যুক্তরাজ্যের নগদ অর্থব্যবস্থা প্রায় পতনের দ্বারপ্রান্তে। এমন অবস্থায় দেশটির প্রায় আশি লাখ মানুষকে নগদ অর্থহীন অর্থব্যবস্থার সঙ্গে খাপ খেতে ব্যাপক লড়াই করতে হচ্ছে। সম্প্রতি যুক্তরাজ্যের সরকারি এক রিপোর্টের বরাত দিয়ে দ্য গার্ডিয়ান গতকাল বুধবারের প্রতিবেদনে এমন অর্থনৈতিক সংকটের কথা প্রকাশ করে।
প্রতিবেদনে বলা হয়, যুক্তরাজ্যের অধিকাংশ ক্ষেত্রেই অর্থ পরিশোধের ক্ষেত্রে জিডিটাল পদ্ধতি ব্যবহার করা হচ্ছে। অনেক স্থানে এটিএম মেশিন বন্ধ করে দেওয়া হচ্ছে। হাতেগোনা কিছু কোম্পানি গ্রাহকদের নগদ অর্থ দেওয়ার প্রতিশ্রুতি দিয়ে বাণিজ্য টিকিয়ে রেখেছে, যদিও তা সাময়িক।
দেশটির আর্থিক ন্যায়পাল সেবার সাবেক প্রধান নাটালি সিনি বলেন, ‘যুক্তরাজ্যের মোট জনসংখ্যার ১৭ শতাংশ অর্থাৎ ৮০ লাখ ব্রিটিশকে নগদ অর্থহীন সমাজে নিজেদের মানিয়ে নিতে ব্যাপক কষ্ট করতে হবে।’
গত বছর যুক্তরাজ্যের বিভিন্ন ব্যাংকের ডেবিট কার্ড আনুষ্ঠানিকভাবে তাদের কার্যক্রম বন্ধ করে দিয়েছে। কারণ ডেবিট কার্ড দিয়ে এখন আর আগের মতো নগদ অর্থ উত্তোলন করা যাচ্ছে না সব জায়গায়। এক পরিসংখ্যানে বলা হচ্ছে, আগামী ১৫ বছরের মধ্যে যুক্তরাজ্যে মোট লেনদেনের মাত্র ১০ শতাংশ হবে নগদে।
সরকারি ওই রিপোর্টে বলা হয়, ব্যাংকের এটিএম মেশিনসহ নগদ অর্থ বাছাই কেন্দ্রগুলোকে টিকিয়ে রাখতে একটি বিল উত্থাপন করা হয়েছে পার্লামেন্টে। প্রতি বছর এই সেবা খাতে ৫ বিলিয়ন পাউন্ড ব্যয় হয় যা ব্যাংক ও অন্যান্য অর্থায়ন প্রতিষ্ঠান বহন করে। কিন্তু অর্থ পরিশোধ ব্যবস্থা ডিজিটাল হয়ে যাওয়ায় এই ব্যয় সামলানো কষ্ট হয়ে যাচ্ছে।
তবে যুক্তরাজ্যে এখনই নগদ অর্থহীন সমাজে রূপান্তরিত হওয়ার সময় আসেনি বলেও সতর্ক করে দেওয়া হয় রিপোর্টে। এখনো দেশে ২৫ লক্ষাধিক মানুষ প্রতিদিনকার জীবন যাপনে সকল লেনদেনের ক্ষেত্রে নগদ অর্থ ব্যবহার করে। পাশাপাশি সাম্প্রতিক বছরগুলোতে যুক্তরাজ্যের ব্যাংকগুলোতে আইটি ব্যর্থতা এবং নিরাপত্তা ব্যবস্থার দুর্বলতার দিক তুলে ধরে রিপোর্টে বলা হয়, এমন দুর্বল ডিজিটাল নিরাপত্তা ব্যবস্থায় ডিজিটাল অর্থব্যবস্থা হিতে বিপরীত হয়ে দাঁড়াতে পারে। বিশ্লেষকরা মনে করছেন, বেক্সিট সামনে রেখে যুক্তরাজ্য নতুন নগদ অর্থব্যবস্থাকে ঢেলে সাজাতে চাইছে মে সরকার।