জাপানে স্মৃতিভ্রষ্ট রোগীর সংখ্যা ক্রমেই বাড়ছে। এক সমীক্ষায় গত বছর ডিমেনশিয়া আক্রান্ত রোগী হারিয়ে যাওয়ার হারও বৃদ্ধি পেতে দেখা গেছে। সরকারের হিসেবেই, গত বছর হারিয়ে যাওয়া এই রোগে আক্রান্ত মানুষের সংখ্যা ১২ হাজার বলে জানা গেছে। যার মধ্যে ৫ শতাধিক মানুষ প্রাণ হারিয়েছে বলেও আশঙ্কা তাদের। জাপানের ন্যাশনাল পুলিশ এজেন্সি national police agency (NPA) জানিয়েছে, ২০১৫ সালে ১২ হাজার ২শ’ ৮টি ডিমেনশিয়া রোগে আক্রান্ত মানুষের হারিয়ে যাওয়ার অভিযোগ তারা পেয়েছেন। আগের বছর এই সংখ্যা ছিল ১ হাজার ৪শ’ ৫২টি।
বেশিরভাগ ক্ষেত্রেই স্মৃতিভ্রষ্ট এসব রোগীকে হারিয়ে যাওয়ার এক সপ্তাহের মধ্যেই খুঁজে পাওয়া গেছে। তবে এনপিএ বলছে, গত বছর ৪৭৯ জনকে জীবিত উদ্ধার করা সম্ভব হয়নি। আরও দেড়শ’ জনের তো খোঁজই মেলেনি। সাধারণত ডিমেনশিয়া বা স্মৃতিভ্রংশ রোগে আক্রান্ত ব্যাক্তির বুদ্ধি, স্মৃতি ও ব্যক্তিত্ব লোপ পায়। তাছাড়া আক্রান্তের পর এ রোগ ক্রমেই বাড়তে থাকে। সাধারণত, প্রাপ্তবয়স্ক ব্যক্তিরা এ রোগে আক্রান্ত বেশি হন। এই রোগে আক্রান্ত ব্যক্তি হঠাৎ করে প্রয়োজনীয় তথ্য মনে করতে পারেন না। তার আচরণেও কিছুটা অস্বাভাবিকতা দেখা যায়। মস্তিষ্কের নিউরনের সংখ্যা বয়স বাড়ার সঙ্গে নির্দিষ্ট হারে কমতে থাকে। রোগ হিসেবে ডিমেনশিয়াকে অনেকে চেনেন আলঝেইমা নামে।
জাপানে ডিমেনশিয়া আক্রান্ত রোগীর হারিয়ে যাওয়া এবং মৃত্যু ঝুঁকি রোধে বেশ কিছু পদক্ষেপ হাতে নিয়েছে সরকার। এজন্যে তারা জাপানের কনজ্যুমারস কো অপারেটিভ ইউনিয়নের সাথে একটি চুক্তিও স্বাক্ষর করেছে। তবে সাম্প্রতিক এক পরিসংখ্যানে দেখা গেছে, যে সব পরিবারে ডিমেনশিয়া আক্রান্ত রোগী আছেন তাদের প্রায় ৪০ ভাগ সদস্যই রোগীর বিষয়ে আগ্রহী নয়। জানিয়েছেন, ঘরে ডিমেনশিয়া রোগীদের সেবা করা তাদের পক্ষে একপ্রকাশ অসম্ভবই হয়ে যায়। আবার পরিবারের অন্তত ৭০ ভাগ সদস্যই এদের দায়িত্ব নেয়াকে বোঝা হিসেবে দেখেন।
বয়স্ক মানুষের মধ্যে ডিমেনশিয়া আক্রান্তের হার বেশি হলেও এর থেকে নিরাপদ থাকা সম্ভব। চিকিৎসকেরা বলেন, এজন্যে প্রচুর যত্ন এবং কিছু নিয়মের মধ্যে থাকতে হয় ডিমনেশিয়া রোগীদের সেবায় জাপান সরকার ১ হাজার ৭শ ৬৫ কোটি টাকা ব্যয়ে একটি কর্মসূচি হাতে নিয়েছে। যাতে পরিবারে অবহেলায় থাকা স্মৃতিভ্রষ্ট রোগীরা স্বাস্থকর জীবনের স্বাদ পান। নিখোঁজদের তাৎক্ষণিক সন্ধানে হোক্কোইদো’র কুশিরো শহরে, পুলিশ বাহিনীর পক্ষ থেকে বিশেষ হেল্প ডেস্ক খোলা হয়েছে। এছাড়া, তাকাসাকি, গুনমা’য় এসব রোগীদের খুঁজে পেতে জিপিএস সুবিধা কাজে লাগান হচ্ছে।