Breaking News

তিন রাষ্ট্রদূতের কথা

এই মুহূর্তে জাপান, নেপাল, থাইল্যান্ড ও মরক্কোতে রাষ্ট্রদূত হিসেবে কাজ করছেন চার নারী কূটনীতিক। স্বাধীনতার পর এই প্রথম একসঙ্গে এতজন নারী রাষ্ট্রদূতের দায়িত্ব পালন করছেন। আন্তর্জাতিক নারী দিবস উপলক্ষে তাঁদের তিনজনের সঙ্গে কথা বলেছেন রাহীদ এজাজ

জাপানে বাংলাদেশের রাষ্ট্রদূত
আন্তর্জাতিক সম্পর্ক বিভাগের ছাত্রী হিসেবে বৈশ্বিক পরিমণ্ডলের সঙ্গে রাবাব ফাতিমার পরিচয়টা হয়েছিল ক্লাসরুমে। ফলে বাইরের জগৎটাকে আরও ভালোভাবে জানার জন্য পেশা হিসেবে কূটনীতিকের কাজটা কেমন, সেই ভাবনার শুরু তখন থেকেই। বিশেষ করে কাজটা করতে গিয়ে আন্তর্জাতিক পরিমণ্ডলে বাংলাদেশকে তুলে ধরা, দেশের জন্য অবদান রাখা—এ থেকেই কূটনৈতিক পরিমণ্ডলে প্রবেশ। নিজের এই ভাবনা আর প্রস্তুতির পেছনে বাবার অনুপ্রেরণা তাঁর কূটনীতিক হয়ে ওঠার ক্ষেত্রে বড় অনুপ্রেরণা ছিল।

5b8ab45f1ba4f81ef8db10f6b23551f9-58bf12980181d

রাবাব ফাতিমা
জাপানে বাংলাদেশের রাষ্ট্রদূত

আজ থেকে ২৭ বছর আগে রাবাব ফাতিমার পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ে যোগ দেওয়ার আগে মাত্র চারজন নারী কূটনীতিক হিসেবে যোগ দিয়েছিলেন। বুঝতেই পারছেন কূটনীতিকের পেশাটা তখন খুব প্রচলিত কোনো পেশা ছিল না। নিজেকে বিকশিত করার জন্য চমৎকার সহকর্মী, জ্যেষ্ঠ কর্মকর্তা ও শিক্ষকদের পেয়েছিলেন। বললেন, ‘এদিক থেকে আমি সৌভাগ্যবান। কাজের ক্ষেত্রে সব সময় পরিবার আমার পাশে থেকেছে। ফলে যখনই কোনো চ্যালেঞ্জের মুখে পড়েছি, তা অতিক্রম করা সহজ হয়েছে। আমার স্বামীও একজন কূটনীতিক। তাঁকে পাশে না পেলে আমার এতটা পথ পাড়ি দেওয়া হতো না। মেয়ে নওরীনের কথা না বললেই নয়। অনেক সময় মায়ের কাছ থেকে দূরে থেকে তাকে বড় হতে হয়েছে। এ নিয়ে তাকে কখনো অনুযোগ করতে শুনিনি; বরং খুব ব্যস্ত দুই বাবা-মায়ের কারণে আরও বেশি স্বাবলম্বী হয়ে বড় হয়েছে আমাদের নওরীন।’

পেশাজীবনের শুরুর একটা ঘটনা বলছিলেন রাবাব ফাতিমা, ‘যেহেতু আমাদের পেশাটা অন্য পেশার চেয়ে আলাদা, এখানে টিকে থাকতে হলে শক্ত হতে হবে, প্রত্যয়টাও জোরালো হতে হবে। চাকরির শুরুর দিকে ঢাকায় মন্ত্রী পর্যায়ের বৈঠক হচ্ছিল। আমাকে ওই বৈঠকের সময় মন্ত্রীদের স্ত্রীদের হোস্ট অফিসারের দায়িত্ব দেওয়া হলো। আমি আমার জ্যেষ্ঠ কর্মকর্তার কাছে গিয়ে ওই সিদ্ধান্তের প্রতিবাদ জানালাম। আমার সাফ কথা, অফিসার হিসেবে পুরুষ সহকর্মীদের মতো আমিও মন্ত্রীর হোস্ট অফিসার হওয়ার যোগ্য। নারী মনে করে আমার প্রতি কোনো ধরনের বৈষম্য করা হলে এই পেশায় থাকব কি না সেটা আমাকে ভাবতে হবে। এটা বলার পর দাপ্তরিক আদেশ বাতিল হলো। শেষ পর্যন্ত আমি মন্ত্রীর হোস্ট অফিসারের দায়িত্ব পেলাম। এরপর থেকে আমাকে আর কখনো পেছন ফিরে তাকাতে হয়নি।’

কমনওয়েলথ সচিবালয় ও আইওএমে কাজ করাটা জীবনের এবং কাজের প্রতি দৃষ্টিভঙ্গি পরিবর্তনে সহায়ক হয়েছে রাবাব ফাতিমার।

প্রায় তিন দশকের অভিজ্ঞতায় রাবাব ফাতিমার মনে রাখার মতো অনেকগুলো ঘটনা আছে। তবে ২০১১ সালে লিবিয়া থেকে ৩৬ হাজারের বেশি বাংলাদেশিকে ফিরিয়ে আনার স্মৃতি একেবারেই আলাদা। তিনি বলেন, ‘ওই সময় আমি ঢাকায় আন্তর্জাতিক অভিবাসন সংস্থার (আইওএম) আঞ্চলিক প্রতিনিধি হিসেবে কাজ করছি। হঠাৎ করে লিবিয়ায় সংঘাত শুরু হলে বাংলাদেশের বিপুলসংখ্যক লোক আটকা পড়ে যান। প্রাণের ভয়ে অনেকে এখানে-সেখানে পালিয়ে বেড়াতে শুরু করেছিলেন। সরকারের অনুরোধের পর আটকে পড়া লোকজনকে ফিরিয়ে আনার দায়িত্ব পড়ে আইওএমের ওপর। বিপুলসংখ্যক অভিবাসীকে আমরা মাত্র ছয় সপ্তাহের মধ্যে দেশে ফিরিয়ে এনেছিলাম। ওই সময় প্রধানমন্ত্রীর নেতৃত্বে বাংলাদেশ সরকারের ব্যাপক সমর্থন এবং আইওএমের একদল চমৎকার সহকর্মীর জন্য আমরা ওই কাজে সফল হয়েছিলাম। এখন পর্যন্ত আমি এটিকে আমার বিশেষ এক অ্যাসাইনমেন্ট হিসেবে বিবেচনা করি। প্রাণের ভয়ে অসহায়ভাবে পালাতে থাকা লোকজনের জন্য মানবিক সাহায্য নিশ্চিত করাটা সত্যি দুরূহ। যেসব লোক তাঁদের পরিবারের ভাগ্য বদলের জন্য জীবনকে হাতের মুঠোয় নিয়ে অজানার পথে পা বাড়িয়েছেন, তাঁদের পাশে দাঁড়াতে পারাটা আমাদের জন্য কম গর্বের নয়।’

রাবাব ফাতিমা
যুক্তরাষ্ট্রের টাফট বিশ্ববিদ্যালয়ের ফ্লেচার স্কুল অব ল অ্যান্ড ডিপ্লোমেসি থেকে আন্তর্জাতিক সম্পর্ক ও কূটনীতিতে স্নাতকোত্তর ডিগ্রি অর্জন করেন। তিনি নিউইয়র্ক, জেনেভা, বেইজিং ও কলকাতায় বাংলাদেশ মিশনে বিভিন্ন পদে দায়িত্ব পালন করেছেন। এ ছাড়া তিনি লিয়েনে ও লন্ডনে কমনওয়েলথ সচিবালয়ে এবং ঢাকা ও ব্যাংককে আন্তর্জাতিক অভিবাসন সংস্থায় (আইওএম) কাজ করেছেন। ২০১৬ সালের ফেব্রুয়ারি মাসে জাপানে বাংলাদেশের রাষ্ট্রদূত হিসেবে নিয়োগ পান।

নেপালে বাংলাদেশের রাষ্ট্রদূত
‘খুব আটঘাট বেঁধে এবং অনেক আগে থেকেই কূটনীতিক হওয়ার প্রস্তুতি নিয়ে আসা হয়নি এই পেশায়। কারণ, বাংলাদেশ প্রকৌশল বিশ্ববিদ্যালয় (বুয়েট) থেকে স্থাপত্যে স্নাতক করলেও বাবার ইচ্ছে ছিল, সরকারি চাকরিতে যোগ দেওয়ার জন্য। বিশেষ করে, কূটনীতিক নয় কেন! বাবার ইচ্ছের সপক্ষে স্বজনেরাও বলতেন, পরীক্ষাটা দিয়েই দেখো। তাই বিসিএস দিতে গিয়ে পছন্দের তালিকায় পররাষ্ট্র ক্যাডারটা রাখলাম। পরীক্ষা দিলাম। সব কটি ধাপ পার করে শেষ পর্যন্ত যোগ দিলাম পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ে। দীর্ঘ দুই যুগ পার করে, পেছনে তাকালে বুঝতে পারি সেদিন বাবার অনুপ্রেরণা না পেলে আজ এখানে আসা হতো না। তিনি খুব করে চাইতেন, আর আমি ভেবেছি, উনি যখন চাইছেন, ঠিক আছে চেষ্টা করে দেখি। এভাবেই আমার কূটনীতিক হওয়ার শুরু। সত্যি বলতে কি, বাবা-মা আর স্বামীর ২০০ ভাগ সমর্থন না পেলে এই পেশায় টিকে থাকাই আমার জন্য কঠিন ছিল। আমি ও আমার স্বামী দুজনকেই কাজ নিয়ে ব্যস্ত থাকতে হয়েছে। ফলে আমাদের ছেলের দেখভালের দায়িত্বটা কাঁধে নিয়েছিলেন মা। তাকে সাহায্য করতেন বাবা। মা আর বাবা আমাদের ছেলেকে এমনভাবে দেখাশোনা করতেন, ওকে নিয়ে আমার ভাবতে হয়নি।’ বললেন মাশফি বিনতে শামস।

ee409bcf4ca5fc77ec8d20317e84da1d-58bf12980a6eb

মাশফি বিনতে শামস
নেপালে বাংলাদেশের রাষ্ট্রদূত

বিদেশে প্রথম বদলি ১৯৯৫ সালে, রোমে। পেশাগত কারণে সঙ্গে স্বামী ঢাকা ছেড়ে যেতে পারেননি। ঢাকা-রোম আসা-যাওয়া করতেন মাশফি বিনতে শামস। বাবা-মা আর ছেলেকে নিয়ে ইতালিতে যান। চাকরির পাঁচ বছরের মাথায়, ছোট বাচ্চাকে নিয়ে দূরদেশে কাজ করতে যাওয়াটা কত কঠিন ছিল! কিন্তু শুরু থেকে আজ পর্যন্ত বাবা-মা আর স্বামীর সহযোগিতা, দায়িত্বশীলতা ও সমর্থন পেয়ে এসেছেন, তা না হলে এটুকু পথ আসা হতো না তাঁর।

একথাও ঠিক, পরিবারের পাশাপাশি বন্ধু ও সহকর্মীদের সহযোগিতা এবং সমর্থনও সব সময় অনুপ্রেরণা হিসেবে কাজ করেছে। তবে চ্যালেঞ্জ যে একেবারে ছিল না, তা কিন্তু নয়। মাশফি বিনতে শামস বললেন, ‘সত্যি বলতে কি, ২৬ বছর আগে তাকিয়ে দেখলে মনে পড়ে, আজ যেমন কূটনীতিক হিসেবে অনেকেই আসছেন, ওই সময় সংখ্যাটা ছিল অনেক কম। আমি যখন পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ে যোগ দিই, তার আগে মাত্র চারজন নারী কূটনীতিক হিসেবে কাজ করছিলেন। আর পাঁচটা পেশার মত এখানেও একটু জ্যেষ্ঠ সহকর্মীদের আমাদের নিয়ে একধরনের সংশয়বাদী দৃষ্টিভঙ্গি ছিল। ভাবত, কাজটা ওরা কীভাবে করবে! এ তো ওদের কাজ নয়। তাদের ওই দৃষ্টিভঙ্গির কারণে আমাকে বেশি পরিশ্রম করতে হয়েছে। কারণ, একজন পুরুষ সহকর্মীর চেয়ে আমি যে কোনো অংশে কম নয়, সেটা প্রমাণের চেষ্টা ছিল নিরন্তর।’

মাশফি বিনতে শামসের চাকরির বড় সময় কেটেছে দক্ষিণ এশিয়াকে কেন্দ্র করে। আরও স্পষ্ট করে বললে, ভারত। বললেন, ‘ঢাকায় পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ে পরিচালক হিসেবে কাজ করে দিল্লি হাইকমিশনে একাধিক দায়িত্ব পালনের পর ঢাকায় ফিরে দক্ষিণ এশিয়ার মহাপরিচালক হিসেবে কাজ করি। এক দশকেরও বেশি সময়জুড়ে প্রতিবেশী দেশের সম্পর্কের প্রক্রিয়ার সঙ্গে যুক্ত থাকার কারণে ভারতের সঙ্গে ঐতিহাসিক স্থলসীমান্ত চুক্তি বাস্তবায়নে নিবিড়ভাবে কাজ করার সুযোগ পেয়েছি। এদিক থেকে নিজেকে সৌভাগ্যবানই মনে করি। সিসিল রেডক্লিফের খেয়ালের বলি হয়ে দুই দেশের সীমান্ত এলাকার হাজার হাজার লোককে কয়েক প্রজন্ম ধরে মানচিত্রের বাইরের মানুষের পরিচয় নিয়ে বাঁচতে হয়েছিল। দীর্ঘ ছয় দশকের এই মানবিক সংকটের সমাধানে যুক্ত থাকতে পারা আমার জন্য যথেষ্ট গর্বের।’

নেপালে ভূমিকম্পের সময় চারপাশের পরিস্থিতি ছিল ভয়াবহ। মাশফি বিনতে শামস বলেন, ‘এই অবস্থায় যাঁরা দূতাবাসে এসেছেন, তাঁদের তো সাহায্য করেছি। এর পাশাপাশি সহকর্মীদের নিয়ে খুঁজে খুঁজে বাংলাদেশের লোকজনকে সাহায্য করেছি। নেপালের লোকজনের পাশে দাঁড়িয়েছি। ভূমিকম্পের পর বাংলাদেশ ও বাংলাদেশ দূতাবাসের ভূমিকা নেপাল ও নেপালে কর্মরত বিভিন্ন দেশের লোকজন বিশেষভাবে বলেন। কর্মজীবনে এটি আমার এক বিরল অভিজ্ঞতা।’

মাশফি বিনতে শামস
বুয়েট থেকে স্থাপত্যে স্নাতক ও যুক্তরাজে৵র লিডস বিশ্ববিদ্যালয় থেকে স্নাতকোত্তর ডিগ্রি অর্জন করেন। তিনি ইতালি ও ব্যাংককে বাংলাদেশ দূতাবাস এবং দিল্লিতে বাংলাদেশ হাইকমিশনে বিভিন্ন পদে দায়িত্ব পালন করেছেন। ২০১৩ সালের মে মাসে নেপালে বাংলাদেশের রাষ্ট্রদূত হিসেবে নিয়োগ পান।
থাইল্যান্ডে বাংলাদেশের রাষ্ট্রদূত
বুয়েট থেকে কেমিক্যাল ইঞ্জিনিয়ারিংয়ে স্নাতক ডিগ্রি অর্জনের পর বিসিআইসিতে প্রকৌশলী হিসেবে কর্মজীবন শুরু করেন সাঈদা মুনা তাসনিম। কাজ করতে করতে তাঁর মনে হলো, এমন কোনো পেশা বেছে নেওয়া যায়, যাতে দেশের সেবা করা যায়। বৈশ্বিক পরিমণ্ডলে বাংলাদেশকে তুলে ধরার বিষয়টি ভাবনায় ছিল। বাবা সরকারি চাকরি করতেন। নিজের ভাবনা নিয়ে আলাপ করলেন বাবার সঙ্গে। তিনি উৎসাহিত করলেন। তিন বছর পর বিসিআইসির চাকরি ছেড়ে যোগ দিলেন পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ে। সময়ের হিসাবে ২৩ বছরের অভিজ্ঞতার পর রাষ্ট্রদূত সাঈদা মুনা তাসনিমের মনে হয়, নানা রকম চ্যালেঞ্জ অতিক্রম করে লাল-সবুজের পতাকা উঁচিয়ে ধরার সিদ্ধান্তটা সঠিক ছিল।

ae3754b8de85d0fc4558e2a80dd2e2ba-58bf129805065

সাঈদা মুনা তাসনিম
থাইল্যান্ডে বাংলাদেশের রাষ্ট্রদূত

সাঈদা মুনা তাসনিম বলছিলেন, ‘আমি যখন পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ে যোগ দিই, তখন মাত্র ছয়জন নারী সেখানে কাজ করছেন। আনুপাতিক হারে তা মোট কর্মকর্তার মাত্র ৩ শতাংশ। অথচ এখানে কাজ করতে গিয়ে আমাদের বাবা-মা, স্বামী ও সন্তানদের কাছ থেকে অনেকটা সময় দূরে থাকতে হয়। ফলে কাজ ও পরিবারকে সময় দেওয়ার মাঝে ভারসাম্য রাখাটা খুব কঠিন। তাই পরিবারের জোরালো সমর্থন ও ত্যাগ ছাড়া আমাদের কাজ করা প্রায় অসম্ভব। কাজ করতে গিয়ে কখনো আমার মনে হয়নি, আমাকে নারী হিসেবে দেখা হচ্ছে; বরং আমার মেধা, কঠোর পরিশ্রম ও পেশার প্রতি অঙ্গীকার নিজের অবস্থান তৈরিতে কাজ করেছে। দুই দশকের বেশি সময়জুড়ে বিভিন্ন পররাষ্ট্রসচিব ও জ্যেষ্ঠ সহকর্মীরা আমার এগিয়ে চলায় পাথেয় হয়েছেন। প্রধানমন্ত্রীর প্রতি আমি বিশেষভাবে কৃতজ্ঞ। কারণ, তিনি আমাকে রাষ্ট্রদূত হিসেবে কাজ করার সুযোগ দিয়েছেন।’
২০১৪ ও ২০১৫ সালে বঙ্গোপসাগরে জাহাজে করে মানব পাচার এই অঞ্চলের জন্য বড় ধরনের মানবিক সংকট তৈরি করেছিল। এর জের ধরে ২০১৫ ও ২০১৬ সালে থাইল্যান্ডের বন্দিদশা থেকে প্রায় ১ হাজার ৬০০ বাংলাদেশিকে মুক্ত করে দেশে ফেরত পাঠানো হয়। এদের সবাই মানব পাচারের শিকার হয়েছিলেন। ভাগ্যবিড়ম্বিত এসব লোককে তাদের আপনজনের কাছে ফেরত পাঠানোটাই বড় পাওয়া। বললেন সাঈদা মুনা তাসনিম।

একই ধরনের আনন্দ পেয়েছিলেন তিনি ১৯৯৭ সালে দুই সপ্তাহের জন্য কুয়ালালামপুরে কাজ করতে গিয়ে। ওই সময় মালয়েশিয়ার সরকার সাধারণ ক্ষমা ঘোষণা করলে প্রায় দেড় লাখ লোককে পাসপোর্ট করে দিতে হয়েছিল। ‘এভাবে দুঃসময়ে দেশের মানুষের পাশে দাঁড়ানোর পর মনে হয়, ২৪ বছর আগে এদের কথা ভেবেই তো কূটনীতিকের পেশা বেছে নিয়েছিলাম।’

সাঈদা মুনা তাসনিম
বুয়েট থেকে কেমিক্যাল ইঞ্জিনিয়ারিংয়ে স্নাতক ও যুক্তরাজ্যর লন্ডন বিশ্ববিদ্যালয় থেকে জনকূটনীতি ও পরিকল্পনায় স্নাতকোত্তর ডিগ্রি অর্জন করেন। নিউইয়র্ক ও যুক্তরাজে৵ বাংলাদেশ মিশনে বিভিন্ন পদে কাজ করেছেন। ২০১৪ সালের নভেম্বর মাসে থাইল্যান্ডে বাংলাদেশের রাষ্ট্রদূত হিসেবে নিয়োগ পান।

তথ্যসূত্র ও ছবি: প্রথম আলো ডট কম

About admin

Check Also

১৫ই আগষ্ট আন্তর্জাতিক মহাকাশ স্টেশনের উদ্দেশ্যে যাত্রা করবেন জাপানি নভোচারী ফুরুকাওয়া

জাপানের নভোচারী ফুরুকাওয়া সাতোশির দ্রুত হলে ১৫ই আগষ্ট আন্তর্জাতিক মহাকাশ স্টেশনে দ্বিতীয় ভ্রমণ নির্ধারণ করা …

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *