প্রেসিডেন্ট ট্রাম্প ক্ষমতায় আসার পর থেকে ওয়াশিংটন ও ইউরোপের মধ্যে বিভিন্ন বিষয় নিয়েই বিরোধ চলছে। তবে ইরান চুক্তি নিয়ে মতদ্বৈততা ছাড়িয়ে গেছে সবকিছুকে। ইরানের বিরুদ্ধে মার্কিন অর্থনৈতিক নিষেধাজ্ঞা পুনর্বহাল করেছেন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প। এ নিয়ে তীব্র আপত্তি দেখিয়েছে ইউরোপিয়ান ইউনিয়ন (ইইউ)। সংস্থাটির কিছু কর্মকর্তা এমনকি ট্রাম্পের পদক্ষেপকে ‘অবৈধ’ ও নিরাপত্তা পরিষদের প্রস্তাবনার সঙ্গে সাংঘর্ষিক বলেও আখ্যা দিয়েছেন। ইরানের ওপর মার্কিন নিষেধাজ্ঞা অকার্যকর করতে ও ইরান পারমাণবিক চুক্তি অক্ষুণ্ন রাখতে পদক্ষেপ বৃদ্ধি করারও অঙ্গিকার ব্যক্ত করেছে ইইউ। ইউরোপিয়ান ইউনিয়ন ও ইউরোপের তিন শক্তিধর দেশ জার্মানি, ফ্রান্স ও যুক্তরাজ্য ইরান পারমাণবিক চুক্তি অক্ষুণ্ন রাখতে জোর প্রচেষ্টা চালিয়ে যাচ্ছে। ফলে যুক্তরাষ্ট্র নিজের শক্তিশালী ন্যাটো মিত্রত্রয়ের সঙ্গে সরাসরি বিরোধে জড়িয়েছে। এর আগে মে মাসে ট্রাম্প এককভাবে পারমাণবিক চুক্তি থেকে যুক্তরাষ্ট্রকে প্রত্যাহার করেন। ইউরোপের তিন দেশ সহ চুক্তির অবশিষ্ট দুই আংশীদার রাশিয়া ও চীন বারবার চুক্তি অক্ষুণ্ন রাখতে স্ব-অঙ্গিকার ব্যক্ত করেছে। দেশগুলো বলছে, আন্তর্জাতিক আণবিক জ্বালানি সংস্থা বারবার পরিদর্শন করে জানিয়েছে ইরান চুক্তি মেনে চলছে। সোমবার রাত থেকে ইরানের ওপর মার্কিন নিষেধাজ্ঞা পুনর্বহাল হয়েছে। এই নিষেধাজ্ঞার মূল বিষয়বস্তু ইরানের তেল শিল্প, যেটি দেশটির অর্থনীতির প্রাণ। দেশটির জ্বালানি খাতের ওপর সামগ্রিক একটি নিষেধাজ্ঞা কার্যকর হবে নভেম্বর থেকে। এক বিবৃতিতে ট্রাম্প বলেছেন, এই নিষেধাজ্ঞা কঠোরভাবে বাস্তবায়ন করা হবে। তিনি নিষেধাজ্ঞা লঙ্ঘণকারীদের কঠোর পরিণতি বইতে হবে বলেও সতর্ক করেন।
মার্কিন নিষেধাজ্ঞার দ্বিতীয় স্তর ইউরোপের জন্য বিশেষভাবে উদ্বেগজনক ছিল। এই নিষেধাজ্ঞায় বলা আছে, শুধু মার্কিন প্রতিষ্ঠান নয়, যেসব বিদেশী কোম্পানি নিষেধাজ্ঞার অন্তর্ভূক্ত সংস্থা বা প্রতিষ্ঠানের সঙ্গে লেনদেন করবে, তারাও নিষেধাজ্ঞার আওতায় পড়বে। ইরানের সঙ্গে ব্যবসায়িক সম্পর্ক আছে যেসব ইউরোপিয়ান কোম্পানির তারাও এই নিষেধাজ্ঞার আওতায় পড়তে পারে বলে আশঙ্কা আছে ইইউর। এই পরিস্থিতি এড়াতে ইইউ পালটা আইন করে জানিয়েছে, এসব কোম্পানি মার্কিন নিষেধাজ্ঞার আওতামুক্ত থাকবে। মার্কিন নিষেধাজ্ঞা যখন থেকে কার্যকর হবে ঠিক একই সময়েই ইইউর পালটা এই সুরক্ষামূলক আইন কার্যকর হবে।
এক সংবাদ সম্মেলনে ইউরোপিয়ান কমিশনের জ্যেষ্ঠ কর্মকর্তারা দৃশ্যত মার্কিন প্রশাসনের বিরুদ্ধে আন্তর্জাতিক আইন লঙ্ঘণের অভিযোগ তুলেছেন। তারা বলছেন, ইইউর সুরক্ষামূলক আইনের মাধ্যমে যেসব ইউরোপিয়ান কোম্পানি ইরানের সঙ্গে ব্যবসা করছে, তারা মার্কিন নিষেধাজ্ঞার ফলে হওয়া ক্ষতি পুষিয়ে নিতে পারবে। এক্ষেত্রে তাদের আইনি লড়াইয়ের খরচ সহ তাদের ক্ষয়ক্ষতি দিতে বাধ্য থাকবে মার্কিন ব্যাংক ও আর্থিক প্রতিষ্ঠানগুলো, যাদের মাধ্যমে যুক্তরাষ্ট্র আর্থিক নিষেধাজ্ঞা কার্যকর করে থাকে।
Check Also
১৫ই আগষ্ট আন্তর্জাতিক মহাকাশ স্টেশনের উদ্দেশ্যে যাত্রা করবেন জাপানি নভোচারী ফুরুকাওয়া
জাপানের নভোচারী ফুরুকাওয়া সাতোশির দ্রুত হলে ১৫ই আগষ্ট আন্তর্জাতিক মহাকাশ স্টেশনে দ্বিতীয় ভ্রমণ নির্ধারণ করা …