অধিকাংশ মোমবাতি তৈরিতে ব্যবহার করা হয় প্যারাফিন ওয়াক্স, যা উচ্ছিষ্ট ও ক্ষতিকারক উপাদান। এ উপাদানে প্রস্তুতকৃত মোমবাতি যখন পুড়তে থাকে, তখন এ থেকে টলুইন ও বেনজিন নিঃসরণ হতে থাকে। এ দুটো উপাদানই ক্যান্সার সৃষ্টিকারী হিসেবে পরিচিত
শীত এলেই ঘরের ভেতরে উষ্ণতা বুলিয়ে দিতে থাকে নানা আয়োজন, যার একটি হচ্ছে সুগন্ধি ছড়ানো মোম। কিন্তু জানেন কি উষ্ণতা ও সুঘ্রাণ বিলিয়ে দেয়া এ মোমই নানা রকম অসুখের কারণ?
পরিপাটি সাজানো-গোছানো ঘর দেখে মন ভালো হয়ে যায় যে কারো। ঘর সাজানোর জন্য তাই কত আয়োজনই তো রাখি। কখনোবা বাড়তি সৌন্দর্য বুলিয়ে দিতে সন্ধ্যা বেলাতেই জ্বেলে দিই সুগন্ধি মোম, যাতে ঘরের ভেতর রহস্যময় আলো বিরাজ করে আবার সুগন্ধ ছড়িয়ে পড়ে ঘরময়। ঘরের এ প্রান্ত থেকে সে প্রান্তে খেলা করছে মিষ্টি ঘ্রাণ, যা ভালো অনুভূতির জন্ম দেবে নিশ্চিতভাবেই। কিন্তু চমত্কার আলো আর ঘ্রাণ ছড়ানো মোমবাতিটিই যদি হয় আপনার ক্ষতির কারণ, তাহলে একটু অবাক হতে হয় বটে।
অধিকাংশ মোমবাতি প্রস্তুতকারী প্রতিষ্ঠানই সুদৃশ্য মোমবাতি তৈরি করতে ব্যবহার করে প্যারাফিন ওয়াক্স, যা পেট্রোলিয়াম পরিশোধন চেইনের একটি উপজাত পণ্য। অর্থাৎ খুব সাধারণ অংক বলে এটি সবচেয়ে উচ্ছিষ্ট ও ক্ষতিকারক উপাদান। এ উপাদানে প্রস্তুতকৃত মোমবাতি যখন পুড়তে থাকে, তখন এ থেকে টলুইন ও বেনজিন নিঃসরণ হতে থাকে। এ দুটো উপাদানই পরিচিত কারসিনোজেনস নামে, যা জীবন্ত টিস্যু ক্যান্সার সৃষ্টি করতে সক্ষম একটি পদার্থ।
সাউদার্ন ক্যারোলিনা স্টেট ইউনিভার্সিটির গবেষকরা এক গবেষণায় পেট্রোলিয়াম থেকে উৎপাদিত মোম ও শাকসবজি থেকে উৎপাদিত মোমের নির্গমন নির্ণয়ের জন্য তুলনা করেন। যেখানে তারা দুই ধরনের মোম আলাদাভাবে পোড়াতে সময় নেন ৬ ঘণ্টা করে। এরপর ওই ঘরের বাতাস সূক্ষ্মভাবে বিশ্লেষণ করেন। ফলাফল দাঁড়ায়, প্যারাফিন থেকে তৈরি মোম অধিক হারে টলুইন ও বেনজিনের মতো বিষাক্ত রাসায়নিক পদার্থ নিঃসরণ করে। যেখানে ভেজিটেবল বেজড মোমবাতিগুলো ক্ষতিকর এমন কিছুই বাতাসে ছড়াচ্ছে না।
গবেষকরা বলেন, প্যারাফিনযুক্ত মোম আমরা পরীক্ষা করেছি, যা বাতাসে দূষিত উপাদান নিঃসরণ করেছে। যদি কেউ পুরো এক বছরে প্রতিদিন অথবা খুব নিয়মিত এ ধরনের মোম ব্যবহার করেন, তিনি স্বাস্থ্যগত ঝুঁকিতে পড়তে পারেন। কেননা এ ধরনের উপাদান বাতাসকে দূষিত করে ফেলে। ফলে ক্যান্সার, অ্যালার্জি, শ্বাসকষ্টের মতো রোগগুলো হতে পারে।
সেক্ষেত্রে নিরাপদ থাকতে হলে প্যারাফিনযুক্ত মোম এড়িয়ে যাওয়াই ভালো সমাধান। তবে নিতান্তই ব্যবহার করতে হলে অর্গানিক মোম বেছে নেয়াই শ্রেয়।
সূত্র: ইনহ্যাবিটেট