বাংলাদেশ থেকে রোহিঙ্গাদের ফেরত নেওয়া শুরুর বিষয়ে বাংলাদেশ-মিয়ানমারের মধ্যে একটি ‘অ্যারেঞ্জমেন্ট’ বা ‘ব্যবস্থা’ স্বাক্ষরিত হয়েছে। গতকাল বৃহস্পতিবার মিয়ানমারের রাষ্ট্রীয় উপদেষ্টা অং সান সু চির দফতরে দুই দেশের মধ্যে কূটনৈতিক এ প্রক্রিয়া সম্পন্ন হয়।
রাজধানী নেপিদোতে স্বাক্ষরিত এই কূটনৈতিক প্রক্রিয়াকে পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয় থেকে ‘সমঝোতা স্মারক’ বা ‘চুক্তি’ বলা হয় নি, বরং একে ‘অ্যারেঞ্জমেন্ট’ বা ‘ব্যবস্থা’ হিসেবে উল্লেখ করা হয়েছে।
পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের এক বিবৃতিতে বলা হয়, দুই মাস ধরে চলা আলোচনার মাধ্যমে এই ‘অ্যারেঞ্জমেন্ট’ স্বাক্ষরিত হয়।
২২ নভেম্বর নেপিদোতে উভয় দেশের কর্মকর্তরা এর খসড়া নিয়ে আলোচনা করেন। পরে ২৩ নভেম্বর বেলা ২টায় বাংলাদেশের পক্ষে পররাষ্ট্রমন্ত্রী এ এইচ মাহমুদ আলী এবং মিয়ানমারের ইউনিয়ন মিনিস্টার চ টিন্ট সোয়ে এতে স্বাক্ষর করেন।
‘অ্যারেঞ্জমেন্ট’-এ বলা হয়, দুই মাসের মধ্যে রোহিঙ্গা প্রত্যাবর্তনের প্রক্রিয়া শুরু হবে। প্রত্যাবর্তন প্রক্রিয়া শুরুর উদ্দেশ্যে তিন সপ্তাহের মধ্যে একটি জয়েন্ট ওয়ার্কিং টিম তৈরি করা হবে এবং অল্প কিছুদিনের মধ্যে আরেকটি চুক্তি বা সমঝোতা স্বাক্ষরের মাধ্যমে প্রত্যাবর্তন প্রক্রিয়া চলবে।
এর আগে পররাষ্ট্রমন্ত্রী মাহমুদ আলী রাখাইন রাজ্যে ব্যবহারের জন্য বাংলাদেশ সরকারের উপহার হিসেবে তিনটি অ্যাম্বুলেন্স দেশটির সমাজকল্যাণমন্ত্রীর কাছে হস্তান্তর করেন।
কূটনৈতিক সূত্রের তথ্য মতে, ২৫ আগস্ট, ২০১৭ থেকে এ পর্যন্ত ছয় লাখেরও বেশি রোহিঙ্গা মিয়ানমার থেকে বিতাড়িত হয়ে বাংলাদেশে আশ্রয় নিয়েছে। ২০১৬ সালের অক্টোবর থেকে জুলাই পর্যন্ত মিয়ানমার থেকে আসে প্রায় ৯০ হাজার রোহিঙ্গা। এবং ২০১৬ সালের আগে থেকে প্রায় তিন লাখ রোহিঙ্গা বাংলাদেশে অবস্থান করছিল।
রোহিঙ্গা প্রত্যাবর্তনে বাংলাদেশ ও মিয়ানমার সর্বপ্রথম ১৯৭৮ সালে চুক্তি করেছিল। সেই চুক্তির অধীনে দুই লাখ ৪০ হাজার রোহিঙ্গা ছয় মাসের মধ্যে ফেরত গিয়েছিল। পরে ১৯৯২ সালে দুই দেশের মধ্যে আরেকটি সমঝোতা হয়, যার অধীনে ২০০৫ সাল পর্যন্ত দুই লাখ ৩৬ হাজার রোহিঙ্গা মিয়ানমারে ফেরত যায়।
২৪ নভেম্বর, ২০১৭
ঢাকা, বাংলাদেশ।
সূত্র: bdp-2017