প্রবীর বিকাশ সরকার // জাপানে দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধের পর ১৯৪৬-৪৮ সাল পর্যন্ত টোকিও আন্তর্জাতিক মিলিটারি ট্রাইব্যুনাল অনুষ্ঠিত হয়েছিল। বিশ্বব্যাপী ব্যাপক আলোড়ন সৃষ্টিকারী ঘটনা এটা। আজও তা যুদ্ধ ও মানবাধিকার সংক্রান্ত আলোচনায় প্রাসঙ্গিক। জাপানি লেখক ও গবেষকরা আজও এই বিষয়ে গবেষণা করে চলেছেন। প্রকাশিত হচ্ছে গ্রন্থাদি।
এই ট্রাইব্যুনালে বিশ্বের একাধিক দেশের সর্বমোট এগার জন বিচারপতি অংশগ্রহণ করেছিলেন। ব্রিটিশ উপনিবেশ ভারত থেকে ছিলেন বিচারপতি রাধাবিনোদ পাল (১৮৮৬-১৯৬৭)। তিনি এগার জন বিচারপতির মধ্যে ভিন্নমত পোষণ করে সুদীর্ঘ এক রায় প্রদান করেন। সেই রায়ে এই বিচারকে তিনি মেনে নেননি, ফলে যুদ্ধাপরাধী বলে যাঁরা অভিযুক্ত হয়েছিলেন তাঁরা তাঁর রায়ে খারিজ হয়ে যান তবে বাকী বিচারকদের বিচারে অপরাধীরা দোষী সাব্যস্ত হয়েছিলেন।
বিচারপতি রাধাবিনোদ পালের রায় সারাবিশ্বে তুমুল আলোড়ন তুলেছিল। সেই থেকে জাপানিরা এই বিশ্বমাপের বাঙালিকে সমীহ করে আসছেন। জাপানে দুটি বিখ্যাত জায়গায় তাঁর স্মৃতিফলক স্থাপিত হয়েছে একটি রাজধানী টোকিওর প্রসিদ্ধ ইয়াসুকুনি শিন্তোও মন্দির প্রাঙ্গণে অন্যটি প্রাচীন রাজধানী প্রাকৃতিক ভূস্বর্গ কিয়োতোর বিখ্যাত রিনজাই শিন্তোও ধর্মীয় মন্দিরসংলগ্ন পাহাড়ের মধ্যে। কিন্তু অধিকাংশ বাঙালি এই ইতিহাস জানে না বললেই চলে। উল্লেখ্য যে, তিনি ব্রিটিশ আমলে অবিভক্ত ভারতের নদীয়া জেলার সলিমপুর গ্রামে জন্মগ্রহণ করেছিলেন। বর্তমানে এই গ্রামটি বাংলাদেশের কুষ্টিয়া জেলায় অবস্থিত। শুধু তাই নয়, ভারতে বৃদ্ধিপ্রাপ্ত বিচারপতি পাল কর্মজীবন শুরু করেছিলেন ময়মনসিংহের আনন্দমোহন কলেজে গণিতের শিক্ষক হিসেবে। প্রায় এগার বছর তিনি শিক্ষকতার সঙ্গে যুক্ত ছিলেন। তারপরও ব্যস্ততার মধ্যে স্বগ্রামে যাওয়া-আসা করেছেন।
বিচারপতি রাধাবিনোদ পালের পর জাপানে ব্যাপক আলোড়ন তুলেছিলেন আরেক বিশ্বমাপের বাঙালি বাংলাদেশের স্থপতি বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবর রহমান (১৯২০-৭৫)। এছাড়া আরও তিনজন বাঙালি আছেন যাঁরা জাপানে অত্যন্ত শ্রদ্ধার পাত্র, যথাক্রমে বিশ্বকবি রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর (১৮৬১-১৯৪১), মহাবিপ্লবী রাসবিহারী বসু (১৮৮৬-১৯৪৫) এবং নেতাজি সুভাষচন্দ্র বসু (১৮৯৭-?)। জাপানে কবিগুরু এবং নেতাজিরও স্মারক ভাস্কর্য স্থাপিত আছে যথাক্রমে নাগানো-প্রিফেকচারের কারুইজাওয়া উপশহরে মাউন্ট আসামার পাদদেশে এবং টোকিওর রেনকোওজি বৌদ্ধমন্দিরের প্রাঙ্গণে।
উপরোক্ত চারজন বাঙালি কোনো না কোনোভাবে জাপানে স্মরণীয় আজও। কিন্তু বিস্মৃতপ্রায় বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের নাম। মূলত, পূর্বজ বাঙালির সঙ্গে জাপানের গভীর সম্পর্কের সূত্র ধরে স্বাধীনতা আন্দোলনের সময়েই জাপানে বাঙালিভক্ত বুদ্ধিজীবী এবং রাজনৈতিক মহলে শেখ মুজিবের নাম ও পরিচিতি ছড়িয়ে পড়তে শুরু করে। ১৯৬৮ সালেই শেখ মুজিবুর রহমানের বিরুদ্ধে আগরতলা ষড়যন্ত্র মামলার বিরুদ্ধে জাপানে কতিপয় জাপানি বিক্ষোভ প্রদর্শন করেছেন বলে জানা যায়। ইবারাকি-প্রিফেকচারস্থ ক্ষমতাসীন দল লিবারেল ডেমোক্রেটিক পার্টির বিশিষ্ট নেতা ইশিকাওয়া তামোন তাঁদের অন্যতম, তখন পঁচিশ বছরের তরুণ ছিলেন তিনি। প্রবীণ এই রাজনীতিবিদ আজও বঙ্গবন্ধুকে স্মরণ করেন। এরকম আরও একাধিক বিশিষ্ট জাপানি শেখ মুজিবভক্ত জাপানে ছিলেন বা আছেন যাঁদেরকে আমরা যথার্থভাবে মূল্যায়ন করতে পারিনি। তাঁদের সমর্থন এবং তৎপরতায় মহান মুক্তিযুদ্ধের সময় জাপানের রাজধানী টোকিওসহ অন্যান্য শহরে ব্যাপক সাড়া পাওয়া গিয়েছিল মানুষের। তাঁরা চাঁদা তুলেছেন, তহবিল গঠন করেছেন, ভারতের শরণার্থী শিবিরে ত্রাণ পাঠিয়েছেন, বাঙালির স্বাধীনতা অর্জনের প্রতি তো সহমর্মিতা জানিয়েছিলেনই। কারণ গত শতাব্দীর প্রথম থেকেই ভারতের স্বাধীনতার জন্য প্যান-এশিয়ানিস্ট জাপানিদের জোরালো সমর্থন ও সহযোগিতা সক্রিয় ছিল দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধ পর্যন্ত। সেই স্বাধীনতা আন্দোলনের বীজ রোপিত হয়েছিল প্রথমে বাংলা অঞ্চলেই সাম্রাজ্যবাদী শক্তি ব্রিটিশের বিরুদ্ধে। প্রভাবশালী স্বদেশি-বিপ্লবীদের অধিকাংশই ছিলেন পূর্ববঙ্গের। বাঙালি বিপ্লবী রাসবিহারী বসু জাপানে আশ্রয় গ্রহণ করেন সেই ১৯১৫ সালে। তিনি ছিলেন নেতাজির ভাবশিষ্য। তরুণকালেই নেতাজির ভাবশিষ্য ছিলেন বঙ্গবন্ধুও। ১৯৯৯ সালে এক সাক্ষাৎকারে জাপানের বিশিষ্ট সাংবাদিক, লেখক, গবেষক ও জাতীয়তাবাদী রাজনীতির অন্যতম গুরু তানাকা মাসাআকি (১৯১১-২০০৬) আমাকে বলেছিলেন, “শেখ মুজিবুর রহমান ছিলেন নেতাজি সুভাষ বসুর যোগ্য উত্তরসূরি।” উল্লেখ্য যে, ১৯৭২ সালে ঢাকায় বঙ্গবন্ধুকে জাপান সফরের আমন্ত্রণ জানাতে যে তিনজন সদস্য ঢাকায় গিয়েছিলেন জাপান সরকারের বার্তা নিয়ে তাঁদের অন্যতম ছিলেন এই তানাকা মাসাআকি। নেতৃত্ব দিয়েছিলেন বাঙালি জাতির পরম বন্ধু, বঙ্গবন্ধুর অবিসংবাদিত শুভাকাক্সক্ষী রাজনীতিবিদ ও প্রাক্তন মন্ত্রী হাওয়াকাওয়া তাকাশি (১৯১৬-৮২) এবং অন্য আরেকজন সদস্য ছিলেন রাজকীয় সেনাবাহিনীর প্রাক্তন জেনারেল ফুজিওয়ারা ইওয়াইচি (১৯০৮-১৯৮৬)। ফুজিওয়ারা ছিলেন নেতাজির ঘনিষ্ঠ সহযোগী ‘এফ কিকান’ তথা ‘ফুজিওয়ারা কিকান’ মিলিটারি ইন্টেলিজেন্স অপারেশন এর প্রধান। এই ঘটনায় এটা পরিষ্কার বোঝা যায় যে, বঙ্গবন্ধুকে জাপান সমর্থন দিয়েছিল মূলত পূর্বজ রাজনৈতিক সম্পর্কের ধারাবাহিকতা বজায় রাখার জন্যই। যে কারণে দেখতে পাচ্ছি, সদ্যস্বাধীন বাংলাদেশের অর্থনৈতিক উন্নয়নে জাপানের আগ্রহ ছিল স্বতঃস্ফূর্ত এবং ব্যাপক। সম্প্রতি কিছু মুদ্রিত দলিলপত্র এই সাক্ষ্যই বহন করছে। তার মধ্যে ‘বানগুরাদেশু নিউজ’ তথা ‘বাংলাদেশ নিউজ’ বুলেটিন অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ। এতে স্বাধীনতার পর জাপানের প্রথম শ্রেণীর অধিকাংশ বাণিজ্য প্রতিষ্ঠান বাংলাদেশের সার্বিক উন্নয়নের অংশীদার হওয়ার আগ্রহে ব্যাপক পরিকল্পনা গ্রহণ করেছিল। কিন্তু চরম দুর্ভাগ্য যে, পঁচাত্তরের নির্মম ঘটনা সব পরিকল্পনাকে উলোটপালোট করে দেয়।
তারপরও সামরিক সরকারগুলোকে আর্থিক সহযোগিতা দিয়েছিল জাপান সরকার মূলত মানবিক কারণে কিন্তু ব্যবসায়ীরা আর সাড়া দেননি। সমৃদ্ধির ফুল ফোটার আগেই সম্ভাবনাময় কলিগুলো ঝরে গেল। ১৯৮৬-৮৭ সালের দিকে জাপানের শীর্ষ রবীন্দ্রগবেষক, বাংলাভাষার পণ্ডিত এবং বঙ্গবন্ধুর আমৃত্যু ভক্ত অধ্যাপক কাজুও আজুমার (১৯৩১-২০১১) সঙ্গে পরিচয় হলে অনেক তথ্য তাঁর কাছ থেকে জানতে পারি। তিনি বঙ্গবন্ধুর জাপান সফরের সময় তাঁর দোভাষী এবং বিভিন্ন জায়গায় সফরসঙ্গী ছিলেন। বাঙালির সঙ্গে তাঁর দেখা হলেই বলতেন, “কেন আপনারা বঙ্গবন্ধুকে হত্যা করলেন? কী অপরাধ করেছিলেন তিনি? অপরাধ হয়ে থাকলে তাঁকে জেলে দিতেন, বিচার করতেন, সপরিবারে হত্যা করলেন কেন?” বলে প্রকাশ্যে বাংলা ভাষায় অভিযুক্ত করতেন। আমিও অনুরূপ অভিযুক্ত হয়েছিলাম প্রথম সাক্ষাতকালেই। মুক্তিযুদ্ধেও জাপানে কর্মতৎপর ছিলেন এই বাঙালিঅন্তপ্রাণ মানুষটি।
২০১০ সালে অকস্মাৎ দেখা পেয়েছিলাম অসাধারণ একজন বঙ্গবন্ধুভক্তের তিনি ফুকিউরা তাদামাসা (১৯৪১-)। জাপানের বিশিষ্ট বুদ্ধিজীবী, গবেষক, অনেক মূল্যবান গ্রন্থের লেখক এবং আন্তর্জাতিক পতাকাবিশেষজ্ঞ। মুক্তিযুদ্ধের সময় তিনি ছিলেন কয়েক মাস তৎকালীন পূর্ব পাকিস্তানে জাপান রেডক্রসের কর্মকর্তা হিসেবে। সেই অভিজ্ঞতার অসামান্য দলিল হচ্ছে তাঁর রচিত গ্রন্থ “চি তো দোরো তো বানগুরাদেশু দোকুরিৎসু হিগেকি” তথা “রক্ত, কাদা, বাংলাদেশের স্বাধীনতার ট্রাজেডি” ১৯৭৩ সালে বিশ্বের সর্বাধিক প্রচারিত জাপানি ভাষার দৈনিক য়োমিউরি শিম্বুন’ প্রকাশ করেছিল। ১০ই জানুয়ারি ১৯৭২ সালেই বঙ্গবন্ধুর প্রত্যাবর্তন দিবসে সাক্ষাৎ এবং বঙ্গভবনে আমন্ত্রিত অতিথিদের অন্যতম ছিলেন ফুকিউরা তাদামাসা। সেই থেকে বঙ্গবন্ধুর মৃত্যু পর্যন্ত তাঁর একনিষ্ঠ শুভাকাক্সক্ষী ছিলেন তিনি। সেদিন সাক্ষাৎকারে বলেছিলেন, “শেখ মুজিবুর রহমান হত্যাকাণ্ডের পরপরই আমরা টোকিওতে প্রতিবাদ করেছিলাম, আমি টিভি সাক্ষাৎকারে তীব্র নিন্দা প্রকাশ করেছি এবং শোকসভারও আয়োজন করেছিলাম তাতে উপস্থিত ছিলেন বঙ্গবন্ধুঅন্তপ্রাণ রাজনীতিবিদ হায়াকাওয়া তাকাশিসহ অনেক গণ্যমান্য ব্যক্তি।……এই ঘটনা ছিল এমনই আকস্মিক এবং মর্মন্তুদ যে হতবাক হয়ে গিয়েছিলাম আমরা!”
এটা বলার অপেক্ষা রাখে না যে, যদি বঙ্গবন্ধু আজকে বেঁচে থাকতেন তাহলে সিঙ্গাপুর, মালয়োশিয়া, ইন্দোনেশিয়া, দক্ষিণ কোরিয়া এমনকি চীনের বহু আগেই প্রাচ্যের আরেকটি উন্নত রাষ্ট্র জাপান হতো বাংলাদেশ জাপানিদের কল্যাণে। কেননা এশিয়ার অর্থনৈতিক উন্নয়নে জাপানের উদার প্রচেষ্টা ও অবদান অনস্বীকার্য।
বঙ্গবন্ধুহত্যাকাণ্ডের একুশ-বাইশ বছর পর স্বাধীনতার নেতৃত্বদানকারী আওয়ামী লীগ ক্ষমতায় আসে। এই প্রায় দুই যুগে ব্যাপক পরিবর্তন ঘটে এবং একাধিক প্রজন্ম জন্মগ্রহণ করে। বয়ে যায় বহু জলস্রোত, ভেসে যায় পুরনো সম্পর্কের সেতুসমূহ। বঙ্গবন্ধুর ভক্ত কেউ কেউ ততদিনে বার্ধক্যজনিত কারণে মৃত্যবরণ করেছেন কিন্তু অনেকেই জীবিত ছিলেন। কিন্তু তাঁদের সঙ্গে যথাযথ যোগাযোগ যেমন রক্ষা করা হয়নি তেমনি সিঙ্গাপুরের প্রধান মন্ত্রী লী কুয়ান (১৯২৩-২০১৫) অথবা মালয়েশিয়ার প্রধান মন্ত্রী মাহাথির মোহাম্মদের (১৯২৫-) মতো আগ্রহও পরিলক্ষিত হয়নি জাপানি বাণিজ্য সহযোগিতা বা বিনিয়োগের ব্যাপারে। রাজনৈতিক অস্থিরতা এবং বিরোধী দলের লাগাতার আন্দোলনের কারণে জাপানে বাংলাদেশের ভাবমূর্তি আদৌ সুখকর বা উৎস্যবঞ্জক ছিল না জাপানিদের কাছে। তথাপি বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের বিপুল ভাবমূর্তি ম্লান হয়নি তখনো তাঁর ভক্তদের কাছে। তরুণ বয়সে বিদেশি ছাত্র হিসেবে জাপানে অধ্যয়নরত তিব্বতী নাগরিক পেমা গিয়ালপো (১৯৫৩-) মুক্তিযুদ্ধের সময় জাপানে সক্রিয় কর্মী ছিলেন জনমতগঠনে। বর্তমানে জাপানি নাগরিক অধ্যাপক, আন্তর্জাতিক খ্যাতিসম্পন্ন গবেষক, রাজনীতিবিদ এবং Asian Solidarity Council for Freedom and Democracy সংস্থার চেয়ারম্যান ড.পেমা গিয়ালপো বঙ্গবন্ধুর একজন বিশিষ্ট ভক্ত আজও স্মরণ করে তাঁকে সশ্রদ্ধচিত্তে। তাঁর আহবানে এই সংস্থা আয়োজিত বিশেষ আলোচক হিসেবে বিচারপতি রাধা বিনোদ পাল এবং জাপান-বাংলা দ্বিপাক্ষিক সম্পর্কের ইতিহাস আলোচনা করতে গিয়ে বঙ্গবন্ধুর সঙ্গে জাপানের সম্পর্ক নিয়ে কথা বলার সুযোগ পেয়েছি।
বড়ই পরিতাপের বিষয় যে, যাঁরা এখনো বেঁচে আছেন তাঁরা বাংলাদেশ সরকার কর্তৃক স্বাধীনতা পদক বা সম্মাননার জন্য আমন্ত্রিত হয়েছেন বলে জানা নেই। এমনকি, জাপানস্থ বাংলাদেশ দূতাবাস আয়োজিত জাতীয় দিবসগুলোর আলোচনা সভায়ও এঁরা আমন্ত্রিত হয়েছেন বলে কোনো তথ্য পরিলক্ষিত হচ্ছে না। আওয়ামী লীগ এবং দূতাবাসের সহযোগিতায় জাপানে বঙ্গবন্ধুর নামে একটি মৈত্রী সমিতি বা স্মরণ সমিতি গঠিত হতে পারতো বলে ধারণা করি। সেটাও কখনো হয়নি। যদি তেমন একটি সংগঠন প্রতিষ্ঠা করা যেতো তাহলে নতুন প্রজন্মের কাছে বঙ্গবন্ধুর নাম যেমন ছড়িয়ে যেতো তেমনি বাংলাদেশের সঙ্গে জাপানের ভাববিনিময় ও শিক্ষা-সাংস্কৃতিক ক্রমশ জোরদার হতো বলে একান্ত বিশ্বাস। বর্তমানে বাংলাদেশি বংশোদ্ভূত যে শিশু বা তরুণ প্রজন্ম জাপানে বসবাসরত তারা বঙ্গবন্ধুর নাম ও তাঁর ইতিহাস জানে না বললেই চলে। সংস্থার নানা কর্মতৎপরতার বদৌলতে তারাও তাঁর নাম জানতে পারতো, জানতে পারতো বাংলাদেশ নামক একটি দেশকে কীভাবে অকুতোভয়, বাঙালিপ্রেমী এবং মুক্তিদাতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান কৈশোরকাল থেকে সুদীর্ঘ লড়াইয়ের মাধ্যমে বিদেশি শক্তির পরাধীনতা থেকে মুক্ত করে স্বাধীন বাংলাদেশ হিসেবে বিশ্বের বুকে প্রতিষ্ঠা করে গেছেন। শ্রদ্ধা-ভক্তি ভরে অনুভব করতো এই নিঃস্বার্থ মহাত্মাকে।
ছবি: লেখক
সৌজন্যে / কুমিল্লার আলো পত্রিকা