ইউরোপে করোনাভাইরাস সংকটের অর্থনৈতিক প্রভাব এড়াতে প্রস্তাবিত কর্মসূচি সম্পর্কে মতবিরোধ কাটছে না। করোনা সংকটের কারণে বেশ কয়েক মাস ধরে ইউরোপীয় ইউনিয়নের (ইইউ) নেতারা ভার্চুয়াল স্তরে আলোচনার পর তারা আবার সশরীরে মিলিত হয়েছেন। শুক্রবার ব্রাসেলসে ২৭টি সদস্য দেশের সরকারপ্রধান এক গুরুত্বপূর্ণ সম্মেলনে অংশ নেন। এ বৈঠকে চলতি সপ্তাহান্তেও নেতারা মতবিরোধ কাটাতে ব্যর্থ হলে জুলাই মাসে তৃতীয় সম্মেলনে তাদের চূড়ান্ত সিদ্ধান্ত নিতে হবে। খবর: ডয়েচে ভেলে।
করোনা সংকটে বিপর্যস্ত ইউরোপের অর্থনীতিকে চাঙ্গা করতে প্রায় ৭৫ হাজার কোটি ইউরোর প্রস্তাবিত কর্মসূচি সম্পর্কে এখনও তারা ঐকমত্যে আসতে পারেননি। দ্বিতীয় প্রচেষ্টা সফল করার জন্য শীর্ষ নেতাদের ওপর চাপ বাড়ছে।
ইইউ নেতারা কঠিন পরিস্থিতির মুখে পড়েছেন। এ রাষ্ট্রজোট গঠিত হওয়ার পর এত বড় মন্দার আশঙ্কা দেখা যায়নি। সেই বিপদ এড়াতে ইউরোপীয় স্তরে জোরালো উদ্যোগ সম্পর্কেও তাদের মধ্যে কোনো মতভেদ নেই। কিন্তু খুঁটিনাটি বিষয় নিয়ে তাদের মধ্যে মতবিরোধ কাটছে না। তহবিলের অঙ্ক থেকে শুরু করে দীর্ঘমেয়াদি ইইউ বাজেটের মধ্যে সেই পুনরুদ্ধার কর্মসূচি অন্তর্গত করার প্রশ্নে ঐকমত্য অর্জন করা যাচ্ছে না। ঋণভার ভাগ করে নেওয়ার বিষয়ে নীতিগতভাবে মৌলিক পার্থক্য থেকে গেছে।
এ অবস্থায় আপস প্রস্তাব হিসাবে ৭৫ হাজার কোটি ইউরো দুই ভাগে ভাগ করার প্রস্তাব এনেছেন ইইউ সরকার পরিষদের প্রধান শার্ল মিশেল। ৫০ হাজার কোটি ইউরো ঋণ এবং ২৫ হাজার কোটি ইউরো অনুদান হিসেবে বণ্টনের মাধ্যমে সংশয় দূর করার চেষ্টা চালাচ্ছেন তিনি। বিশেষ করে ‘ফ্রুগাল ফোর’ বলে পরিচিত নেদারল্যান্ডস, অস্ট্রিয়া, সুইডেন ও ডেনমার্ক অনুদানের অঙ্ক যতটা সম্ভব কম রাখার চেষ্টা চালিয়ে যাচ্ছে। দীর্ঘমেয়াদি ইইউ বাজেটের অঙ্কও সামান্য কমানোর প্রস্তাব দিয়েছেন মিশেল।
গতকাল শনিবারের মধ্যে ইইউ নেতারা পুনরুদ্ধার কর্মসূচি সম্পর্কে ঐকমত্যে পৌঁছাবেন বলে সম্ভাবনা দেখা দেয়। তা সত্ত্বেও নতুন করে ব্যর্থতার আশঙ্কাও উড়িয়ে দেওয়া হচ্ছে না। সম্মেলন আজ রোববার পর্যন্তও গড়াতে পারে। তাতেও লাভ না হলে চলতি মাসেই তৃতীয় প্রচেষ্টার পরিকল্পনা রাখা হয়েছে। তখন গ্রীষ্মকালীন বিরতির আগে ইইউ নেতারা আরেকটি সম্মেলনে এ প্রস্তাব অনুমোদন করতে পারেন।