বাণিজ্য নিয়ে সমঝোতায় পৌঁছানোর পর জাপান ও যুক্তরাষ্ট্র একটি বাণিজ্য চুক্তি চূড়ান্ত করবে বলে আশা করা হচ্ছে। আগামী সপ্তাহে মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প ও জাপানের প্রধানমন্ত্রী শিনজো আবের নিউইয়র্কে সাক্ষাতের কথা রয়েছে। অনুষ্ঠেয় বৈঠকে এ দুই বিশ্বনেতা কৃষিশুল্ক ও ডিজিটাল বাণিজ্য নিয়ে একটি গুরুত্বপূর্ণ চুক্তি স্বাক্ষর করবেন বলে ধারণা করা হচ্ছে। খবর রয়টার্স।
সপ্তাহের শুরুতে ডোনাল্ড ট্রাম্প জাপানের সঙ্গে বাণিজ্য নিয়ে একটি সমঝোতায় পৌঁছানোর ঘোষণা দিয়েছিলেন। তবে ট্রাম্পের ঘোষণায় আসন্ন চুক্তির বিস্তারিত কোনো বিবরণ আসেনি। জাপানের পক্ষ থেকে যে দাবি-দাওয়া রয়েছে, সেগুলো সম্পর্কে স্পষ্ট কিছু বলেননি মার্কিন প্রেসিডেন্ট। বিশেষত যুক্তরাষ্ট্রের বাণিজ্য আইনের ২৩২ অনুচ্ছেদের অধীনে জাপানের গাড়ি ও গাড়ি সরঞ্জামের ওপর ২৫ শতাংশ পর্যন্ত জাতীয় নিরাপত্তা শুল্ক আরোপ করা হবে না—এ বিষয়েও কোনো বক্তব্য দেননি তিনি।
এদিকে জাপানি পণ্যে যুক্তরাষ্ট্রের শুল্ক আরোপ না করার বিষয়টি টোকিও লিখিতভাবে নিশ্চিত হতে চায় বলে জানিয়েছেন জাপানের পররাষ্ট্রমন্ত্রী তোশিমিতসু মোতেগি। প্রসঙ্গত, জাপান-যুক্তরাষ্ট্র বাণিজ্য আলোচনার জন্য টোকিওর পক্ষে তোশিমিতসু মোতেগি ও ওয়াশিংটনের পক্ষে মার্কিন বাণিজ্য প্রতিনিধি রবার্ট লাইটহাইজার দায়িত্বে রয়েছেন।
এর আগে ২০১৮ সালের সেপ্টেম্বরে জাপান-যুক্তরাষ্ট্র একটি সমঝোতায় পৌঁছেছিল। সে সময় জাপানের গাড়ির ওপর যুক্তরাষ্ট্র বর্ধিত শুল্ক আরোপ করবে না এমন একটি সিদ্ধান্ত হয়েছিল বলে জানিয়েছেন টোকিওর সরকারি প্রতিনিধিরা। তবে তখন থেকে দুই দেশের উচ্চপর্যায়ের কর্মকর্তাদের মধ্যে একটি বাণিজ্য আলোচনা অনুষ্ঠিত হওয়ার কথা থাকলে তা এখনো অনুষ্ঠিত হয়নি। তাই আগামী সপ্তাহে দুই দেশের শীর্ষ দুই নেতার বৈঠক কোনো চুক্তির পরিবর্তে পুনরায় শুধু প্রতিশ্রুতির মধ্যে সীমিত থাকতে পারে বলে আশঙ্কা করছেন সংশ্লিষ্টরা। গত বছরের সমঝোতায় দুই পক্ষ এ মর্মে যৌথ ঘোষণা দিয়েছিল যে, আলোচনা অনুযায়ী টোকিও-ওয়াশিংটন পরস্পরের বিরুদ্ধে যৌথ প্রতিশ্রুতিবিরোধী কোনো পদক্ষেপ গ্রহণ থেকে বিরত থাকবে।
উল্লেখ্য, যুক্তরাষ্ট্রের সঙ্গে জাপানের বিশাল বাণিজ্য ঘাটতি শুল্ক নিয়ে বিরোধের কেন্দ্রে রয়েছে। এর মধ্যে ওয়াশিংটনের সঙ্গে টোকিওর বাণিজ্য ঘাটতির দুই-তৃতীয়াংশের জন্য এককভাবে জাপানের গাড়ি খাতই দায়ী বলে জানিয়েছেন সংশ্লিষ্টরা। এ পরিস্থিতিতে যুক্তরাষ্ট্র দেশটির গাড়ি ও গাড়ি সরঞ্জামের ওপর আরেক দফা শুল্ক আরোপ করলে রফতানিনির্ভর দেশটি বিশাল ক্ষতির মুখে পড়বে।