জাপানের প্রধানমন্ত্রী শিনযো আবে বলেছেন, সম্প্রতি রেকর্ড পরিমাণ বৃষ্টিপাতে পশ্চিম জাপানের মারাত্মকভাবে ক্ষতিগ্রস্ত এলাকাগুলোতে ত্রাণসামগ্রী পাঠানোর জন্য সরকার সংরক্ষিত একটি তহবিল ব্যবহার করবে। উপদ্রুত এলাকায় প্রয়োজনীয় মালামাল সরবরাহের জন্য সংরক্ষিত তহবিলটি থেকে সরকার প্রায় ১ কোটি ৮০ লক্ষ ডলার ব্যবহার করবে। এই প্রাকৃতিক বিপর্যয় মোকাবিলার জন্য গঠন করা সরকারের একটি জরুরি টাস্কফোর্সের তৃতীয় বৈঠকে অংশগ্রহণকালে এই মন্তব্য করেন মি: আবে। তিনি বলেন, দুর্যোগের কারণে অনেক লোককে বাড়ি ছেড়ে নিরাপদ স্থানে সরে যেতে হয়েছে এবং গ্রীষ্মের খর-রোদ্দুর তীব্রতর হওয়ার প্রেক্ষাপটে তারা মানসিক এবং শারীরিকভাবে পর্যুদস্ত হয়ে পড়ছেন।
মি: আবে আরও বলেন, উপদ্রুত পৌরসভাগুলো থেকে কোন ধরণের অনুরোধের অপেক্ষা না করেই সেখানে শীতাতপ নিয়ন্ত্রণ যন্ত্র, পানি এবং অন্যান্য সামগ্রী পাঠিয়ে দেয়ার জন্য তিনি সংশ্লিষ্ট কর্মকর্তাদের ইতিমধ্যেই নির্দেশনা দিয়েছেন।
উল্লেখ্য যে, সম্প্রতি জাপানে ভয়াবহ বৃষ্টিপাতের ফলে সৃষ্ট দুর্যোগে এ পর্যন্ত ১৭৬ জনের অধিক মৃত্যুবরন করেছেন এবং
স্বাস্থ্য ও কল্যাণ মন্ত্রণালয় সূত্রের বরাতে জানা যায়, ২৫৪০৮৪টি বাড়ীর বাসভবনে পানি সরবরাহ ছিল না। সকাল এগারটা পর্যন্ত কমপক্ষে ২,৩০০ বাসভবনে বিদ্যুৎ সরবরাহ ছিলনা। পনেরোটি জেলা, প্রধানত সবচেয়ে ক্ষতিগ্রস্ত ওকাইয়ামা ও হিরোশিমা জেলায় সন্ধ্যা পর্যন্ত ৮,২০০ মানুষ আশ্রয় কেন্দ্রে অবস্থান করেন। প্রধানত টোকিও মেট্রোপলিটন এলাকা ও পশ্চিম জাপানের মধ্যে মালামাল পরিবহণের রেল চলাচল বন্ধ থাকায় ক্ষতিগ্রস্ত এলাকাগুলোতে পণ্য সরবরাহ ব্যাহত হয়। পশ্চিম জাপানে রেকর্ড পরিমাণ বৃষ্টিপাতে ক্ষতিগ্রস্ত লোকজনকে জীবনধারণ অবকাঠামো ভেঙ্গে পড়ার কারণে পানি ও বিদ্যুৎ বিহীন অবস্থায় কাটাতে হচ্ছে। পশ্চিম জাপানের বিস্তৃত এলাকা জুড়ে এটা ক্ষতিসাধন করেছে। এমুহূর্তে সবচেয়ে বেশী যা প্রয়োজন তা হল নিখোঁজ লোকজনের সন্ধান করা। এসব লোকজন পার্বত্য এলাকায় আটকা পড়েছেন নাকি বন্যা কবলিত অঞ্চলে বাড়িঘরের নিচে চাপা পড়ে আছেন – উদ্ধার কর্মীদের দ্রুত তা নিশ্চিত করে নেয়া দরকার। তবে ক্ষয়ক্ষতি ব্যাপক হওয়ায় দুর্যোগের পুরো ছবি এখনও চিহ্নিত করা যাচ্ছেনা। এমন বেশ কিছু এলাকা আছে পানি ও বিদ্যুৎ সরবরাহ যেখানে এখনও ব্যাহত হচ্ছে। মানুষ কোথায় আশ্রয় নিয়েছেন সেসব জায়গা খুঁজে বের করা এবং ত্রাণ সরবরাহ সেখানে পৌঁছে দেয়া অগ্রাধিকার হওয়া উচিৎ। শুধুমাত্র ত্রাণ সরবরাহ নয়, সেই সাথে বিশেষ করে স্বাস্থ্যগত দিকটি বিবেচনায় রেখে সঠিক পরিবেশ গড়ে নেয়ার প্রচেষ্টা চালানোও অবশ্যই দরকার। এছাড়া প্রতিবন্ধী, বৃদ্ধ ও অন্তঃসত্ত্বা নারীদের জন্য ভিন্ন আশ্রয় কেন্দ্র তৈরি করে নেয়া হবে আদর্শ পদক্ষেপ। তা করতে না পারা গেলে আশ্রয় কেন্দ্রের ভেতরেই সেরকম মানুষের জন্য ভিন্ন জায়গা ঠিক করে নিতে হবে। স্বাভাবিক অবস্থায় স্থানীয় সমাজ কল্যাণ পরিষদ স্বেচ্ছাসেবী গ্রহণের দায়িত্ব গ্রহণ করে। তবে ক্ষতিগ্রস্ত এলাকা সমূহের বিস্তৃতির আলোকে অলাভজনক বিভিন্ন সংগঠন ও অন্যান্য সংস্থা সমন্বয়কের ভূমিকা পালন এবং সমগ্র জাপান থেকে আসা স্বেচ্ছাসেবকদের কোথায় দায়িত্ব পালনের জন্য পাঠানো হবে সেই সিদ্ধান্ত গ্রহণ করবে বলে প্রত্যাশা করা হচ্ছে।
Check Also
১৫ই আগষ্ট আন্তর্জাতিক মহাকাশ স্টেশনের উদ্দেশ্যে যাত্রা করবেন জাপানি নভোচারী ফুরুকাওয়া
জাপানের নভোচারী ফুরুকাওয়া সাতোশির দ্রুত হলে ১৫ই আগষ্ট আন্তর্জাতিক মহাকাশ স্টেশনে দ্বিতীয় ভ্রমণ নির্ধারণ করা …