রানা প্লাজা ধসের ছয় বছর আজ। ২০১৩ সালের এইদিন সকালে ধসে পড়ে রাজধানীর অদূরে সাভারের ৯ তলা ভবন রানা প্লাজায় থাকা গার্মেন্টস করখানাসহ একশতর বেশি দোকান।
এ ঘটনায় উদ্ধার করা হয় ১ হাজার ১৭৫ জন শ্রমিকের মৃতদেহ। আহত ও পঙ্গুত্ব বরণ করেছেন অন্তত দুই হাজার জন। একসঙ্গে এতো শ্রমিকের মৃত্যুর ঘটনা শুধু বাংলাদেশের নয়, বিশ্ব-ইতিহাসের অন্যতম ভয়াবহ শিল্প-দুর্ঘটনা।
তবে ওই ঘটনায় দায়ীদের কারো এখনও শাস্তি হয়নি। শেষ হয়নি মামলার বিচার কাজ।
এ ঘটনায় মোট তিনটি মামলা হয়। এর মধ্যে অবহেলাজনিত মৃত্যু চিহ্নিত হত্যা মামলাটি করে পুলিশ। ইমারত নির্মাণ আইন লঙ্ঘন করে ভবন নির্মাণের অভিযোগে অপর মামলাটি করে রাজধানী উন্নয়ন কর্তৃপক্ষ (রাজউক)। আর দুর্নীতি দমন কমিশন (দুদক) ভবন নির্মাণসংক্রান্ত দুর্নীতি নিয়ে আরেকটি মামলা করে।
প্রায় তিন বছর আগে হত্যার অভিযোগে রানা প্লাজার মালিক সোহেল রানাসহ ৪১ জনের বিরুদ্ধে ঢাকার জেলা ও দায়রা জজ আদালত অভিযোগ গঠন করে বিচার শুরুর আদেশ দেন।
ঢাকা জেলা পিপির দপ্তর থেকে গত রবিবার বলেছেন, অভিযোগ গঠনের আদেশের বৈধতা চ্যালেঞ্জ করে আটজন আসামি হাইকোর্টে আবেদন করেন। শুনানি নিয়ে এই আটজনের পক্ষে হাইকোর্টের স্থগিতাদেশ আসে। ইতিমধ্যে ছয়জন আসামির স্থগিতাদেশ প্রত্যাহার হয়েছে। কেবল সাভার পৌরসভার তৎকালীন মেয়র রেফায়েত উল্লাহ এবং তৎকালীন কাউন্সিলর মোহাম্মদ আলী খানের পক্ষে স্থগিতাদেশ বহাল আছে। রেফায়েত উল্লাহর স্থগিতাদেশের মেয়াদ বাড়ানো হয়েছে আগামী ৯ মে পর্যন্ত। আর মোহাম্মদ আলীর পক্ষে আগামী জুন মাস পর্যন্ত মেয়াদ বাড়ানো হয়।
অন্যদিকে ছয় বছরেও হত্যা এবং ইমারত নির্মাণ আইনের মামলার সাক্ষ্য গ্রহণ শুরু না হওয়ায় রাষ্ট্রপক্ষের ভূমিকা নিয়ে প্রশ্ন তুলেছেন আইনজীবী ও ভুক্তভোগীরা।
আদালত সূত্রে জানা গেছে, রানা প্লাজা ধসের হত্যা মামলায় ৪১ আসামির মধ্যে বর্তমানে কারাগারে আছেন একজন। তিনি হলেন রানা প্লাজা ভবনের মালিক সোহেল রানা। জামিনে আছেন ৩২ আসামি। পলাতক আছেন ছয়জন। মারা গেছেন দুই আসামি।