কংগ্রেসে মেক্সিকো সীমান্তে দেয়াল নির্মাণ সংক্রান্ত আলোচনা ভেস্তে যাওয়ায় আবারও যুক্তরাষ্ট্রে অর্থনৈতিক অচলাবস্থা সৃষ্টির সম্ভাবনা তৈরি হয়েছে বলে জানিয়েছে নিউ ইয়র্ক টাইমস। গত রবিবার কংগ্রেসে রিপাবলিকান শিবির ও ট্রাম্পের সঙ্গে আলোচনায় বসেন ডেমোক্র্যাট শিবির। আলোচনায় ডেমোক্র্যাট সদস্যরা অ-নথিভুক্ত অভিবাসীদের সাজার মেয়াদ কমানোর ব্যাপারে দাবি জানিয়ে দেয়াল নির্মাণে বাজেট বরাদ্দের প্রস্তাব দেন। কিন্তু প্রেসিডেন্ট ট্রাম্প সীমান্তে আরও সেনা সদস্য মোতায়েনে জোর দেন।
গতকাল সোমবার টেক্সাসে দেয়ালের পক্ষে সমর্থকদের নিয়ে র্যালিরও ডাক দেন ট্রাম্প। হাউস এবং সিনেটের মধ্যস্থতাকারীরা আশা করেছিলেন সোমবার আলোচনার টেবিলে দেয়াল ইস্যুতে কোনো চুক্তিতে পৌঁছানো যাবে। কিন্তু ডেডলাইনের কয়েক ঘণ্টা আগেই দুই পক্ষের মধ্যে সকল যোগাযোগ ছিন্ন হয়ে যায় বলে জানান আইনপ্রণেতারা।
এদিকে ট্রাম্প প্রশাসন দক্ষিণ-পশ্চিমাঞ্চলীয় সীমান্ত সুরক্ষায় কয়েক হাজার সেনা মোতায়েন করেছে। গত নভেম্বরের মধ্যবর্তী নির্বাচনের পর ওই সীমান্তে মোট পাঁচ হাজার ৯০০ সেনা মোতায়েন করা হয়েছে। এছাড়া তিন হাজার ৭০০ সশস্ত্র সেনা পাঠানো হয়েছে সীমান্ত সুরক্ষায় হোমল্যান্ড সিকিউরিটিকে সাহায্যের জন্য।
বিশ্লেষকরা এবং সিনেটের সিনিয়র সদস্যরা মনে করছেন, সীমান্তে প্রতিদিনকার সমস্যা মোকাবেলায় যে সেনাদের পাঠানো হয়েছে তাদের পর্যাপ্ত প্রশিক্ষণ নেই। এমন অবস্থায় সীমান্তে অনাকাক্সিক্ষত ঘটনা ঘটতে পারে।
সর্বশেষ অচলাবস্থা ছিল যুক্তরাষ্ট্রের ইতিহাসে সবচেয়ে বড়। ৩৫ দিন ধরে চলা অচলাবস্থায় যুক্তরাষ্ট্রের অধিকাংশ সরকারি প্রতিষ্ঠান বন্ধ করে দেওয়া হয়। সরকারি কর্মচারীরা ছাড়াও সাধারণ জনগণ অচলাবস্থা বন্ধে রাস্তায় নেমে আসে। এসময় আলোচনার ভিত্তিতে সমস্যা সমাধানের শর্তে তিন সপ্তাহের জন্য অচলাবস্থা বন্ধ করেন ট্রাম্প। এই অচলাবস্থায় যুক্তরাষ্ট্রের অর্থনীতির মোট ক্ষতি হয় ১১ বিলিয়ন ডলার।
ডেমোক্র্যাটদের দাবি অনুসারে, সীমান্তের বন্দি শিবিরে বেডের সংখ্যা বাড়িয়ে ১৬ হাজার ৫০০ করা হলে বন্দিদের মধ্যে যাদের অপরাধের রেকর্ড আছে তাদের চিহ্নিত করা সহজ হবে। ট্রাম্প এই প্রস্তাবে রাজি হলে ডেমোক্র্যাটরা দেয়াল নির্মাণে দুই বিলিয়ন ডলার বাজেট বরাদ্দ দিতে রাজি আছেন, যা ট্রাম্পের প্রস্তাবিত বাজেটের চেয়ে চার বিলিয়ন ডলার কম।
ধারণা করা হচ্ছে, এবারের অচলাবস্থাকে ট্রাম্প জরুরি অবস্থা জারি ও দেয়াল নির্মাণে ব্যবহার করতে পারেন। এক্ষেত্রে প্রেসিডেন্টের নির্বাহী ক্ষমতা প্রয়োগের বিকল্পও ট্রাম্পের টেবিলে রয়েছে।