সাত মুসলিম প্রধান দেশের নাগরিকদের ওপর যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্পের ভ্রমণ নিষেধাজ্ঞা আন্তর্জাতিক আইনের লঙ্ঘন বলে জানিয়েছেন জাতিসংঘের মানবাধিকার বিশেষজ্ঞরা। তাছাড়া, যুক্তরাষ্ট্র শরণার্থীদের না নিলে তারা দেশে ফিরে গিয়ে নির্যাতনের মুখে পড়তে পারে বলেও আশঙ্কা প্রকাশ করেছেন তারা। অভিবাসন সীমিত করতে ট্রাম্পের সই করা নির্বাহী আদেশ নিয়ে আন্তর্জাতিক অঙ্গনে তোলপাড় হয়েছে। যুক্তরাষ্ট্রের মিত্রদেশগুলোও এর সমালোচনা করেছে এবং ভ্রমণকারীরা ধাঁ ধাঁয় পড়েছে। ট্রাম্পের আদেশের বিরুদ্ধে আইনি লড়াইও হয়েছে। সংবিধান স্বীকৃত ধর্মীয় স্বাধীনতার নিশ্চয়তা ওই আদেশের কারণে ব্যাহত হয়েছে বলে সমালোচনা হচ্ছে।
এক বিবৃতিতে জাতিসংঘ বিশেষজ্ঞরা ট্রাম্প প্রশাসনকে যুদ্ধ-বিগ্রহ থেকে প্রাণভয়ে পালিয়ে আসা মানুষজনদেরকে সুরক্ষা দেওয়া এবং জাতি, ধর্ম, বর্ণের ভিত্তিতে নির্বিশেষে সবার জন্য সমান অধিকারের নীতি সমুন্নত রাখার আহ্বান জানান। যুক্তরাষ্ট্রের শরণার্থীদেরকে ফিরে যেতে বাধ্য করা উচিত না বলে মত দেন তারা। বিশেষজ্ঞরা আরও বলেন, “এ ধরনের আদেশ স্পষ্টতই বৈষম্যমূলক। একজনের জাতীয়তার ভিত্তিতে এ পদক্ষেপ নেওয়া হচ্ছে। এতে করে মুসলিম সম্প্রদায়ের ওপর আরও তকমা এঁটে দেওয়াই হবে।” “তাছাড়া, যুক্তরাষ্ট্রের নতুন অভিবাসন নীতির কারণে শরণার্থীদের দেশে ফিরে গিয়ে আরও নির্যাতিত হওয়ার ঝুঁকিও আছে। কোনও শরণার্থী বা আশ্রয়প্রার্থীকে নির্যাতন, দমনপীড়নের মুখে ফিরে যেতে বাধ্য করাটা আন্তর্জাতিক মানবাধিকার আইনের সরাসরি লঙ্ঘন।”
জাতিসংঘের নিরপেক্ষ এ বিশেষজ্ঞ দলে আছেন শরণার্থী বিষয়ক বিশেষ জাতিসংঘ কর্মকর্তা, বর্ণবৈষম্যবাদ, মানবাধিকার বিষয়ক এবং সন্ত্রাস-বিরোধী কর্মকর্তারাসহ নির্যাতন বিষয়ক ও ধর্মীয় স্বাধীনতা বিষয়ক কর্মকর্তারা। জাতিসংঘের মানবাধিকার বিষয়ক হাই কমিশনার জেইদ রাদ আল-হুসেইন সোমবার বলেছেন, জাতীয়তার ভিত্তিতে জনগণের সঙ্গে বৈষম্যমূলক আচরণ করা বেআইনি। যুক্তরাষ্ট্রের বর্তমান নীতির আওতায় যুক্তরাষ্ট্র ভ্রমণে যাওয়া লোকজন অনির্দিষ্টকালের জন্য আটক হতে পারে কিংবা তাদেরকে ফেরত পাঠানো হতে পারে বলে উদ্বেগ প্রকাশ করেছেন জাতিসংঘ বিশেষজ্ঞরা। তারা লড়াই-সংঘর্ষ থেকে পালিয়ে আসা লোকজনকে আশ্রয় দেওয়ার আন্তর্জাতিক আইন মেনে চলার জন্য ওয়াশিংটনকে আহ্বান জানিয়েছেন।