প্রচলিত রীতি ভেঙে থাইল্যান্ডের আসন্ন জাতীয় নির্বাচনে প্রধানমন্ত্রী পদে লড়বেন দেশটির রাজকুমারী ও রাজা মহা ভাজিরালংকর্নের বড় বোন উরোলরতনা রাজকন্যা সিরিবাধন ভারনাভাদি। থাই রাকসা চার্ট পার্টি থেকে প্রার্থী হয়েছেন ৬৭ বছর বয়সী এই রাজকুমারী।
শুক্রবার (৮ ফেব্রুয়ারি) থাইল্যান্ডের সাধারণ নির্বাচনে প্রধানমন্ত্রী পদে প্রার্থিতা জমা দিয়েছেন থাই রাজকুমারী সিরিবাধন। দেশটির সাবেক প্রধানমন্ত্রী থাকসিন সিনাওয়াত্রা ও সর্বশেষ ক্ষমতাচ্যুত প্রধানমন্ত্রী ইংলাক সিনাওয়াত্রার অনুগত দল থেকেই প্রার্থী হয়েছেন তিনি।
বিবিসি ও আলজাজিরার খবরে বলা হয়, থাইল্যান্ডের রাজপরিবার সাধারণত দেশটির রাজনীতির সঙ্গে দূরত্ব বজায় রেখে থাকে। কিন্তু সেই রীতি ভেঙে এবার সরাসরি রাজনীতির মাঠে নামলেন রাজকুমারী সিরিবাধন। থাই রাজপরিবারের কোনো সদস্যেরও সরাসরি রাজনৈতিক সম্পৃক্ততা এই প্রথম।
এদিকে, থাইল্যান্ডের বর্তমান সামরিক শাসিত সরকারের প্রধানমন্ত্রী প্রায়ুথ চ্যান-ওচা নিজেও এই নির্বাচনে ফের প্রধানমন্ত্রী পদে লড়বেন বলে ঘোষণা দিয়েছেন। এছাড়া, ২০১৪ সালে সামরিক অভ্যুত্থানের মাধ্যমে ইংলাক সিনাওয়াত্রা সরকারকে উৎখাত করে থাইল্যান্ডের ক্ষমতা দখল করে নিয়েছিলেন তিনি। সামরিক বাহিনীর অনুগত পালং প্রচারাত পার্টি থেকে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করবেন তিনি।
এ পরিস্থিতিতে ধারণা করা হচ্ছে, আসছে থাই নির্বাচনে মূল লড়াইটি হতে পারে রাজকুমারী সিরিবাধন ও প্রায়ুথ চ্যান-ওচা’র মধ্যে। কারণ হিসেবে বলা হচ্ছে, প্রায়ুথ ইংলাক সিনাওয়াত্রা সরকারকে উৎখাত করেছিলেন। অন্যদিকে রাজকুমারী যে দলটি থেকে প্রার্থী হয়েছেন, সেই দলটি সিনাওয়াত্রার অনুগত। ফলে তারাই হবেন প্রধান প্রতিদ্বন্দ্বী।
অবশ্য রাজকুমারী প্রার্থী হওয়ায় মাঠের চিত্র বদলে যেতে পারে বলেও ধারণা করছেন কেউ কেউ। অনেকেই মনে করছেন, রাজপরিবারের এই সদস্যদের বিরুদ্ধে শেষ পর্যন্ত অন্য কেউ প্রতিদ্বন্দ্বিতা করবেন না। সেক্ষেত্রে বিনাপ্রতিদ্বন্দ্বিতাতেও থাই প্রধানমন্ত্রীর পদে অধিষ্ঠিত হতে পারেন রাজকুমারী সিরিবাধন।
ব্যাংককে বিবিসি দক্ষিণ এশিয়ার করেসপন্ডেন্ট জোনাথন হেড বলছেন, রাজকুমারী প্রার্থী হয়েছেন। বাস্তবতা হলো, তার বিরুদ্ধে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করা যাবে না। থাই রাজনীতিকে উল্টে দিলো তার এই সিদ্ধান্ত।
উল্লেখ্য, ১৯৭২ সালে এক মার্কিন নাগরিককে বিয়ে করায় রাজপরিবারের সদস্যের সম্মান ফিরিয়ে নেওয়া হয় রাজকুমারী সিরিবাধনের কাছ থেকে। নব্বইয়ের দশকে ওই মার্কিনির সঙ্গে রাজকুমারীর বিচ্ছেদ হলে তিনি দেশে ফিরে আসেন। এরপর আনুষ্ঠানিকভাবে তাকে রাজপরিবারের সদস্যের সম্মান ফিরিয়ে দেওয়া না হলেও সাধারণ মানুষ তাকে রাজকুমারী হিসেবেই গণ্য করে থাকে। এদিকে, সিনাওয়াত্রা পরিবারের সঙ্গেও রাজকুমারী সিরিবাধনের ঘনিষ্ঠ সম্পর্ক দীর্ঘদিনের।