জাপানের রাজধানী টোকিওতে আজ (২২/১০/২০১৮) থেকে শুরু হওয়া ফ্যাশন ওয়ার্ল্ড টোকিও – ২০১৮ এ অংশ নিয়েছে বাংলাদেশ। মেলা চলবে আগামী ২৪ অক্টোবর পর্যন্ত। সকালে মেলার বাংলাদেশী প্যাভিলিয়নের উদ্বোধন করেন জাপানে নিযুক্ত বাংলাদেশের রাষ্ট্রদূত রাবাব ফাতিমা। পরে তিনি মেলায় বাংলাদেশের স্টলগুলো পরিদর্শন করেন এবং ব্যবসায়ীদের সাথে কথা বলেন।
বাংলাদেশের ৮ টি তৈরী পোশাক ও চামড়া শিল্প প্রতিষ্ঠান তাঁদের উন্নতমানের দ্রব্যের সম্ভার নিয়ে টোকিও বিগ সাইটে অনুষ্ঠিত এই মেলায় অংশগ্রহণ করছে । পোশাক প্রস্তুতকারক কোম্পানিগুলো তাঁদের আধুনিক ও নতুন ডিজাইনের পোশাক সামগ্রী এবং চামড়া শিল্প প্রতিষ্ঠানসমূহ বিভিন্ন রুচিসম্মত ও উন্নতমানের দ্রব্যাদির প্রদর্শন করছেন।
টোকিওস্থ বাংলাদেশ দূতাবাসের সার্বিক তত্ত্বাবধান এবং বাংলাদেশের বাণিজ্য মন্ত্রণালয় ও রপ্তানী উন্নয়ন ব্যুরো মেলায় বাংলাদেশী উদ্যোক্তাদের সহযোগিতা করছেন। আশা করা হচ্ছে যে মেলাটি দু’দেশের ব্যবসায়ীদের মধ্যে যোগাযোগের ও ব্যবসায়িক সম্পর্ক স্থাপনে সহায়ক ভূমিকা পালন করবে ।
মেলা উদ্বোধনের পর (২২/১০/২০১৮ সোমবার) মেলার সেমিনার ভেন্যুতে জাপানের বাজারে বাংলাদেশের পোশাক খাতের সম্ভাবনা নিয়ে একটি সেমিনার অনুষ্ঠিত হয়।
সেমিনারে জাপানে নিযুক্ত বাংলাদেশের রাষ্ট্রদূত রাবাব ফাতিমা স্বাগত বক্তব্য দেন । মেলায় অংশগ্রহণকারী প্রতিষ্ঠান সমূহকে রাষ্ট্রদূত ধন্যবাদ জানান। তিনি বলেন বাংলাদেশের তৈরী পোশাক বিশেষ করে নীটওয়্যার প্রতিষ্ঠানগুলো অত্যন্ত যত্ন সহকারে জাপানের জন্য পণ্য তৈরী করছে এবং নীটওয়্যার জাপানের এক নাম্বার রপ্তানী পণ্য হওয়ায় বাংলাদেশ গর্ববোধ করে। তিনি আরো জানান, জাপানের মোট তৈরী পোশাক আমদানির শতকরা ৫.৯ ভাগ সরবরাহ করে বাংলাদেশ। রাষ্ট্রদূত আরো বলেন এ বছর জানুয়ারি থেকে আগস্ট পর্যন্ত জাপানের পোশাক খাতে বাংলাদেশের প্রবৃদ্ধি ১২৮.২%, যা রপ্তানীকারক দেশসমূহের মধ্যে সর্বোচ্চ।
রাষ্ট্রদূত বলেন, বাংলাদেশের পোশাক শিল্প প্রতিষ্ঠানগুলো বিশ্বের স্বনামধন্য ব্রান্ডের জন্য পণ্য তৈরী করছে, এবং আমরা তা জাপানের জন্যও করতে চাই। এই মেলা জাপানে বাংলাদেশী উন্নতমানের পণ্যসামগ্রীর বাজার সম্প্রসারনে এবং জাপান-বাংলাদেশ বাণিজ্য সম্পর্ক আরো গভীর করতে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখতে পারে বলে রাষ্ট্রদূত দৃঢ় আশাবাদ ব্যক্ত করেন।
সেমিনারে অন্যান্যের মধ্যে আলোচনা করেন জেট্রোর গবেষণা বিষয়ক ব্যবস্থাপক তমোফুমি নিশিজাওয়া, ইউনিডো’র শিল্প উন্নয়ন কর্মকর্তা ইকুয়ে তোশিনাগা, জাপান টেক্সটাইল ইম্পোরটারস অ্যাসোসিয়েশন এর সিনিয়র গবেষক ইয়োশিয়াকি কামিয়ামা এবং ক্যাট অ্যাপারেল বাংলাদেশ‘র সিনিয়র ব্যবস্থাপনা পরিচালক আতসুইউকি সানো। আলোচকগণ বাংলাদেশে বিনিয়োগের উপযুক্ত পরিবেশ, বাংলাদেশ সরকার প্রদত্ত সুযোগ সুবিধাসমূহ এবং জাপানে বাংলাদেশের পোশাক শিল্পের সম্ভাবনা বিশ্লেষণ করেন।
বাংলাদেশ দূতাবাস, জাপান; বাংলাদেশের বাণিজ্য মন্ত্রণালয়; এবং রপ্তানী উন্নয়ন ব্যুরোর উদ্যোগে আয়োজিত সেমিনারে সহযোগিতা করে জাপান এক্সটারনাল ট্রেড অর্গানাইজেশন (জেট্রো), ইউনাইটেড ন্যাশন্স ইন্ডাস্ট্রিয়াল ডেভেলপমেন্ট অর্গানাইজেশন (ইউনিডো), জাপান ও টোকিও চেম্বার অব কমার্স এন্ড ইন্ডাস্ট্রি, জাপান-বাংলাদেশ কমিটি ফর কমার্শিয়াল এন্ড ইকনোমিক কো-অপারেশন এবং জাপান টেক্সটাইল ইম্পোরটারস অ্যাসোসিয়েশন। শতাধিক জাপানী ক্রেতা প্রতিষ্ঠান সেমিনারে যোগদান করেন।
মুহা. শিপলু জামান
দ্বিতীয় সচিব (প্রেস)