আন্তর্জাতিক ডেস্ক: গতবার মিনায় পদদলনে প্রায় হাজার হজযাত্রীর মৃত্যুর প্রেক্ষাপটে ‘নিরাপত্তা এবং নাশকতার’ প্রশ্ন তুলে এবছর হজ বর্জন করতে যাচ্ছে ইরান। এই সিদ্ধান্তের জন্য পুরোপুরি সৌদি আরবকে দায়ী করেছে শিয়া মুসলিমপ্রধান মধ্যপ্রাচ্যের দেশটি। ইরানের রাষ্ট্রীয় সংবাদ মাধ্যমে প্রকাশিত দেশটির এক বিবৃতি উদ্ধৃত করে রোববার রয়টার্স এই খবর দিয়েছে।
ওই বিবৃতিতে বলা হয়, “সৌদি সরকারের চলমান নাশকতার কারণে আমরা ঘোষণা করছি… ইরানের হজযাত্রীরা এবছর হজে যাচ্ছেন না। এর জন্য সৌদি আরব সরকার দায়ী।” ইরানের সংস্কৃতিবিষয়কমন্ত্রী আলি জান্নাতি রাষ্ট্রীয় টেলিভিশনে বলেন, “গত বছর সৌদি সরকারের হজ ব্যবস্থাপনা এবং ইরান ও অন্যান্য দেশের নিহত হজযাত্রীদের যন্ত্রণার কথা বিবেচনা করে আমরা এই সিদ্ধান্ত নিয়েছি। আমাদের কাছে হজযাত্রীদের নিরাপত্তা নিশ্চিত করা খুবই গুরুত্বপূর্ণ।”
আঞ্চলিক প্রভাব বিস্তার নিয়ে প্রতিবেশী এই দুই দেশের সম্পর্কে বৈরিতা দীর্ঘদিনের। ধর্মীয় মতাদর্শিক অবস্থান নিয়েও রয়েছে দ্বন্দ্ব। বার্ষিক ধর্মীয় অনুষ্ঠান হজ পালনে প্রতিবছরই সারা বিশ্ব থেকে ২৫ লাখ মুসলিম সমবেত হন মক্কা তথা সৌদি আরবে। গত বছর হজ চলাকালে মিনায় পদদলনে সৌদি সরকারের হিসাবেই সাত শতাধিক হজযাত্রীর মৃত্যু ঘটে, যাদের বেশিরভাগই ইরানি। ইরান তখন দাবি তোলে, নিহতের সংখ্যা অন্তত ২ হাজার, যা লুকাচ্ছে সৌদি সরকার।
ওই ঘটনার জন্য হজ ব্যবস্থাপনার দায়িত্বে থাকা সৌদি কর্তৃপক্ষের অদূরদর্শিতা, দায়িত্বজ্ঞানহীনতাকে দায়ী করে ইরান সরকার। অন্যদিকে সৌদি কর্মকর্তারা দায়ী করেন ইরানি হজযাত্রীদের নির্দেশনা না মেনে চলাকে। গত বছরের ওই ঘটনার পর ইরান ও সৌদি আরবের সম্পর্কে নতুন করে টানাপড়েন দেখা দেয়। হজের মতো সারাবিশ্বের মুসলিমদের অনুষ্ঠান ব্যবস্থাপনার দায়িত্ব এককভাবে সৌদি আরবের হাতে থাকা নিয়েও প্রশ্ন তোলেন ইরানি বিভিন্ন কর্মকর্তা।