রহমান মনি: টোকিও বৈশাখী মেলা জাপান প্রবাসীদের প্রাণের মেলা। প্রায় ১২ হাজার প্রবাসী জাপানে বসবাস করেন এবং প্রায় ৩-৪ হাজার প্রবাসী বাংলাদেশী এই মেলায় উপস্থিত হয়ে আনন্দে মেতে ওঠেন প্রতি বছর। মেলার ভিতরে কি হচ্ছে তাতে বিন্দুমাত্র আগ্রহ তাদের নেই। ছিলও না। থাকারও কথা নয়।
কিন্তু এবারের বৈশাখী মেলার আয়োজন নিয়ে গত ২ এপ্রিল হিগাশি তাবাতার হলে যা ঘটে গেলো তাতে প্রবাসীরা তাজ্জব বনে গেছেন এবং অনেক অজানা তথ্য তারা জানতে পেরে কিছুটা ক্ষোভ প্রকাশও করেছেন অনেকেই। তাদের কথা হলো, টোকিও বৈশাখী মেলা বাংলাদেশীরা আয়োজন করে থাকে এবং বাংলাদেশের নববর্ষকে উপলক্ষ্য করে একটি সার্বজনীন আয়োজন। এখানে আয়োজক হিসেবে জেবিএস কেন কৃতিত্ব নিবে? জেবিএস যদি মাঠ নেয়ার ব্যবস্থা করে থাকে তাহলে মেলা কমিটির পক্ষ থেকে তাদেরকে ধন্যবাদ দেওয়াটা কি যথেষ্ট নয়?
যতােদূর জানা যায়, বৈশাখী মেলার পক্ষ থেকে সেটা করাও হয়। যেমন মাইকে কৃতজ্ঞতা স্বীকার করে ঘোষনা দেয়া, ড. ওৎসুবুকে সম্মান দেয়া, আপ্যায়ন করা, এমন কি জেবিএস এর একটি স্টল থাকে তার ভাড়া প্রদানও প্রবাসীরা-ই করে থাকে। তারপর আর কি চাই জেবিএস-এর?
প্রশ্ন ওঠেছে জেবিএস আসলে কে, কারা এর সদস্য? খোজ নিয়ে জানা যায় জাপান বাংলাদেশ সোসাইটি বা জেবিএস একটি এনপিও। ড. ওৎসুবু যার প্রধান। বাংলাদেশী হিসেবে একমাত্র ড. শেখ আলীমুজ্জামান এর সদস্য এবং বর্তমানে তার ছোট ভাই মোস্তফা আজিজ বাবুকে এর সদস্য হিসেবে প্রতিষ্ঠিত করার চেষ্টা করানো হচ্ছে। এই জেবিএস এর মাধ্যমেই টোকিও বৈশাখী মেলা আয়োজনের জন্য ইকেবুকুরো নিশিগুচি পার্কটি নেয়া হয়ে থাকে। অর্থাৎ অফিসিয়াল কাগজ জেবিএস করে থাকে। এর বাইরে আর কোন অবদান তাদের নেই। পক্ষানতরে জেবিএস কে বেনিফিট নেয়া হয় যেমন ফ্রি স্টল।
মেলার স্টল, স্পন্সার, ভলানটিয়ার সার্ভিস সব কিছুই প্রবাসীরা করে থাকে স্বত:স্ফুর্তভাবে।
২০১০ সালে জেবিএস আমাদের মহান শহীদ দিবসে অর্থাৎ ২১ ফেব্রুয়ারীতে শহীদ মিনার প্রাঙ্গনে শীতের পিঠা-পুলি উৎসবের আয়োজন করে প্রথমবারের মতো তাদের অভিলাষ জানান দেন। প্রবাসীদের প্রতিবাদের মুখে কয়েক বছর চুপ থাকলেও এবছর তারা টোকিও শহীদ মিনারে ফুলেল শ্রদ্ধা জানানো থেকে বিরত রাখার মতো দৃষ্টতা দেখায়।
ততদসত্বের কিছু সংখ্যক প্রবাসী কেবলমাত্র নামের স্বার্থে জেবিএস-এর এসকল কর্মকান্ডকে সমর্থন দিয়ে যাচ্ছে। যা গ্রহণ যোগ্য নয়, নিন্দনীয়ও বটে।
এমতাবস্থায় প্রবাসীদের অনুরোধ হচ্ছে, যেহেতু টােকিও বৈশাখী মেলা বাংলাদেশের কৃষি, ঐতিহ্য এবং সংস্কৃতি তাই প্রবাসীদের আয়োজনেই তা প্রতিবছর অনুষ্ঠিত হোক।
জাপান প্রবাসীরা যদি এতো অনুস্ঠান এতো কিছু আয়োজন করতে পারেন, বৈশাখী মেলা আয়োজনের কর্মযজ্ঞও নিজেরা করে থাকতে পারেন। তাহলে কেনো নিজেদের নামে তা নয়?
প্রবাসী নেতৃবৃন্দের কাছে দাবী, টোকিও বৈশাখী মেলা প্রবাসী বাংলাদেশ কমিউনিটির আয়োজনেই হবে এটাই আমাদের প্রত্যাশা।
রহমান মনি
সাপ্তাহিক (জাপান প্রতিনিধি)