দ্বিতীয়বারের মতো বিপিএল চ্যাম্পিয়ন হলো কুমিল্লা। এর আগে ২০১৫-১৬ আসরে বরিশাল বুলসকে হারিয়ে প্রথমবার চ্যাম্পিয়ন হওয়ার গৌরব অর্জন করেছিল তারা।
বিশাল রানের লক্ষ্যে ব্যাট করতে নামা ঢাকার শুরুটা মোটেও ভালো ছিল না। প্রথম ওভারের দ্বিতীয় বলেই ওপেনার সুনীল নারিনকে হারায় তারা। তবে দ্বিতীয় উইকেটে উপুল থারাঙ্গা ও রনি তালুকদারের দৃঢ়তায় কাটিয়ে ওঠে শুরুর ধাক্কা। এই জুটিতে নয় ওভারেই একশো রানের কোটা পার হয় ঢাকা।
ভয়াবহ হয়ে ওঠা ১০১ রানের এই জুটিকে থামান শ্রীলঙ্কান পেসার থিসারা পেরেরা। ২৭ বলে চার চার ও তিন ছক্কায় ৪৮ রান করা স্বদেশী থারাঙ্গাকে উইকেট ছাড়া করেন তিনি।
আগুনে ব্যাটিং চালিয়ে যেতে থাকেন রনি। কিন্তু তাকে বেশিক্ষণ সঙ্গ দিতে পারেনি সাকিব। ওয়াহাব রিয়াজের বলে তামিম ইকবালের হাতে ক্যাচ দেন ঢাকার অধিনায়ক।
দলীয় ১২০ রানে থামে রনি ঝড়। রান আউট হওয়ার আগে দাপুটে ব্যাটিংয়ে করেন ৬৬ রান। তার ৩৮ বলের ইনিংসটিতে রয়েছে ছয় চার ও চার ছক্কা।
প্রত্যাশা মেটাতে পারেননি দুই ক্যারিবীয় ব্যাটসম্যান কাইরন পোলার্ড (১৩) ও আন্ড্রে রাসেল (৪)।
অষ্টম উইকেটে হাল ধরেছিলেন নুরুল হাসান সোহান ও মাহমুদুল হাসান জুটি। শেষ ১২ বলে দরকার ছিল ৩৩ রান। এমন হিসেবের মধ্যে প্রথম বলেই ছক্কা হাঁকিয়ে ম্যাচ জমিয়ে তোলার জোরালো আভাস জাগিয়ে পরের বলেই ফিরেন সোহান (১৮)। শেষ হয়ে যায় ঢাকার আশা। আট বলে ১৫ করে উইকেট ছাড়া হন মাহমুদুল।
কুমিল্লার বোলারদের মধ্যে তিনটি উইকেট নেন পাকিস্তানী পেসার ওয়াহাব রিয়াজ। দুটি করে উইকেট নেন মোহাম্মদ সাইফউদ্দিন ও পেরেরা।
এর আগে নির্ধারিত ২০ ওভার শেষে ৩ উইকেটে ১৯৯ রানের সংগ্রহ পায় কুমিল্লা। দলটির এই সংগ্রহে সবচেয়ে বড় অবদান তামিমের। একাই করেন অপরাজিত ১৪১ রান!
বিপিএলের ফাইনালে এটা কোনো ব্যাটসম্যানের দ্বিতীয় সর্বোচ্চ ইনিংস। সবচেয়ে বেশি রানের ইনিংসটি ওয়েস্ট ইন্ডিজের ব্যাটসম্যান ক্রিস গেইলের, অপরাজিত ১৪৬ রান।
তামিমের সামনে পাত্তা পায়নি ঢাকার কোনো বোলার। শুরুতে খানিকটা সময় নিলেও সময়ের সঙ্গে তামিম আবির্ভূত হন মারমুখো হয়ে। ৩১ বলে অর্ধশতক পূর্ণ করা সেঞ্চুরি তুলে নেন ৫০ বলে! মাত্র ১৯ বলে করেন পরের ৫০!
কুমিল্লার পুরো ইনিংস তামিমময়। ওপেনিং জুটিতে তাকে মোটেই সঙ্গ দিতে পারেননি এভিন লুইস। দলীয় ৯ রানেই রুবেল হোসেন বলে এলবিডব্লিউর শিকার হন ক্যারিবীয় এই ব্যাটার।
দ্বিতীয় উইকেট জুটিতে এনামুল হককে নিয়ে শুরুর ধাক্কা কাটিয়ে তুলেন তামিম। দলীয় ৯৯ রানে এই ৮৯ রানের এই জুটির লাগাম টানেন সাকিব। এলবিডব্লিউর শিকার হওয়ার ৩০ বলে ২৪ রান করেন এনামুল। দলের স্কোরবোর্ডে আর এক রান জমা পড়তেই রানআউট হন শামসুর রহমান।
এরপর অধিনায়ক ইমরুল কায়েসকে উইকেটের একপ্রান্তে দাঁড় করিয়ে অপর প্রান্ত তাণ্ডব চালান তামিম। শেষ পর্যন্ত ১৪১ রানে অপরাজিত থাকেন বাঁ হাতি এই ব্যাটার। তার ৬১ বলের ইনিংসটিতে রয়েছে ১০ চার ও ১১ ছক্কা! ২১ বলে ১৭ রান অপরাজিত থাকেন ইমরুল। ফাইনালের আগে লিগ পর্বে দুইবারের দেখাতেও ঢাকাকে হারিয়েছিল কুমিল্লা।
দুর্দান্ত ব্যাটিংয়ে ম্যাচ কুমিল্লা ভিক্টোরিয়ান্সের তামিম ইকবাল; টুর্নামেন্ট সেরা হয়েছেন ঢাকার অধিনায়ক সাকিব আল হাসান।