গত ১২ই ফেব্রুয়ারী, ২০১৭ রবিবার টোকিও এর আকাবানে কিতা কুমিন কাইকান হলে জাপান প্রবাসী সুবর্ণা নন্দী ও রুমানা রউফ সোমার উদ্যোগে Bangladesh Women’s Club in Japan এর শুভ উদ্বােধন করেন মান্যবর রাষ্ট্রদূত রাবাব ফাতিমা। জেসমিন সুলতানা কাকলির নিজ হাতের তৈরী নিখুঁত আর চমৎকার আকর্ষণীয় কেক টি কেটে অনুষ্ঠান শুরু হয়। অনেকদিনের পরিকল্পনা শেষে জাপানে প্রথম প্রবাসী বাংলাদেশী মহিলাদের নিয়ে একটি ক্লাব গঠন করা হয় । ক্লাবটি গঠনে বিভিন্ন ভাবে সার্বিক সহযোগিতা করেছেন জেসমিন সুলতানা কাকলি , বন্হী আহমেদ ও লাকী প্রমুখ।
মধ্যাহ্ন ভোজ দিয়ে অনুষ্ঠান শুরু করা হয় । বিকেল ৩টার দিকে জাপানস্থ বাংলাদেশ দূতাবাসের মান্যবর রাষ্ট্রদূত রাবাব ফাতেমা ও ইকোনমিক মিনিস্টার ড. সাহিদা আখতার অনুষ্ঠানে এসে পৌঁছালে ফুল দিয়ে বরণ করে নেন ক্লাবের সদস্যরা । অমর একুশের ভাষা শহীদদের প্রতি শ্রদ্ধা জানিয়ে ”আমার ভায়ের রক্তে রাঙানো” গান দিয়ে ২য় পর্বের সূচনা হয়। সে সময় উপস্থিত সবাই সুরে সুর মিলিয়ে গানটি গেয়ে উঠে।
Bangladesh Women’s Club in Japan জাপানে কর্মরত নারী ও নারী উদ্যক্তাদের স্বীকৃতি, বিশেষ সম্মান ও উৎসাহ দেওয়ার প্রয়াসে এই বছর তারা তিনজন বাংলাদেশী নারীকে সম্মাননা প্রদান করে। মান্যবর রাষ্ট্রদূত রাবাব ফাতিমাকে সম্মাননা ক্রেস্ট প্রদান করেন ক্লাবের অন্যতম দুই উদ্যোক্তা রুমানা রউফ সোমা ও সুবর্ণা নন্দী। সম্মাননা ক্রেস্ট গ্রহন করে মান্যবর রাষ্ট্রদূত উচ্ছসিত হয়ে বললেন ”মনে হচ্ছে অস্কার পেয়ে গেলাম ”। তিনি এমন সাহসী উদ্যোগের ভূয়সী প্রশংসা করেন এবং সামনে এগিয়ে যাওয়ার জন্য অনুপ্রাণিত করে বক্তব্য রাখেন ।
এরপর সম্মাননা ক্রেস্ট প্রদান করা হয় দীর্ঘদিন জাপানে বসবাসরত সামাজিক সাংস্কৃতিক ব্যক্তিত্ব মুন্সী রোকেয়া সুলতানাকে। সর্বশেষ ওয়াসেদা বিশ্ববিদ্যালয়ের অধ্যাপিকা ড. তানিয়া হোসাইনকে সম্মাননা ক্রেস্ট প্রদান করা হয়। জাপানে দীর্ঘদিন বসবাসরত এবং কর্মরত বেশ কয়েকজন নারীদের ফুলেল শুভেচ্ছা প্রদান করা হয়।
অনুষ্ঠানে একটি অংশে জাপানি মেয়ে বাঙালি বধূ কাজুমি চাকলাদার কেও ফুলদিয়ে সম্মাননা জানানো হয় ।
অনুষ্ঠানের ৩য় পর্বে ছিল পিঠা প্রতিযোগিতা , দূর দূরান্ত থেকে আপুরা , ভাবিরা বাহারি পিঠা বানিয়ে এনে প্রতিযোগিতায় অংশ নেই, ভোট এর মাধ্যমে বিজয়ী নির্ধারণ করা হয় । মান্যবর রাষ্ট্রদূতসহ উপস্থিত সকলে পিঠার আস্বাদ গ্রহন করেন। উপস্থিতদের ভোটে প্রথম স্থান অধিকার করেন দুধ-খেজুর পিঠা বানিয়ে জেসমিন সুলতানা কাকলি, ভাপা-পুলি পিঠা বানিয়ে ২য় স্থান অধিকার করে
ন রিনা নিশিকাওয়া, লবঙ্গ-লতিকা পিঠা বানিয়ে ৩য় স্থান অধিকার করেন পার্সিয়া । বিজয়ীনি ৩জন মান্যবর রাষ্ট্রদূতের কাছ থেকে পুরস্কার গ্রহণ করেন।
অনুষ্ঠানে রাফেল ড্র এর আয়োজন করা হয়। লটারির মাধ্যমে বিজয়ীনী আঁখিকে পুরস্কার তুলে দেন মান্যবর রাষ্ট্রদূত। অনুষ্ঠানে সাংস্কৃতিক পরিবেশনায় নৃত্য পরিবেশন করে স্বরলিপি কালচারাল গ্রুপ এর সদস্য বুবলি ইসলাম কলি। বিশেষ ফ্যাশন শোতে বাংলাদেশ ও জাপানের পোশাক ও সাজ পরিবেশন করে তানিয়া, সুপর্ণা মিত্র , নওরিন , অদিতি, সুমি চৌধুরী , হৃদিতা , উষা হাবিব , রুহি জামান ও মিম । পুরো অনষ্ঠানটি সবাই খুব ই আনন্দের সাথে উপভোগ করে | অনুষ্ঠানটি উপস্থাপনা ও পরিচালনায় ছিলেন NHK এর সংবাদ পাঠিকা তনুশ্রী গোলদার এবং সহযোগী হিসাবে কাজ করেছেন সোমা ।
দূরদুরন্ত থেকে অনুষ্ঠানে আসার জন্য Bangladesh Women’s Club এর পক্ষ থেকে সবাইকে আন্তরিক ধন্যবাদ জ্ঞাপন করা হয় ।
তথ্য ও চিত্র: জেসমিন সুলতানা কাকলি ও কুমার নন্দি