পরিসংখ্যানে এ তথ্য উঠে আসে। বলা হচ্ছে, ঋণের বোঝা ও যুক্তরাষ্ট্রের সঙ্গে বাণিজ্যযুদ্ধের কারণে দেশটির অর্থনীতি এ সময় বেশ বাজে অবস্থা পার করেছে। খবর এএফপি।
চীনের ন্যাশনাল ব্যুরো অব স্ট্যাটিস্টিকস (এনবিএস) জানায়, গত বছর দেশটির জিডিপি প্রবৃদ্ধি হয়েছে ৬ দশমিক ৬ শতাংশ, যা ২৮ বছরে সর্বনিম্ন। তবে এ হার দেশটির সরকারি লক্ষ্য সাড়ে ৬ শতাংশের তুলনায় একটু বেশি। এর আগে ২০১৭ সালে ৬ দশমিক ৮ শতাংশ প্রবৃদ্ধির দেখা পেয়েছিল চীন।
অর্থনীতিবিদদের আশঙ্কা, সামনের দিনগুলোয় দেশটির অর্থনীতি আরো স্থবির হয়ে পড়তে পারে। এনবিএস কমিশনার নিং জিঝে বলেন, পরিবর্তনশীল অনেক বিষয় ও অনিশ্চয়তার কারণে আন্তর্জাতিক পরিস্থিতির গতিপ্রকৃতি নিয়ে সবাই এখন বেশ চিন্তিত।
গত বছর শীর্ষ বাণিজ্য অংশীদার যুক্তরাষ্ট্রের সঙ্গে চীনের সম্পর্কের ব্যাপক অবনতি ঘটে। বাণিজ্যে জোরপূর্বক ছাড় আদায়ের প্রয়াস হিসেবে মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প যুক্তরাষ্ট্রে চীন থেকে আমদানিকৃত পণ্যের প্রায় অর্ধেকের ওপর শুল্ক আরোপ করলে দুই দেশের মধ্যকার সম্পর্কে এ অবনমন ঘটে।
বিশ্লেষকরা বলছেন, চলমান অচলাবস্থার কারণে দেশটির খাতসংশ্লিষ্টদের আত্মবিশ্বাসেও এখন বেশ ঘাটতি দেখা দিয়েছে। অন্যদিকে চীনা শেয়ারবাজারে দেখা দিয়েছে বিশৃঙ্খলা। দুর্বল হয়ে এসেছে চীনা মুদ্রা ইউয়ান। এ পরিস্থিতির পেছনে ক্রমবর্ধমান ঋণ, আর্থিক ঝুঁকি ও পরিবেশ দূষণ নিয়ন্ত্রণে সরকারের গৃহীত নীতিমালার দুর্বলতাকেই এখন দায়ী করা হচ্ছে বেশি।
জাপানভিত্তিক আর্থিক সেবা প্রতিষ্ঠান নমুরার চীন-বিষয়ক অর্থনীতিবিদ লু তিং বলেন, যেভাবে ধারণা করা হয়েছিল, চতুর্থ প্রান্তিকে চীনের প্রবৃদ্ধি ঠিক সেভাবেই শ্লথ হয়ে এসেছে। কিন্তু এখনো সবচেয়ে খারাপ সময় আসাটা বাকি রয়েছে।
প্রিমিয়ার লে কেকিয়াং গত সপ্তাহে দেশটির ‘বিশাল বাজারের’ সুবিধা নিয়ে ভোগনির্ভর অর্থনীতির সপক্ষে বক্তব্য রাখেন। যদিও প্রকাশিত এ পরিসংখ্যানে একটি বিষয় স্পষ্ট, এক্ষেত্রে সামনের দিনগুলোয় বড় ধরনের জটিলতা অপেক্ষা করছে।