বিতর্কিত মুসলিম ধর্মপ্রচারক ড. জাকির নায়েকের আরো ১৬ কোটি ৪ লাখ রুপির সম্পদ জব্দ করেছে ভারতের এনফোর্সমেন্ট ডিরেক্টোরেট (ইডি)। একইসঙ্গে তার বিরুদ্ধে হিন্দুসহ অন্যান্য ধর্মে বিশ্বাসীদের অনুভূতিতে আঘাত হানার অভিযোগ এনেছে দেশটির এ সরকারি প্রতিষ্ঠান। খবর হিন্দুস্তান টাইমস।
খবরে বলা হয়েছে, অর্থপাচার প্রতিরোধ আইনের অধীনে এ নিয়ে জাকির নায়েকের মোট ৫০ কোটি ৪৯ লাখ রুপির সম্পদ জব্দ করা হয়েছে। ফাতিমা হাইটস এবং আফিয়াহ হাইটস নামে পুনের ভন্দুপ এবং এনগ্রাসিয়ায় অজ্ঞাত প্রকল্পের আওতায় এ সম্পদ ছিল বলে জানিয়েছে ইডি।
খবরে ইডির বরাত দিয়ে বলা হয়েছে, প্রোপার্টি কেনার সময় প্রকৃত মালিককে আড়াল করতে জাকির নায়েকের অ্যাকাউন্ট থেকে প্রাথমিকভাবে দেওয়া অর্থ ফেরত আনা হয়। পরে তার স্ত্রী, সন্তান এবং ভাতিজিদের অ্যাকাউন্টের মাধ্যমে সেই অর্থ পরিশোধ করা হয়েছে।
ন্যাশনাল ইনভেস্টিগেশন এজেন্সি (এনআইএ) মুম্বাইয়ের বিশেষ বিচারকের আদালতে জাকির নায়েকসহ কয়েকজনের বিরুদ্ধে এনআইএ’র দেওয়া অভিযোগপত্রের ভিত্তিতে তদন্তে নামে ইডি।
এনআইএ’র অভিযোগপত্রের বরাত দিয়ে ইডি জানিয়েছে, হিন্দু, খ্রিস্টান এবং নন-ওহাবি মুসলিম বিশেষ করে যারা শিয়া, সুফি ও বেরলবি, তাদের ধর্মীয় বিশ্বাসকে উদ্দেশ্যপ্রণোদিত এবং বিদ্বেষবশত অবমাননা করেছেন জাকির নায়েক। এর উদ্দেশ্য ছিল তাদের ধর্মীয় অনুভূতিকে আঘাত করা। এ ধরনের অপরাধমূলক বক্তব্য ছড়ানোর মাধ্যম হিসেবে ব্যবহার হয়েছে ইসলামিক রিসার্চ ফাউন্ডেশন (আইআরএফ) এবং এম/এস হারমনি মিডিয়া।
মালয়েশিয়ার নাজিব রাজাক সরকারের সময় জাকির নায়েক দেশটির স্থায়ী নাগরিকত্ব পেয়েছেন। গত বছর ভারত তাকে ফেরত পাঠানোর অনুরোধ জানালে ফেরত পাঠানোর ক্ষেত্রে সব বিষয় বিবেচনায় নেওয়ার কথা জানিয়েছিলেন বর্তমান প্রধানমন্ত্রী মাহাথির মোহাম্মদ।
প্রসঙ্গত, ২০১৬ সালের জুলাইয়ে ঢাকার গুলশানে হলি আর্টিজান রেস্তোরাঁয় জঙ্গি হামলা হয়। ওই জঙ্গিরা নৃশংস তাণ্ডব চালিয়ে ১৭ বিদেশীসহ ২০ জনকে হত্যা করে। মধ্যপ্রাচ্যভিত্তিক জঙ্গিগোষ্ঠী ইসলামিক স্টেট (আইএস) এই হামলার দায় স্বীকার করে।
জাকির নায়েকের মালিকানাধীন টেলিভিশন চ্যানেল পিস টিভিতে তার জঙ্গিবাদে উস্কানিমূলক বক্তৃতা শুনে উদ্বুদ্ধ হয়ে এই জঙ্গিরা হামলা চালায় বলে অভিযোগ ওঠে। পরে বাংলাদেশে পিস টিভির সম্প্রচার বন্ধ করে দেয়া হয়। একইসঙ্গে ভারতে জাকির নায়েকের বিরুদ্ধে তদন্ত শুরু হয়। তখন তিনি ভারত থেকে পালিয়ে মালয়েশিয়া আশ্রয় নেন।