এবারে সংবাদ বিশ্লেষণ। যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প তাঁর প্রথম বিদেশ সফরের অংশ হিসেবে সোম এবং মঙ্গলবার ইসরায়েল এবং ফিলিস্তিনের অঞ্চলসমূহ পরিদর্শন করেছেন। আজকের সংবাদ বিশ্লেষণে আমরা কথা বলেছি জাপানের ন্যাশনাল ডিফেন্স একাডেমির প্রফেসর এমেরিটাস রিয়োজি তাতেইয়ামার সঙ্গে। তার সাক্ষাৎকারের মাধ্যমে জানার চেষ্টা করেছি মধ্যপ্রাচ্যের শান্তির সম্ভাবনা সম্পর্কে।
রিয়োজি তাতেইয়ামা বলেন, প্রেসিডেন্ট ট্রাম্প আলাদাভাবে ইসরায়েলের প্রধানমন্ত্রী বেনিয়ামিন নেতানিয়াহু এবং ফিলিস্তিন কর্তৃপক্ষের প্রেসিডেন্ট মাহমুদ আব্বাসের সঙ্গে বৈঠকে মিলিত হয়েছেন এবং ইসরায়েলি ও ফিলিস্তিনিদের মধ্যে শান্তি প্রতিষ্ঠার প্রয়োজনীয়তার ওপর গুরুত্বারোপ করেছেন।
এদিকে শান্তি আলোচনা প্রায় চার বছর ধরে স্থবির রয়েছে। তবে কিভাবে শান্তি আলোচনা আবার আরম্ভ করা হবে কিংবা শুরু হলে তা কিভাবে এগিয়ে নেয়া হবে সে সম্পর্কে মিস্টার ট্রাম্প আদৌ বিস্তারিত কিছু উল্লেখ করেননি।
ইসরায়েলে পৌঁছার আগে মিস্টার ট্রাম্প সৌদি আরব সফর করেন। সেখানে তিনি পরিষ্কারভাবে বলেন যে, ইরানকে বিচ্ছিন্ন করতে বিভিন্ন দেশের একটি জোট করার পরিকল্পনা করছেন তিনি। ইরান পার্শ্ববর্তী সিরিয়ার গৃহযুদ্ধে হস্তক্ষেপ করছে এবং প্রভাব বিস্তার বৃদ্ধি করছে; তাই ইসরায়েল ইরানের ব্যাপারে ক্রমবর্ধমান হারে সতর্ক হয়ে ওঠছে।
ইরানকে মোকাবেলার উদ্দেশ্যে সৌদি আরব এবং অন্যান্য উপসাগরীয় দেশের সঙ্গে সম্পর্ক স্বাভাবিক করার ব্যাপক প্রত্যাশা রয়েছে ইসরায়েলের কারণ তাদের সকলের জন্যই ইরানকে সাধারণ হুমকি হিসেবে দেখা হয়। ইসরায়েল মনে করে ইরান চরমপন্থী সংগঠনগুলো এবং তাদের সন্ত্রাসী কর্মকাণ্ডে সহায়তা দিয়ে আসছে। সুতরাং এই সাধারণ লক্ষ্যটি সামনে রেখে আরব দেশগুলোর সঙ্গে ইসরায়েলের একটি জোট গঠনের সম্ভাবনা রয়েছে।
তবে ইসরায়েল-ফিলিস্তিন শান্তি প্রক্রিয়ায় অগ্রগতি না হওয়া পর্যন্ত ইসরায়েলের সঙ্গে আরব দেশগুলোর সম্পর্ক উন্নয়নে বড় বাঁধা।
আরব দেশগুলোর কাছে পশ্চিম তীরে ইহুদি বসতি স্থাপন কর্মকাণ্ডের অর্থ হল তাদের বন্ধুপ্রতীম ফিলিস্তিনিদের ভূমি হাতছাড়া হয়ে যাওয়া।
আমি মনে করি ইসরায়েল যতক্ষণ পর্যন্ত এসব বসতি স্থাপন কর্মকাণ্ড বন্ধ না করবে ততক্ষণ পর্যন্ত আরব দেশগুলো ইসরায়েলের সঙ্গে সম্পর্ক স্বাভাবিক না করার বিষয় নিয়ে ভাবা অব্যাহত রাখবে।
সংবাদ মাধ্যম জানিয়েছে, ইসরায়েল অতি গোপনীয় তথ্য সরবরাহ করেছে যা রাশিয়ার কর্মকর্তাদের সঙ্গে মিস্টার ট্রাম্প ভাগাভাগি করেছেন বলে জানা গেছে। তবে ইসরায়েল আনুষ্ঠানিকভাবে এর ওপর কোনো মন্তব্য করেনি।
যাইহোক, সিরিয়া এবং ইরানের সঙ্গে রাশিয়ার ঘনিষ্ঠ সম্পর্ক রয়েছে এবং আমি মনে করি ইসরায়েলি গোয়েন্দা কর্মকর্তাদের মিস্টার ট্রাম্প সম্পর্কে তীব্র উদ্বেগ রয়েছে।
আবার আমি এটা মনে করিনা যে, এই ঘটনার কারণে ভবিষ্যতে ইসরায়েল এবং যুক্তরাষ্ট্রের মধ্যে তথ্য বিনিময় তাৎপর্যপূর্ণভাবে হ্রাস পাবে। তবে ইসরায়েল ট্রাম্প প্রশাসন বিশেষকরে হোয়াইট হাউজকে সংবেদনশীল তথ্য দেয়ার ক্ষেত্রে দ্বিধান্বিত হতে পারে।
এই ছিল আজকের সংবাদ বিশ্লেষণ। আজ আমরা কথা বললাম জাপানের ন্যাশনাল ডিফেন্স একাডেমির প্রফেসর এমেরিটাস রিয়োজি তাতেইয়ামার সঙ্গে।
সূত্র: এনএইচকে ওয়ার্ল্ড বাংলা