মহামারি করোনাভাইরাসের প্রতিষেধক কবে আসবে বলা যাচ্ছে না ঠিক করে। এর মাঝে আবার ধনী-দরিদ্রের মধ্যে সেই টিকার সমবণ্টন নিয়ে চিন্তায় আছে জাতিসংঘ। এদিকে লকডাউনের জন্য বন্ধ হয়ে আছে ব্যবসা-বাণিজ্য। এতে আর্থিকভাবে ক্ষতিগ্রস্ত হচ্ছে মানুষ, আয়-রোজগার কমে গেছে। আর এমন পরিস্থিতিতে সাহায্যের হাত না বাড়ালে অন্তত তিন কোটি মানুষের মৃত্যু হবে শুধু না খেতে পেয়ে, এমনটা আশঙ্কা করছে জাতিসংঘের খাদ্যবিষয়ক সংস্থা (ডব্লিউএফপি)।
সংস্থাটির পর্যবেক্ষণ অনুযায়ী, বিশ্বের ২৭ কোটি মানুষ খাদ্যসংকটের মুখে পড়তে চলেছে। এভাবে চললে এই বছরের শেষেই ১৩ কোটি ৮০ লাখ মানুষ খাদ্যাভাবে পড়বে। এ পরিস্থিতিতে গত শনিবার বিশ্বের ধনকুবেরদের কাছে সাহায্যের আবেদন জানিয়েছেন জাতিসংঘের খাদ্য বিভাগের প্রধান ডেভিড বিসলি।
তিনি বলেন, ‘দুবেলা দুমুঠো খাবারের অভাবে মৃত্যুমুখে দাঁড়িয়ে থাকা ওই তিন কোটি মানুষকে বাঁচাতে বছরে অন্তত ৪৯০ কোটি ডলার সাহায্য প্রয়োজন।’ তিনি জানান, বিশ্বে অন্তত দুই হাজার বিলিয়নেয়ার (অন্তত ১০০ কোটি ডলারের মালিক) রয়েছেন। তাদের মোট ধনসম্পদ বার্ষিক আয় যোগ করলে আট লাখ কোটি ডলারেরও বেশি। বিসলির বক্তব্য, ‘এ অতিমারি পরিস্থিতিতেও অনেকে কোটি কোটি ডলার কামিয়েছেন। কেউ বিপুল অর্থ উপার্জন করতেই পারেন, তাতে আমার কিছু বলার নেই। কিন্তু মানবসভ্যতা এক ভয়াবহ বিপর্যয়ের মুখে।’
গত জুন মাসে ‘ইনস্টিটিউট ফর পলিসি স্টাডিজ’-এর এক প্রতিবেদনে বলা হয়, মহামারি পরিস্থিতি শুরু হওয়ার পরে যুক্তরাষ্ট্রের কোটিপতিদের মোট ধনসম্পদ অন্তত ১৯ শতাংশ বৃদ্ধি পেয়েছে (৫০ হাজার কোটি ডলার)। রিপোর্ট বলছে, যুক্তরাষ্ট্রে ১৮ মার্চ লকডাউন শুরু হওয়ার ১১ সপ্তাহের মধ্যে আমাজন মালিক জেফ বেজোসের তিন হাজার ৬২০ কোটি ডলার ধনসম্পদ বৃদ্ধি পায়। ফেসবুক-স্রষ্টা মার্ক জাকারবার্গেরও সম্পত্তি বেড়েছে তিন হাজার ১০ কোটি ডলার। টেসলার সিইও এলন মাস্কের এক হাজার ৪১০ কোটি ডলারের সম্পদ বেড়েছে। বিসলি বলেন, ‘যাদের কাছে অগাধ আছে, এটাই সময় তাদের এগিয়ে আসার। এ মুহূর্তে আপনাদের প্রয়োজন। সঠিক কাজ করে দেখানোর এটাই সময়।’